মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাত বিশ্বজুড়ে নতুন অর্থনৈতিক সংকট তৈরি করতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অর্থনীতিবিদরা। বিশেষ করে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে উদ্যোগ নেয়া বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওপর হামাস-ইসরাইল যুদ্ধ নতুন চাপ তৈরি করতে পারে বলে রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি চলমান পরিস্থিতিকে আরও নাজুক করে তুলবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।
করোনা মহামারির প্রভাবে পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার পর অর্থনীতিতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের নেতিবাচক প্রভাব দেখেছে বিশ্ব। বেড়েছে খাদ্য পণ্যের দাম, মূল্যস্ফীতি কমাতে নীতি সুদ হার বাড়িয়েছে বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর বাইরে নয় বাংলাদেশও।
কিন্তু এসব পদক্ষেপের সুফল পুরোপুরি ঘরে তোলার আগেই শুরু হলো ইসরাইল ও হামাসের সংঘাত। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর জন্য নতুন চাপ তৈরি করতে পারে এই যুদ্ধ। কারণ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ অনুঘটক জ্বালানি তেলের মূল্য।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখার প্রচেষ্টাগুলো এতদূর এসে অনিশ্চয়তার মুখে পড়তে পারে।
রাশিয়া বিশ্বের অন্যতম প্রধান তেল-গ্যাস উৎপাদক। সে তুলনায়, ফিলিস্তিন ও ইসরাইল কোনো পক্ষই তেল রফতানিকারক নয়। তারপরও যুদ্ধের প্রভাবে বিশ্ববাজারে এরইমধ্যে বেড়েছে জ্বালানি তেলের দাম। কেননা বিশ্বের তিন ভাগের একভাগ জ্বালানি তেলের যোগানদাতা মধ্যপ্রাচ্য।
এছাড়াও অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ সংযোগপথের কারণে মধ্যপ্রাচ্য ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
সোমবার (৯ অক্টোবর) ব্রেন্ট ক্রুডের বৈশ্বিক মূল্যসূচক ৪ দশমিক ২ শতাংশ বেড়ে প্রতি ব্যারেলের দর পৌঁছায় ৮৮ ডলার ১৫ সেন্টে। একইদিন, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারের প্রধান মূল্যসূচক ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট ৪ দশমিক ৩ শতাংশ বেড়ে ব্যারেলপ্রতি দর ৮৬ ডলার ৩৮ সেন্টে হয়।
মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) সেখান থেকে সামান্যই কমতে দেখা গেছে। এখন পর্যন্ত ব্রেন্ট ক্রুড ও টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটে যথাক্রমে ৩৬ ও ৩৫ সেন্ট দর কমেছে। এরইমধ্যে কিছু আন্তর্জাতিক এয়ারলাইনস ফ্লাইট বাতিল করেছে।
এই পরিস্থিতিতে, চলমান সংঘাতের কারণে বিশ্বজুড়ে অর্থনীতির নতুন সংকট তৈরি হওয়ার আশঙ্কার কথা বলছেন অর্থনীতিবিদরা।