যতদিন যাচ্ছে বাড়ছে ক্যানসার। এই রোগ ক্রমে গ্রাস করছে লক্ষ লক্ষ প্রাণ। তবে এখন এর চিকিত্সা অনেক উন্নত। এখন ক্যানসার মানেই মৃত্যু নয়। যদি ঠিক সময়ে, অর্থাত্ প্রাথমিক অবস্থায় এই রোগ ধরা পড়ে, তাহলে অনেকসময়ই সঠিক চিকিত্সা করলে সেরে যায় এই রোগ। কী করে বুঝবেন শরীরে বাসা বেঁধেছে এই রোগ?
তার জন্য আপনাকে সতর্ক হতে হবে। বিশেষ করে মহিলাদের এই ব্যাপারে আরও বেশি সতর্ক হতে হবে। কারণ বেশিরভাগ মহিলাই সময়মতো ক্যানসারের পরীক্ষা করান না, যার কারণে তাঁদের মৃত্যুর মুখোমুখি হতে হয়। WHO বা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে,স্তন এবং জরায়ুর ক্যানসার মহিলাদের মধ্যে যেসব ক্যানসার দেখা যায়, তার মধ্যে অন্যতম। এই জন্য সময়মতো কিছু পরীক্ষা করা দরকার। যাতে প্রাথমিক পর্যায়ে ক্যানসার শনাক্ত করা যায়।
মহিলাদের ক্যান্সার পরীক্ষা কেন প্রয়োজন?
বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রত্যেক মহিলার নিয়মিত স্ত্রীরোগ সংক্রান্ত পরীক্ষা করা উচিত। এর মাধ্যমে সময়ের আগেই ক্যান্সার ধরা পড়বে এবং সহজেই এই রোগের সঙ্গে মোকাবিলা করা সম্ভব হবে। অন্যদিকে এইচপিভি সম্পর্কেও আগাম জানা যাবে।। HPV মহিলাদের জরায়ুর ক্যান্সারের জন্য দায়ী। এছাড়াও একটি এইচপিভি ভ্যাকসিন রয়েছে, যা প্রতিটি মহিলার নেওয়া উচিত। নিয়মিত চেকআপ করালে, প্রজনন স্বাস্থ্য ভাল থাকে এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্যেরও উন্নতি ঘটে। আসুন জেনে নেওয়া যাক যে প্রত্যেক মহিলার কী-কী পরীক্ষা করা উচিত…
প্রজনন স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য, প্রতিটি মহিলার নিয়মিতভাবে একটি প্যাপ স্মিয়ার পরীক্ষা করা উচিত। ২১ থেকে ৬৫ বছর বয়সী প্রতিটি মহিলাকে তিন বছরে একবার প্যাপ স্মিয়ার পরীক্ষা করাতে হবে। এর মাধ্যমে, প্রজনন অঙ্গে ক্যান্সার প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত করা যাবে।
HPV পরীক্ষা – হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস জরায়ুর ক্যানসারের জন্য ভীষণভাবে দায়ী। এই ভাইরাসের আক্রমণে প্রজনন অঙ্গের কোষে পরিবর্তন আসতে থাকে। এই পরীক্ষাটি ২৫ বছর বয়সের পরে করা হয়। সাধারণত প্যাপ স্মিয়ারের সাথে HPV পরীক্ষা করা হয়। এর মাধ্যমে জরায়ুর ক্যানসার প্রতিরোধ করা যায়।
কলপোস্কোপি- প্যাপ স্মিয়ারে কোনও সমস্যা হলে চিকিত্সকরা কলপোস্কোপি করার পরামর্শ দেন। এতে, জরায়ুর ভিতরের জিনিসগুলি খুব সূক্ষ্মভাবে দেখা যায় এবং ক্যানসার থাকলে তাও শনাক্ত করা যায়।
ট্রান্সভ্যাজাইনাল আল্ট্রাসাউন্ড– ট্রান্সভ্যাজাইনাল আল্ট্রাসাউন্ডের মাধ্যমে মহিলাদের শরীরের অনেক অংশে ক্যানসার শনাক্ত করা হয়। এর সাহায্যে পেলভিক, ডিম্বাশয় এবং জরায়ুতে ক্যানসার চেনা যায়।
জেনেটিক টেস্টিং – এতে, BRCA1 এবং BRCA2 জিন চিহ্নিত করা হয়। এই দুটি জিনই স্তন ও ডিম্বাশয়ের ক্যানসারের জন্য দায়ী।
CA-125 রক্ত পরীক্ষা - CA-125 রক্ত পরীক্ষা ৩০ বছর পর করা হয়। এতে CA-125 প্রোটিন ধরা পড়ে। রক্তে তা বেড়ে গেলে ডিম্বাশয়ের ক্যানসার হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
এন্ডোমেটেরিয়াল টিস্যু পরীক্ষা – এতে, এন্ডোমেটেরিয়াল কোষে যেকোনও ধরনের ত্রুটি শনাক্ত করা হয়।যার কারণে জরায়ুতে ক্যানসার হওয়ার আশঙ্কা থাকে।