কমিউনিস্ট চিনের ইতিহাসে বেনজির ঘটনা। এবার লালফৌজের সংবাদপত্রে নজিরবিহীন ভাবে সমালোচনার মুখে পড়ল খোদ চিনা সেনাই। দেশের পরমাণু বাহিনী আদৌ যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত নয় বলে তোপ দাগা হয়েছে সেখানে।
চিনা সেনাবাহিনীর সংবাদপত্র ‘পিএলএ ডেইলি’। মূলত, প্রোপাগান্ডা ছড়িয়ে শত্রুপক্ষের মনোবল ভেঙে দিতে ও দেশে সেনার নায়কোচিত ছবি তুলে ধরতেই ব্যবহার করা হয় কাগজটিকে। এহেন সংবাদপত্রে দেশের পরমাণু বাহিনী আদৌ যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত নয় বলে তোপ দাগা হয়েছে। সম্প্রতি এক মহড়ায় আশানুরূপ ফল পাওয়া যায়নি রকেট ফোর্স থেকে। লড়াইয়ের ময়দানে এর ফলে বেকায়দায় পড়তে পারে ফৌজ। প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকদের মতে, লালফৌজের অন্দরে গোষ্ঠী সংঘর্ষের জেরেই এই ঘটনা।
উল্লেখ্য, গত আগস্ট মাসে পরমাণু অস্ত্রভাণ্ডারের দায়িত্বে থাকা রকেট ফোর্সে বড়সড় রদবদল করেন চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। বাহিনীর প্রধান হিসাবে নৌসেনার ডেপুটি কমান্ডার ওয়াং হাউবিনকে নিযুক্ত করেন তিনি। রকেট ফোর্সের কমান্ডার পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় লি ইউচাউকে। তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্ত চলছে। তদন্তকারীদের রাডারে রয়েছে ইউচাউয়ের দুই সহযোগীও। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, পিপলস লিবারেশন আর্মি বা চিনের ফৌজে দুর্নীতি গভীরে শিকড় জমিয়েছে। তাই ক্ষমতায় এসেই ‘সাফাই অভিযান’ শুরু করেছেন প্রেসিডেন্ট শি। তবে অনেকেরই দাবি, ক্ষমতা নিরঙ্কুশ করতে সেনার অন্দরে বিরোধীদের কোণঠাসা করছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, তাইওয়ান দখল করতে চিনের যে নীল নকশা, তাতে বিরাট ভূমিকা রয়েছে রকেট ফোর্সের। এবার সেই বাহিনীতে নিজের পছন্দের অফিসারদের নিয়োগ করে বড় বার্তা দিলেন জিনপিং। উল্লেখ্য, গত ২৫ জুলাই প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই-কে বিদেশমন্ত্রকের দায়িত্বে ফিরিয়ে আনা হয়। সেই সময়ে চিনা প্রশাসনের তরফে বলা হয়েছিল, অসুস্থ হয়ে পড়েছেন কিন গ্যাং। যদিও পরে সরকারি নথিপত্র-সহ সমস্ত জায়গা থেকেই সরিয়ে নেওয়া হয় এই কথা। তারপর থেকেই চিনা প্রশাসন থেকে মুছে ফেলা হচ্ছে কিন গ্যাংয়ের অস্তিত্ব।