ভুটানের থিম্পুতে সাফ ফুটবলের ফাইনাল। সেখানে বাংলাদেশকে ২-০ গোলে হারিয়েছিল ভারত। গর্বিত হয়েছিল গোটা দেশ। আর সেই টিমে যারা ছিলেন তার মধ্যে ১৬জনই মণিপুরের। কিন্তু মণিপুর তো হিংসায় বিধ্বস্ত। কুকি বনাম মৈতেয়ী সংঘর্ষে বার বার উত্তাল। তবে মণিপুরের মাটিতে যে শত্রুতা সেটা কিন্তু টিমে ছিল না। কারণ ওই টিমে ১৬জনের মধ্যে ১১জন যেমন ছিলেন মৈতেয়ী তেমনি ৪জন কুকিও ছিলেন। টিমের মধ্যে তারা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়েছে দেশের জন্য। শুধু লড়েনি, বাংলাদেশকে হারিয়েছে। এবার নিজের মাটিতে ফেরার পালা।
অনেকটাই বদলে গিয়েছে মণিপুর। শয়ে শয়ে মানুষ ত্রাণ শিবিরে রাত কাটাচ্ছেন। পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বাড়ি। তবুও তো নিজের মাটি। এই মাটি তো সবার প্রিয়। জাতিগত সংঘর্ষে সেই মাটি আজ ক্ষতবিক্ষত। তবু ফিরলেন অধিনায়ক গামগৌহৌ মাতে, ভারত, লেভিস, আব্বাস, সিংজামায়ুমরা। কিন্তু তাঁদেরকে ঘিরে নেই সেই আগের উচ্ছাস। নিয়ম রক্ষার জন্য সংবর্ধনা হয়েছে। তবে সেটাই নেহাতই সাদামাটা।
তবে অধিনায়কের জীবনটা যেন একেবারে বদলে দিয়েছে এই হিংসা। এই সংঘর্ষ মাথা গোঁজার ঠাঁইটাও কেড়ে নিয়েছে। বাড়িটাও তো ছারখার হয়ে গিয়েছে। তাণ্ডবের জেরে আর ফেরা হয়নি প্রিয় বাড়িটাতে।
সূত্রের খবর, গত ৩ মে মাতে পরিবারের বাড়িতেও হামলা চালানো হয়েছিল।আতঙ্কে বাড়ি ছাড়েন তারা। এরপর আর বাড়ি ফিরতে সাহস পাননি। মাতে যখন ঝড় তুলেছেন সবুজ মাঠে, দেশকে জেতানোর জন্য লড়াই তখন একটা নিরাপদ জীবনের জন্য লড়াই চালিয়ে গিয়েছেন অধিনায়কের পরিবার।
ক্য়াপ্টেনের গোটা পরিবারই আজ শরনার্থী শিবিরে। চার দিদি, ভাই, বোন, মা, বাবা থাকতেন যে বাড়িতে সেটাই তো আর নেই। তাঁদের পরিচয় বলতে এখন তারা শরনার্থী শিবিরের বাসিন্দা। কাংপোকপি জেলার শরনার্থী শিবিরে থাকছেন তারা। তবে মাতের এখন একটাই চাওয়া যে করেই হোক শান্তি ফিরুক রাজ্য়ে। আসলে অধিনায়কের এই চাওয়াটা যেন দেশবাসীরও চাওয়া। কিন্তু তবুও যেন সুর কেটে গিয়েছে মণিপুরের।