ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য সিকিমে মেঘভাঙা বর্ষণের পর আকস্মিক বানের পানিতে ভেসে গেছেন অন্তত ৪৩ জন। নিখোঁজদের মধ্যে দেশটির সামরিক বাহিনীর ২৩ সদস্য রয়েছেন। নিখোঁজ সৈন্যদের খোঁজে ব্যাপক পরিসরে তল্লাশি ও উদ্ধার অভিযান শুরু করেছে ভারতীয় সেনাবাহিনী।
বুধবার ভারতের সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, তিস্তা নদীর তীর উপচে সিকিমের বিস্তীর্ণ অঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে ২৩ সৈন্যসহ কমপক্ষে ৪৩ জন নিখোঁজ রয়েছেন।
দেশটির সেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বন্যার পানির তোড়ে লাচেন উপত্যকার কিছু স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রাজ্যের চুংথাং বাঁধের পানি ছেড়ে দেওয়ায় হঠাৎ করে পানির স্তর ১৫-২০ ফুট বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে সিংটামের কাছে বারদাংয়ে পার্কিং করে রাখা সেনাবাহিনীর বেশ কিছু গাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেনাবাহিনীর ২৩ সদস্য নিখোঁজ ও কিছু যানবাহন ডুবে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তল্লাশি অভিযান চলছে।
ভারতের উত্তরপূর্বের রাজ্য সিকিমে মঙ্গলবার রাতভর ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে। উত্তর সিকিমের লোনাক হ্রদে মেঘভাঙা বর্ষণের ফলে হ্রদের পানি উপচে পড়েছে। যে কারণে তিস্তা নদীর পানির স্তর হঠাৎ বেড়ে গেছে। সিকিম ও পশ্চিমবঙ্গের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে তিস্তা নদী। সিকিমে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলেও নতুন করে বন্যার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
সিকিমের স্থানীয় প্রশাসন সেখানকার বাসিন্দাদের জন্য বন্যার উচ্চ সতর্কতা জারি করেছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের ধারণ করা ভিডিওতে দেখা যায়, বন্যার পানিতে বিভিন্ন এলাকার রাস্তাঘাট ভেসে গেছে।
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী প্রেম সিং তামাং ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনের সময় বলেছেন, বন্যায় এখন পর্যন্ত কেউ আহত হননি। তবে সরকারি সম্পত্তির উল্লেখযোগ্য ক্ষতি হয়েছে। সিংটামে কয়েকজন নিখোঁজ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ত্রাণ তৎপরতা চলছে।
দেশটির আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, সিকিমের চুংথাং হ্রদ উপচে পড়ায় তিস্তা ফুলেফেঁপে উঠেছে। এর ফলে গজলডোবা, দোমোহনী, মেখলিগঞ্জ এবং ঘিশের মতো নিম্নাঞ্চলে বিপর্যয় দেখা দিতে পারে। বাসিন্দাদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে দেশটির এই আবহাওয়া দপ্তর।
সূত্র: এনডিটিভি।