ভিডিও শুট করে ইউটিউবে আপলোডের টোপ দিয়ে জঙ্গলমহলের রিসর্টে ডেকে বারাকপুরের তরুণীকে গণধর্ষণের অভিযোগ। পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রাম থানার পুলিশ গ্রেপ্তার করল দু’জনকে। পুলিশ জানায় ধৃতদের নাম অরবিন্দ মিশ্র ওরফে গোপাল এবং বঙ্কিম ঘোষ। ধৃতদের মধ্যে অরবিন্দ ভিডিওগ্রাফার। তার বাড়ি আউশগ্রামের দিগনগর গ্রামে। বঙ্কিম আউশগ্রামের ভাল্কি মাচানের ওই রিসর্টের কেয়ারটেকার। তার বাড়ি রাধামোহনপুর। দু’জনকে বৃহস্পতিবার রাতে এলাকা থেকেই ধরা হয়েছে। শুক্রবার ধৃতদের বর্ধমান আদালতে পাঠানো হয়। ধৃতদের বিরুদ্ধে গণধর্ষণের অভিযোগে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।
অভিযোগকারী তরুণীর (১৯) বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার বারাকপুর এলাকায়। মহিলা বিবাহিতা।
তিনি পুলিশকে জানিয়েছেন মাসখানেক আগে ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দেখে দিগনগরের অরবিন্দ মিশ্রর সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। ফেসবুকেই মহিলা জানতে পারেন অরবিন্দ ওরফে গোপাল ইউটিউবের ভিডিও তৈরির বিষয়ে ওয়াকিবহাল এবং প্রশিক্ষণও দেন। অরবিন্দর সঙ্গে পরিচয়ের পাশাপাশি মহিলা জানতে পারেন পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামের ভাল্কি মাচানের জঙ্গলের রিসর্টে থেকে অনেকেই ভিডিও বা ফটোশুট করতে আসেন। এরপর অরবিন্দর কথামতো গত ৮ আগষ্ট মহিলা তাঁর স্বামীর সঙ্গে ভাল্কি মাচানের রিসর্টে আসেন। ওদিন ভিডিও শুট করে মহিলা ওদিনই ফিরে যান কলকাতায়। মহিলার দাবি প্রশিক্ষণ ও ভিডিও শুটের ফি বাবদ তিনি ওদিন অরবিন্দকে ৫ হাজার ১২০ টাকা মিটিয়ে দেন।
[আরও পড়ুন: দত্তপুকুর কাণ্ডে গ্রেপ্তার মূল পাণ্ডা, আরও তথ্যের খোঁজে বিস্ফোরণস্থলে ড্রোন ওড়াল পুলিশ]
তারপর থেকেই ফোনে মহিলার সঙ্গে অরবিন্দর যোগাযোগ ছিল। এরপর অরবিন্দ রিহার্সালের জন্য মহিলাকে ডাকে। গত ১৭ আগষ্ট মহিলা তার স্বামীর সঙ্গে মাচানের রিসর্টে যথারীতি চলে আসেন। মহিলা পুলিশকে জানান, ওদিন ডাকার পর মাচানের রিসর্টে এলে তাকে দোতলায় নিয়ে যাওয়া হয়। পিছু পিছু তার স্বামীও দোতলার ঘরে গিয়েছিলেন। কিন্তু অরবিন্দ মহিলাকে জানান, শুটিংয়ে মনোযোগের খাতিরে তাঁকে একা থাকতে হবে। দোতলা থেকে নামিয়ে দেওয়া হয় মহিলার স্বামীকে। তাঁর অভিযোগ, ওদিন অরবিন্দ দে রিহার্সালের নাম করে তাঁকে ধর্ষণ করে। অভিযোগ, অরবিন্দ হুমকি দেয় একথা কাউকে জানালে ক্ষতি হবে।
মহিলা জানান সেদিন তিনি তার স্বামীকে বিষয়টি জানান। কিন্তু ভয়ে ভয়ে দুজন ফিরে যান কলকাতায়।
পুলিশ সূত্রে জানা যায় বেশ কয়েকদিন কেটে যাওয়ার পর মহিলা বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ না করায় অরবিন্দ ভাবেন বিষয়টি নিয়ে কোনও সমস্যা হবে না। মহিলা জানান এরপর গত বুধবার রাতে অরবিন্দ মিশ্র ফের ফোন করে ডাকেন মহিলাকে। নির্যাতিতা জানান একটা ভাল কাজ আছে। তাকে ডাকা হয় মাচানের রিসর্টে। মহিলা বৃহস্পতিবার তার স্বামীর সঙ্গে চলেও আসেন।
মহিলার অভিযোগ, যথারীতি তাকে রিসর্টের দোতলার ঘরে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁর স্বামীকে নিচে বিশ্রাম নিতে বলা হয়। অভিযোগ, বৃহস্পতিবার রিসর্টের দোতলার ঘরে অরবিন্দ দে ফের তাঁকে ধর্ষণ করে। রিসর্টের কেয়ারটেকারও তাঁকে ধর্ষণ করে। তারপরেই ওই মহিলা তাঁর স্বামীর সঙ্গে সরাসরি আউশগ্রাম থানায় যান। দু’জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ বৃহস্পতিবার গভীর রাতে দু’জনকে গ্রেপ্তার করে।