দিনের শুরুটা হয় এক কাপ চা দিয়ে। তারপর সারাদিনে যে কত কাপ চা পান করেন, এর হিসেবে অনেকেরই থাকে না। আবার অনেকের এত বেশি চায়ের নেশা যে, চা বানিয়ে ভরে রাখে ফ্লাস্ক বোতলে। সেটাই বারবার খান। আবার কারও ঠান্ডা চা না পসন্দ। তাই সেই চা বারবার ফুটিয়ে খান। কিন্তু এভাবে বারবার চা ফুটিয়ে খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য কি উপযুক্ত?
একদমই নয়। চা বারবার ফুটিয়ে খেলে বাড়তে পারে একাধিক স্বাস্থ্য সমস্যা।
মাটির ভাঁড়ে ধোঁয়া ওঠা চা, অনেকে বাঙালিরই প্রিয়। কিন্তু খেয়াল করে দেখবেন, দোকানে একটি বড় সসপ্যানে চা তৈরি হয়। সেখানে বেশ সময় নিয়েই চা ফুটিতে থাকে। অনেক জায়গায় একবার চা বানিয়ে সেটাকেই বারবার ফুটিয়ে ক্রেতাকে দিতে থাকেন। মশলা ও দুধ দিয়ে বানানো চায়ের স্বাদ ভাল লাগলেও বারবার চা ফুটিয়ে খাওয়া উচিত নয়।
চা বানানোর কয়েক মিনিটের মধ্যেই ঠান্ডা হয়ে যায়। কিন্তু সেটা বারবার ফুটিয়ে খাওয়া উচিত নয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, চার ঘণ্টা বেশি তৈরি চা পুনরায় গরম করবেন না। এতে চায়ে ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বাড়তে থাকে। এমনকী আপনি যদি চা বানিয়ে রাখেন এবং সেটা এক-দু’ঘণ্টা পরে পান করেন, এটাও উপকারী নয়। তৈরি করা চায়ে এক-দু’ঘণ্টার মধ্যে ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বাড়তে থাকে। ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যাও আরও বাড়ে যখন আপনি দুধ চা বানিয়ে রাখেন। আপনার চা-কে আরও বিষাক্ত করে তোলে চিনি। তারপর যখন আবার ওই চা ফোটান, তখন আপনার চায়ের স্বাদের পাশাপাশি গুণাগুণও নষ্ট হয়ে যায়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বারবার চা ফুটিয়ে গেলে ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বৃদ্ধি পায়, যা চোখের গ্লুকোমায় ও স্নায়ুতে প্রভাব ফেলে। যার জেরে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে আপনার স্মৃতিশক্তি ও দৃষ্টিশক্তি। চায়ের মধ্যে ক্যাটেচিন নামের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। অন্যদিকে, দুধে কেসিন নামের প্রোটিন রয়েছে। দুধ-চা বারবার গরম করলে এই ক্যাটেচিন ও কেসিন চায়ের উপকারিতা নষ্ট করে দেয়, যা সরাসরি আপনার হজম স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলে। এর জেরে বাড়ে পেটের সমস্যা।
চা যেমন বারবার ফুটিয়ে খাওয়া উচিত নয়, তেমনই বেশিক্ষণ ধরেও চা ফোটাতে নেই। যে বিষয়টি সবচেয়ে বেশি দেখা যায় চায়ের দোকানে। চায়ের মধ্যে ক্যাফেইন ও ট্যানিন নামের দু’টি যৌগ রয়েছে। বেশিক্ষণ ধরে চা ফোটালে এই দুই যৌগ নষ্ট হয়ে যায়। যার জেরে চা তেঁতো হয়ে যায়। পাশাপাশি স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলে। এতে খাদ্যনালিতে ক্যানসার পর্যন্ত হতে পারে। তাই দুধ হোক জল, চা পাতা দেওয়ার পর ২ মিনিটের বেশি ফোটানো উচিত নয়।