হাউজে কাওসার কী, এটা কি সবাই পাবে?


ধর্ম ডেস্ক , আপডেট করা হয়েছে : 13-09-2023

হাউজে কাওসার কী, এটা কি সবাই পাবে?

হাউজে কাওসার জান্নাতের একটি বিশেষ প্রসবণ। এর পানি হবে সবচেয়ে বেশি মিষ্টি ও তৃপ্তিকর। হাশরের ময়দানে হাউজে কাওসারের পানকারীই বেশি হবে। হাউজে কাওসার দ্বারা জান্নাতে বিদ্যমান একটি নদী বা ঝরনাধারাকে বোঝানো হয়। নবিজী হাউজে কাওসার সম্পর্কে কী বলেছেন? এ সম্পর্কে ইসলামের দিকনির্দেশনাই বা কী?

ইসলামি বিশ্বাস মতে, ‘কেয়ামতের দিন সবাইকে যখন ওঠানো হবে তখন জেগে ওঠার পর সবাই অনেক বেশি পিপাসা নিয়ে এবং বিশৃঙ্খল পরিবেশে তৃষ্ণা নিবারণ করার চেষ্টা করবে। তারপর আল্লাহ তাআলা মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে দায়িত্ব দেবেন, বিশ্বাসীদের মধ্যে তৃষ্ণা নিবারণে কে কে অগ্রাধিকার পাবেন। এরপর তাদের পিপাসা মেট‍ানোর জন্য হাউজে কাওসার থেকে শীতল আর সুস্বাদু পানি পান করানো হবে।

আল্লাহ তাআলা সব নবির জন্যে হাউজে কাওসার তৈরি করেছেন। তবে আমাদের নবি মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্য আল্লাহ তাআলা বিশেষ হাউজ তৈরি করে রেখেছেন। যা অন্যান্য নবি-রাসুলদের হাউজের চেয়ে অনেক বড় ও এর পানীয় সবচেয়ে বেশি মিষ্টি হবে এবং হাশরের দিন এর পানকারী হবে সবার চেয়ে অধিক। হাউজে কাউছার কেমন হবে এর বর্ণনায় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-

১. হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘আমার হাউজের প্রশস্ততা এক মাসের পথের দূরত্বের সমপরিমাণ। এর পানি দুধের চেয়েও সাদা, সুগন্ধি, মিশক আম্বরের চেয়েও অধিক খোশবুদার। এর পেয়ালা আকাশের উজ্জ্বল নক্ষত্ররাজির তুল্য। যে একবার এর শরবত পান করবে সে কখনো আর পিপাসিত হবে না।’ (বুখারি ও মুসলিম)

২. হজরত আনাস ইবনে মালিক রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘নিশ্চয়ই আমার হাউজের আয়তন ইয়ামেনের আইলা ও সানআর (শহরদ্বয়ের) মধ্যের দূরত্বের সমপরিমাণ। তার পান পাত্রের (পেয়ালা) সংখ্যা আসমানের তারকারাজি সমান হবে।’ (বুখারি ও মুসলিম)

এ কারণেই হাউসে কাওসারের পানকারীর সংখ্যা বেশি হবে বলেও নবিজী হাদিসে পাকে উল্লেখ করেছেন। তবে সবার ভাগ্যে হাউজে কাওসারের পানি মিলবে না।

যারা হাউজে কাওসার থেকে বঞ্চিত হবে

হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘কেয়ামতের দিন আমার উম্মতের একটি দল আমার কাছে আসতে চাইবে। কিন্তু তাদের বাধা দেওয়া হবে। এরপর আমি বলবো- হে আমার রব! ওরা আমার উম্মত। আল্লাহ তাআলা বলবেন, ‘তুমি জান না এরা তোমার অবর্তমানে ধর্মের নামে নতুন নতুন পন্থা আবিষ্কার করেছে। নিশ্চয়ই এরা পশ্চাৎমুখী হয়ে মুরতাদ হয়েছিল।’ (বুখারি ও মুসলিম)

হাউজে কাওসারের বর্ণনা ও গুণাগুণ প্রকাশ করার মর্মার্থ হলো- মুসলমানদেরকে শেষ বিচারের দিনের ভয়াবহতা সর্ম্পকে সচেতন করা এবং সেই অনুসারে তাদের পরকালের ভালোর জন্য এখন থেকেই পরিকল্পনা করতে অনুপ্রাণিত করা। এটি মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি তাদের ভালবাসার বহিঃপ্রকাশ এবং কেয়ামতের দিনের না দেখা বিষয়ের প্রতি বিশ্বাস স্থাপনে উদ্বুদ্ধ করে।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে দ্বীনের সঠিক পথের ওপর থাকার তাওফিক দান করুন। বেদায়াত থেকে মুক্ত থাকার তাওফিক দান করুন। পরকালের কঠিন পরিস্থিতে হাউজে কাওসার ও আরশের ছায়ায় স্থান পাওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]