ডায়াবিটিস বাড়াচ্ছে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি। ডায়াবেটিস বেড়ে গেলে হার্টের সমস্যা হয়। এর কারণ, ডায়াবিটিস এবং হৃদরোগের মধ্যে যোগাযোগ রয়েছে। উভয় রোগেরই লক্ষণ বর্ধিত বিপি, কোলেস্টেরল এবং স্থূলতার কারণে হয়। অতএব, যদি ডায়াবেটিসকে সময়মতো নিয়ন্ত্রণ না করা হয় তবে অবশ্যই হৃদরোগ হওয়ার নিশ্চয়তা রয়েছে।
অনেক সময় এই হার্ট অ্যাটাক এতটাই যন্ত্রণাহীন হয় যে প্রথম কয়েক ঘণ্টা রোগী নিজেই বুঝতে পারেন না যে তাঁর হার্ট অ্যাটাক হয়েছে।
ডায়াবিটিসের ফলে চোখ, কিডনি, হার্ট, ব্রেন, নার্ভের যে মারাত্মক ক্ষতি হয় সে সম্পর্কে সচেতনতা গড়ে তোলাই আমাদের লক্ষ্য। যত তাড়াতাড়ি ডায়াবেটিস ধরা পড়বে তত বেশি অঙ্গহানির ঝুঁকি কমবে। ডায়াবিটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের রক্তে শর্করার মাত্রা রক্তনালীগুলির ক্ষতি করার পাশাপাশি প্রদাহকে বাড়িয়ে তুলতে পারে। হৃত্পিণ্ডের স্বাভাবিক রক্ত প্রবাহকে বাধা দেয়। যা হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা বাড়ে। ডায়াবিটিস এবং হৃদরোগের মধ্যে কী বিশেষ সংযোগ রয়েছে যা হৃদয়কে প্রভাবিত করে?
হৃদরোগ কী?
হৃত্পিন্ড প্রতি মিনিটে ৬০ থেকে ১০০ বার সংকোচন-প্রসারনের মাধ্যমে দেহের প্রতিটি কোষে বিশুদ্ধ রক্ত ও খাদ্যকণা পৌঁছে দেয়। একই সঙ্গে দেহের দূষিত রক্তকে বিশুদ্ধ করণের জন্য ফুফুসে সরবরাহ করে। দেহের প্রতিটি অঙ্গের বেঁচে থাকার জন্য হৃত্পিন্ডকে সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে হয়। নিজের প্রয়োজনীয় রসদ হৃত্পিন্ড নিজস্ব তিনটি করোনারি আর্টারির মাধ্যমে নিয়ে থাকে। হৃত্পিন্ড তার কাজ ঠিকমতো করতে না পারাকেই সহজ ভাষায় হার্টফেল বলা হয়।
ডায়াবেটিস এবং হার্টের মধ্যে কী সম্পর্ক?
ডায়াবেটিস বুকে বোঝা হিসেবে চেপে বসতে পারে। কাশি বা শ্বাসকষ্ট সাধারণ নিউমোনিয়া ভেবে অবহেলা করবেন না। ডায়াবেটিস থাকলে এই সমস্যাই হয়ে উঠতে পারে ভয়াবহ। তাই ফ্লু ও নিউমোককাল ভ্যাক্সিন সংক্রমণ রোখার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। হাই বিপি এবং ডায়াবেটিস উভয় ক্ষেত্রেই হৃদরোগ হওয়ার ঝুঁকি দ্বিগুণ করে দেয়।
অস্বাস্থ্যকর কোলেস্টেরল এবং ট্রাইগ্লিসারাইড স্তর - এটি ধমনীতে ফলক তৈরি করে। এছাড়াও ইনসুলিন প্রতিরোধের বিকাশের একটি প্রধান কারণ।
৩ ০ বছরের বেশি বিএমআই - যাদের ডায়াবেটিস এবং স্থূলত্ব উভয়ই, ওজন হ্রাস কার্ডিওভাসকুলার ঝুঁকি হ্রাস করতে পারে।
অস্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ, রক্তে শর্করার পরিমান, নুন, স্যাচুরেটেড এবং ট্রান্সফ্যাট এবং প্রক্রিয়াজাত খাবার হৃদরোগ এবং ডায়াবিটিসের সঙ্গে সম্পর্কিত।
ডায়াবেটিসের সঙ্গে হার্টের যত্ন কীভাবে করবেন?
চিকিত্সকদের মতে রক্তে শর্করাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে স্বাস্থ্যকর ডায়েট প্রয়োজন। একজন ব্যক্তির তাজা ফল, শাকসবজি, গোটা শস্য, লেবু, কম ফ্যাটযুক্ত দুধ খাওয়া উচিত। তবে, এক্ষেত্রে ওষুধও ভালো কাজ করে।
এছাড়াও, কোনও চিকিত্সক অ্যাসপিরিনের মতো ড্রাগের পরামর্শ দিতে পারেন। যাতে রক্তচাপ কমে যায়, কোলেস্টেরল হ্রাস পায় এবং রক্ত জমাট বাঁধা প্রতিরোধ করা যায়।