ঘনাচ্ছে ভয়াবহ ভবিষ্যতের আশঙ্কা, জম্বি হয়ে যাবে পৃথিবীশুদ্ধ মানুষ!


আন্তর্জাতিক ডেস্ক : , আপডেট করা হয়েছে : 24-09-2023

ঘনাচ্ছে ভয়াবহ ভবিষ্যতের আশঙ্কা, জম্বি হয়ে যাবে পৃথিবীশুদ্ধ মানুষ!

যে দল এগিয়ে আসছে তার ভেতরকার প্রত্যেক মূর্তিটাই যেন মানুষের মতন দেখতে কলের পুতুলের মতন।… শত-শত চোখে স্থির আগুনের মতন উজ্জ্বল দৃষ্টি।… অস্বাভাবিক কেমন একটা অজানা-অজানা ভাব মূর্তিগুলোর চারিদিকে কী যেন এক ভূতূড়ে রহস্য সৃষ্টি করেছে!’ হেমেন্দ্রকুমার রায়ের ‘অমৃত দ্বীপ’ লিখিত হয়েছিল গত শতাব্দীর প্রথমার্ধে। সেই উপন্যাসে হেমেন্দ্রকুমার প্রথমবার বাঙালির সঙ্গে জম্বিদের মোলাকাত করিয়েছিলেন।

যদিও তারা আড়ে বহরে মোটেই সেই জীবন্মৃত আতঙ্কদের মতো নয়, যাদের হালফিলের হলিউড থেকে কোরিয়ান নানা ছবিতে দাপিয়ে বেড়াতে দেখা যায়। তবুও তারা জম্বিই। সে যাই হোক, আসল প্রশ্ন হল, বইয়ের পাতা বা সিনেমা-সিরিজের স্ক্রিনে যা মানায় তা কি বাস্তব হতে পারে কখনও? কোভিডের (COVID-19) মুখোমুখি হওয়ার পর বিশ্বজুড়ে নেমে আসা আতঙ্কের ঘনস্রোতের সামনে পড়ার অভিজ্ঞতায় মানুষের মনে এখন মাঝে মাঝেই উঁকি মারে প্রশ্নটা। এমন কি হতে পারে, এমন অতিমারীর দেখা মিলল, যেখানে আশ্চর্য ক্ষতিকর কোনও ভাইরাস রাতারাতি দেশজুড়ে সব মানুষের শরীরে ভরে দিল জম্বিত্বের বীজ! আর দলে দলে সেই জম্বিরা আক্রমণ করতে শুরু করল তখনও ‘স্বাভাবিক’ থাকা মানুষদের?

এবছরের জুন মাসে একটা খবর অনেকের নজরেই পড়ে থাকবে। আমেরিকায় (US) ক্রমেই বাড়ছে এমন এক মাদকের নেশা যার প্রভাবে নেশাচ্ছন্নরা প্রায় জম্বিদের মতোই আচরণ করছেন! কেবল ফ্লোরিডাতেই অন্তত ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে ‘জম্বি ড্রাগে’র (Zombie drug) ছোবলে! এর ওভারডোজের শিকার হয়েছেন ১৫০ জনেরও বেশি! যত সময় যাচ্ছে ততই যেন মার্কিন মুলুকে আতঙ্কের মাত্রা বাড়াচ্ছে এই ভয়ঙ্কর ড্রাগের নেশা। কেবল জুনেই নয়, তারও আগে এমন খবর মাঝে মাঝেই সামনে আসে। এই ওষুধের আসল নাম জাইলিন। আসলে গরু, ঘোড়ার মতো প্রাণীদের ঘুম পাড়াতে অর্থাৎ ট্রাঙ্কুলাইজার হিসেবেই এর ব্যবহার। কিন্তু ক্রমে এটা প্রবেশ করে মার্কিন বেআইনি মাদকের দুনিয়ায়। এটার সঙ্গে ফেন্টানাইল মিশিয়ে তৈরি হয় ভয়ংকর মাদক। যার ব্যবহার ক্রমেই বাড়ছে।

