আজকের শিশু-কিশোররাই আগামীর স্মার্ট বাংলাদেশ চালাবে: প্রধানমন্ত্রী


অনলাইন ডেস্ক , আপডেট করা হয়েছে : 20-10-2023

আজকের শিশু-কিশোররাই আগামীর স্মার্ট বাংলাদেশ চালাবে: প্রধানমন্ত্রী

শিশুদের স্মার্ট বাংলাদেশের উপযোগী করে গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, আজকের শিশু-কিশোররাই আগামীর স্মার্ট বাংলাদেশ চালাবে। বাংলাদেশকে গিয়ে নিতে দক্ষ ও যোগ্য করে গড়ে তুলতে হবে। তারা আমার স্মার্ট বাংলাদেশের স্মার্ট সৈনিক হবে, সেটাই আমি চাই।

বুধবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘শেখ রাসেল দিবস ২০২৩’ উদযাপন ও শেখ রাসেল পদক প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আজ আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি। আগামী দিনে আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ করব। সেই দেশকে নেতৃত্ব দেয়ার জন্য শিশুদের যোগ্য করে তুলতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা চাই আমাদের শিশুরা আরও উন্নত হবে। আমরা শান্তি চাই, আমরা দেশের উন্নতি চাই। কিন্তু ইসরাইল ফিলিস্তিন সংঘাতে শিশুরা মারা যাচ্ছে। আমি বিশ্বনেতাদের বলব, এই যুদ্ধ বন্ধ করুন। অস্ত্রের প্রতিযোগিতা বন্ধ করেন। যুদ্ধ মানুষের জন্য কল্যাণ বয়ে আনে না। এই যুদ্ধের ফলে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় নারী ও শিশু। যুদ্ধের ফলে শিশু হারায় বাবা-মা, বাবা-মা হারায় সন্তানদের। ১৯৭১ ও ১৯৭৫ এ আমরা এই ভয়াবহতা দেখেছি। আজকে আমাদের এখানে তাপস আছে, তার শিশু বয়সেই বাবা-মা হারিয়েছে।

তিনি বলেন, আমাদের শিশুরা লেখাপড়া শিখবে। এখানে অনেক শিশুরা রয়েছে, তোমরা গুরুজনের কথা মেনে চলবে, বাবা-মায়ের কথা মেনে চলবে। তোমরা লেখাপড়া শিখবে। একটা কথা মনে রাখবে, ধনসম্পদ কিছু থাকবে না, শুধু শিক্ষাটা থাকবে। শিক্ষাটাই মূল শক্তি।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের শিশুরা তাড়াতাড়ি শেখে। আমার চার বছরের নাতি আমাকে শেখায় যে, তুমি এটা (কম্পিউটার) টিপতে থাকো, টিপতে টিপতে পেরে যাবা। আর মোবাইল ফোনের পিন নম্বরটা, শুনলে অবাক হবেন, তারা গেম খেলবে এ কারণে আমি তাদের পিন দেব না। আমি লুকিয়ে পিন দিচ্ছি, আর আমার চশমার রিফ্লেকশন থেকে আমার নাতি সে নম্বর নিয়ে নিয়েছে। আমাকে বলে আমি জেনে গেছি তুমি কী করো। তো এরা এতো স্মার্ট। আমাদের এই ছোট্ট সোনামণিরা আমার স্মার্ট বাংলাদেশের স্মার্ট সৈনিক হবে। এটাই তো আমি চাই।

সরকারপ্রধান বলেন, ধর্ম-বর্ণ সকলকে মানুষ হিসেবে দেখতে হবে। আর কেউ যদি বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন হয়, কেউ যদি পঙ্গু হয়, আমরা তো ছোটবেলায় শিখেছি, অন্ধ অন্ধ বলিও না, পঙ্গুকে পঙ্গু বলিও না। বরং তাদের সাহায্য করো। আমাদের শিশুদের সেভাবেই মানসিকতা গড়ে তুলতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, আমার ছোট্ট রাসেলের মতো আর যেন কাউকে জীবন না দিতে হয়, এটাই আমি চাই। এসময় কবি সুকান্তের কবিতাও আবৃত্তি করেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, শিশুদের স্বাধীন দেশের উপযুক্ত নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে শিশু-কিশোরদের নিয়ে এই সংগঠন। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষ সব মানুষকে মানুষের দৃষ্টিতে দেখা এবং অটিস্টিক বা পিছিয়েপড়াদের আরও এগিয়ে নিতে হবে, এটাই এই সংগঠনের লক্ষ্য।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার গঠন করার পর থেকে আমার প্রচেষ্টা ছিল বাংলাদেশকে আর্থসামাজিকভাবে উন্নত করবো। ছোট্ট শিশুদের জন্য পর্যাপ্ত স্কুল করে দেয়া, বই দেয়া, খেলাধুলার ব্যবস্থা করা, এসবের মধ্যদিয়ে শিশুদের গড়ে তুলতে সহযোগিতা করেছি। ছোটবেলা থেকে যেন খেলাধুলা ও সংস্কৃতি চর্চার অভ্যাস হয়, সে ব্যবস্থা করেছি।

তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় আমাদের বন্দিখানার পাশে রাসেল প্যারেড দেখেছে। গ্রামের বাড়ি গিয়ে বাচ্চাদের নিয়ে সে প্যারেড করতো। বাচ্চাদের পুরস্কারও দিতো। তার জীবনের বড় স্বপ্ন ছিল- সে বড় হয়ে আর্মি অফিসার হবে। কিন্তু তার সে স্বপ্ন তো পূরণ হতে দিলো না।

তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমদ পলকের সভাপতিত্বে ও ব্যারিস্টার জাহাঙ্গীর হোসেন রনির সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি সচিব সামসুল আরেফিন, শেখ রাসেল জাতীয় শিশু কিশোর পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিজ সরাফাত, সাংগঠনিক সচিব ফরিদ উদ্দিন আহমেদ রতন প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে ‘স্মরণের আবরণে শেখ রাসেল’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়াও অনুষ্ঠানে রাসেলের স্মৃতি নিয়ে ভারতীয় সেনাবাহিনীর কর্নেল (অব.) অশোক কুমার তারার ভিডিও বার্তা প্রদর্শন করা হয়।

জাতির পিতার কনিষ্ঠ সন্তান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোটভাই শেখ রাসেল ১৯৬৪ সালের ১৮ অক্টোবর ধানমন্ডিতে জন্মগ্রহণ করেন। শেখ রাসেল ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুলের ছাত্র ছিলেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকদের নির্মম বুলেট থেকে রক্ষা পাননি শিশু শেখ রাসেল।


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]