রাস্তার একধারে কুপিয়ে খুন করা হচ্ছে তরুণীকে। পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে জনতা, চলাচল করছে গাড়ি। সকলে দেখছে। অনেকে মোবাইল ক্যামেরায় তুলে রাখছে হত্যাদৃশ্য। তবু কেউ তরুণীকে বাঁচানোর চেষ্টা করছে না। মর্মান্তিক সামাজিক অবক্ষয়ের এই চিত্র সাম্প্রতিক ভারতের। তারই ভিন্ন রূপ দেখেছে মধ্যপ্রদেশের উজ্জয়িনী শহর। ধর্ষিতা তরুণী দোরে দোরে ঘুরলেও তাকে কেউ সাহায্য করেনি। বডনগরের আশ্রমের পুরোহিত রাহুল শর্মা ব্যতিক্রম। তিনি অর্ধনগ্ন তরুণীকে গায়ের জামা খুলে দেন। তাঁর উদ্যোগেই পুলিশের সাহায্যে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় নির্যাতিতাকে।
সোমবার সকাল তখন সাড়ে ৯টা। বডনগরের আশ্রমের সামনে গিয়ে দাঁড়ান ধর্ষিতা কিশোরী। গেটের কাছেই ছিলেন পুরোহিত রাহুল। কিশোরীকে দেখে স্তম্ভিত হয়ে যান তিনি। তখন সামনে দাঁড়িয়ে অর্ধনগ্ন রক্তাক্ত কিশোরী। দ্রুত নিজের জামাটি খুলে নির্যাতিতাকে দেন। হতচকিত কয়েক মুহূর্ত কাটনোর পরেই পুলিশকে ফোন করেন। ২০ মিনিট পর আশ্রমে পুলিশ এসে কিশোরীকে নিয়ে যায়। রাহুল বলেন, “আমি ওকে আমার জামা খুলে দিই। কিশোরীর শরীর রক্তে ভেজা ছিল। কথা বলতে পারছিল না। চোখ ফুলেছিল। প্রথমে ১০০ নম্বরে ফোন করেছিলাম। জবাব না পেয়ে মহাকাল থানায় যোগাযোগ করি। প্রায় ২০ মিনিট পর পুলিশ আশ্রমে পৌঁছায়। কিশোরীকে নিয়ে যায়।”
উজ্জয়িনীর এই ঘটনায় এক অটোচালককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আটক করা হয়েছে ;চারজনকে। যদিও আটকদের পরিচয় প্রকাশ করেনি পুলিশ। এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখেছে পুলিশ। সেখানে দেখা গিয়েছে কিশোরী একটি অটোতে উঠেছিল। ওই অটো বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। অটোতে রক্তের দাগ মিলেছে। পুলিশ আরও দাবি করেছে, স্থানীয়দের কেউ কেউ পঞ্চাশ, একশ টাকা দিয়ে কিশোরীকে সাহায্য করেছিল।
এদিকে বর্বর ঘটনায় কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী তোপ দেগেছেন গেরুয়া শিবিরকে। বিজেপি (BJP) শাসিত মধ্যপ্রদেশে বছর শেষে ভোট। তার আগে এমন ঘটনায় মুখ পুড়েছে শিবরাজ সিং চৌহান সরকারের। বুধবার রাহুল গান্ধী তোপ দাগেন, মহিলাদের উপর অপরাধ রুখত অক্ষম মধ্যপ্রদেশ সরকার। রাজ্যের মেয়েরা যে অবস্থায় রয়েছেন, তার জন্য গোটা দেশ লজ্জিত। যদিও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও দেশের প্রধানমন্ত্রীর কোনও লজ্জা নেই।