আর এর ব্যবহারের ফলে সারা শরীরের ত্বকে সৃষ্টি হতে থাকে মারাত্মক ক্ষত। কী হয় ‘ট্রাঙ্ক’ নামে পরিচিত এই মাদক খেলে? বলা হচ্ছে, এর নেশায় টানা ঘুমোতে থাকেন নেশাগ্রস্ত। সেই সঙ্গেই তাঁর শ্বাসযন্ত্রও দুর্বল হতে শুরু করে। নিয়মিত নেশা করলে সর্বক্ষণ একটা ঝিমুনি ভাব থাকে। সেই সঙ্গে মস্তিষ্কের উপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে যেতে থাকে! এই সময় তাঁরা প্রায় জম্বির মতোই আচরণ করতে থাকেন। কেউ চিৎকার করতে থাকেন। কেউ রাস্তার মধ্যে দাঁড়িয়ে হাত-পা বেঁকিয়ে ও মাথা নিচু করে গোঙাতে থাকেন। ক্রমে নেশা থেকে বেরতে না পারলে মৃত্যু অবধারিত। বিভিন্ন ভিডিও ইন্টারনেট ঘাঁটলে পাওয়া যাবে। যেখানে আক্রান্তদের আচরণ দেখলে সত্যিই গা শিরশির করে ওঠে।

এবিষয়ে আরও কিছু বলার আগে একবার দেখা যেতে পারে না-মানুষরাও কীভাবে জম্বি হতে পারে! কথা হচ্ছে এক ধরনের ছত্রাকের, যারা পিঁপড়েদের জম্বি বানিয়ে দিতে পারে! কীভাবে? অফিওকর্ডিসেপস ফাঙ্গাস নামের এই ছত্রাকদের পরিচয় ‘জম্বি ভাইরাস’। কোনও ভাবে সুকৌশলে পিঁপড়ের সঙ্গে আটকে গিয়ে নিজের একটি কোষ পিঁপড়ের শরীরে প্রবেশ করিয়ে দেয়। তারপর ধীরে ধীরে পিঁপড়েটিকে ভিতরে ভিতরে কুড়ে কুড়ে খেতে থাকে। কোষগুলি এক থেকে বহু হতে থাকে। ততক্ষণ পর্যন্ত তারা সংখ্যায় বাড়ে, যতক্ষণ না তাদের ভর পিঁপড়ের ভরের অর্ধেক হয়ে যায়! এরপর তারা রাসায়ণিক সংকেত পাঠাতে থাকে পিঁপড়ের মস্তিষ্কে। ব্যাস! পিঁপড়েরা অপ্রকৃতিস্থের মতো আচরণ করতে থাকে। পরে ওই পিঁপড়ের মৃত্যু হয়। তার শরীরকে অবলম্বন করে গজিয়ে উঠে আকাশের দিকে মাথা তুলতে থাকে ‘জম্বি ভাইরাস’!

‘জম্বি ডিয়ার ডিজিজ’ নামের আরেক রকমের অসুখ রয়েছে যার আসল নাম ‘ক্রনিক ওয়েস্টিং ডিজিজ’। আমেরিকা ও কানাডার অনেক প্রদেশেই মাথাচাড়া দিচ্ছে এই অসুখ। এই অসুখে আক্রান্ত হলেই হরিণরা আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে। ‘খুনে’ মেজাজের হরিণরা একে অপরের সঙ্গে লড়াই শুরু করে। তারপর ঢলে পড়ে মৃত্যুর কোলে। সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে, আমাদের মধ্যেই রয়ে গিয়েছে এই ধরনের পরজীবীরা। এরা কিন্তু অনায়াসেই মানুষের মগজের দখল নিতে পারে। মাছিদের শরীরেও এমন ধরনের ফাঙ্গাসের দেখা মিলেছে, যারা মাছিদের রাতারাতি এমন ভাবে নিয়ন্ত্রণ করে যে তারা জম্বিদের মতো হয়ে ওঠে। সুতরাং এই ধরনের কোনও আদ্যপ্রাণীরা ‘জম্বি অ্যাপোক্যালিপস’ ঘটাতে পারবে না, একথা নিশ্চিত করে বলবে কে? আবার কোনও গবেষণাগারেও তো তৈরি হতে পারে এমন বিপজ্জনক ভাইরাস বা অন্য কোনও ধরনের আণুবীক্ষণিক জীব!


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]