চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই ৯ মাসে ২১৬ সাংবাদিক বিভিন্নভাবে নির্যাতন, হয়রানি, মামলা, হুমকি ও পেশাগত দায়িত্ব পালনে গিয়ে বাধার শিকার হয়েছেন। এছাড়া হত্যার শিকার হয়েছেন একজন।
মঙ্গলবার বেসরকারি মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) তাদের প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরেছে।
আসক বলেছে, ১০টি জাতীয় দৈনিক পত্রিকা, অনলাইন সংবাদমাধ্যম এবং তাদের নিজস্ব সূত্র থেকে সংগ্রহ করা তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে।
সংগঠনটির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ৯ মাসে দেশের জাতীয় পত্রিকাগুলোতে প্রকাশিত প্রতিবেদনের তথ্যের ভিত্তিতে দেখা গেছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে আটজন নিহত হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রতিবেদনগুলোতে বলা হয়, তাদের মধ্যে পাঁচজন পুলিশের হাতে, দুইজন র্যাব ও একজন ডিবির (গোয়েন্দা পুলিশ) হাতে নিহত হন। এছাড়া সাদা পোশাকধারী ব্যক্তিরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে সাতজনকে অপহরণ করেছে বলে পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শীরা অভিযোগ করেছেন। এর মধ্যে পরবর্তী সময়ে ছয়জনকে বিভিন্ন অভিযোগে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। ৯ মাসে কারা হেফাজতে মারা গেছেন ৭৭ জন।
বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে বিএসএফের গুলি ও নির্যাতনে ১৮ বাংলাদেশি নাগরিক নিহত ও ২০ জন আহত হয়েছেন হয়েছেন বলে আইন ও সালিশ কেন্দ্রের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
নারীর প্রতি সহিংসতার বিষয়ে আইন ও সালিশ কেন্দ্রের প্রতিবেদন বলছে, গত ৯ মাসে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন মোট ৪৬৭ নারী। ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে ৩২ নারীকে। ধর্ষণের পর আত্মহত্যা করেছেন তিন নারী। এছাড়া ১০৫ নারীকে ধর্ষণের চেষ্টা চালানো হয়েছে।
পারিবারিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন মোট ৩৯১ নারী। এর মধ্যে ২৩৫ নারীকে হত্যা করা হয়েছে। পারিবারিক নির্যাতনের কারণে আত্মহত্যা করেছেন ৯৪ নারী। এ ছাড়া শারীরিকভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ৬২ নারী। যৌতুককে কেন্দ্র করে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ১১৪ নারী। এর মধ্যে শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ৫৭ জন। যৌতুকের জন্য শারীরিক নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে ৫১ জনকে এবং যৌতুকের কারণে নির্যাতনের শিকার হয়ে আত্মহত্যা করেছেন ছয় নারী।
এছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থানে গত ৯ মাসে মোট ১ হাজার ১৫৭ শিশু বিভিন্ন ধরনের নির্যাতন ও হত্যার শিকার হয়েছে বলে আসকের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। এর মধ্যে হত্যার শিকার হয়েছে ৩১৭ শিশু। এর বাইরে ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৪৩ ছেলে শিশু, ২ ছেলে শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। এক ছেলে শিশু ধর্ষণের শিকারের পর আত্মহত্যা করেছে। ধর্ষণচেষ্টার শিকার হয়েছে ছয়টি শিশু। এ ছাড়া আত্মহত্যা করেছে মোট ৬৪ শিশু, বিভিন্ন সময়ে মোট ১১৮ শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে, রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে ৫ শিশুর, এ ছাড়া অপহরণের পর হত্যা করা হয় ১৫ শিশুকে।