বিমা ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে নতুন কিছু নিয়ম সংযোজিত হতে যাচ্ছে। এর আলোকে আগামীতে বিমা পলিসির নির্ধারিত নেট প্রিমিয়ামে বোনাস, অফিস খরচ বা অন্যান্য মাশুল অন্তর্ভুক্ত করা যাবে না।
এছাড়া, ইসলামি লাইফ বিমা ব্যবসায় ঝুঁকির জন্য রিজার্ভ ও বিনিয়োগের জন্য রিজার্ভ—এ দুই ধরনের রিজার্ভ হিসেবে গণনা করতে হবে। সেই সঙ্গে জীবন বিমাকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রতিটি প্ল্যানের জন্য একচ্যুয়ারিয়াল রিজার্ভ নির্ধারণ করতে হবে। বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ প্রণীত 'লাইফ বিমাকারীর সলভেন্সি মার্জিন প্রবিধানমালা ২০২৩-এর খসড়ায় এমন বিধান সংযুক্ত করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
প্রবিধানের খসড়ায় বলা হয়েছে, জীবন বিমাকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিজ প্রতিষ্ঠানের সম্পদের মূল্যায়ন ও প্রত্যেক পরিকল্পনা বা প্ল্যানের জন্য আলাদাভাবে যথাযথ মূল্যায়নমাত্রা ও একচ্যুয়ারিয়াল ভিত্তি অনুযায়ী একচ্যুয়ারিয়াল রিজার্ভ নির্ধারণ করতে হবে। একচ্যুয়ারিয়াল রিজার্ভ নেট প্রিমিয়াম পদ্ধতিতে মূল্যায়ন করতে হবে। যদি নিয়োজিত একচ্যুয়ারি নেট প্রিমিয়াম মূল্য ছাড়া অন্য কোনো মূল্যায়ন পদ্ধতি যুক্তিযুক্ত মনে করে, তাহলে সেই পদ্ধতি ব্যবহার করা যাবে । তবে শর্ত থাকে যে, এ পদ্ধতিতে মূল্যায়িত একচ্যুয়ারিয়াল রিজার্ভ নেট প্রিমিয়াম পদ্ধতিতে মূল্যায়িত একচ্যুয়ারিয়াল রিজার্ভের কম হবে না এবং প্রতিবেদনে নিয়োজিত একচ্যুয়ারিকে তার ব্যবহৃত পদ্ধতির যৌক্তিকতা উল্লেখ করতে হবে।
খসড়ায় বলা হয়েছে, যদি কোনো পলিসির একচ্যুয়ারিয়াল রিজার্ভ নেতিবাচক হয়, সেক্ষেত্রে তা শূন্য হিসেবে গণ্য করতে হবে। আর কোনো পলিসি মূল্যায়নে একচ্যুয়ারিয়াল রিজার্ভ যদি নির্ধারিত প্রতিশ্রুত সমৰ্পণ মূল্যের চেয়ে কম হয়, সেক্ষেত্রে নির্ধারিত প্রতিশ্রুত সমর্পণ মূল্য একচ্যুয়ারিয়াল রিজার্ভ হিসেবে নির্ধারিত হবে।
সম্পদ মূল্যায়নের ক্ষেত্রে যেসব ঋণ আদায়যোগ্য নয়; আদায়যোগ্য প্রকৃতির অগ্রিমগুলো; আসবাবপত্র-স্থাপিত জিনিসপত্র-ডেড স্টক- সফটওয়্যার ও স্টেশনারী মালামাল; পূর্ব পরিশোধিত খরচগুলো; লাভ ও ক্ষতির হিসাব সমন্বয় স্থিতি; পুনর্বিমাকারীর একমাসের অধিককালের অনাদায়ী স্থিতি; কোম্পানি গঠনে প্রাথমিক ব্যয়গুলো; ইন্টেনজিবল সম্পদ; এক মাসের মধ্যে অপরিশোধিত প্রিমিয়াম ও এজেন্টের স্থিতি ইত্যাদি শূন্যমূল্য হিসেবে গণ্য হবে।
প্রত্যেক পলিসির দায় মূল্যায়নের ক্ষেত্রে সব প্রাসঙ্গিক বিষয়াদি বিবেচনায় নিয়ে যুক্তিসংগত অনুমানের ভিত্তিতে দায় মূল্যায়ন করতে হবে। দায়ের মূল্যায়ন পদ্ধতি ও অনুমানগুলো এক বছর থেকে অন্য বছরে প্রয়োজন সাপেক্ষে পরিবর্তন করা যাবে।
খসড়ায় বলা হয়েছে, বিমা পলিসির নির্ধারিত নেট প্রিমিয়ামে বোনাস, অফিস খরচ বা অন্যান্য মাশুল অন্তর্ভুক্ত করা যাবে না এবং নেট প্রিমিয়ামের পরিমাণ পলিসির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত সুবিধাদি প্রদানের জন্য পর্যাপ্ত হতে হবে। তবে নেট প্রিমিয়াম থেকে একচ্যুয়ারিয়াল নীতিগুলো ব্যবহারের মাধ্যমে বড় ধরনের প্রারম্ভিক খরচ সমন্বয় করা যেতে পারে। খসড়া প্রবিধানমালায় জীবন বিমাকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সম্পদের মূল্যায়ন, দায়ের পরিমাণ নির্ধারণ, সলভেন্সি মার্জিন বিবরণী প্রণয়নে পৃথক পৃথক ফরমের নমুনা যুক্ত করা হয়েছে।
খসড়ায় ইসলামি লাইফ ব্যবসার বিষয়ে বলা হয়েছে, ইসলামি লাইফ বিমা ব্যবসায় ঝুঁকির জন্য রিজার্ভ ও বিনিয়োগের জন্য রিজার্ভ—এ দুই ধরনের রিজার্ভ গণনা করতে হবে। অংশগ্রহণকারীদের তহবিলের সম্পদের মূল্য বিনিয়োগের তহবিলের মূল্য হিসেবে গণ্য হবে এবং বিনিয়োগের ক্ষেত্রে তা রিজার্ভ হিসেবে গণনা করতে হবে।