গুরুদাসপুরে ১১ বছরের শিশুর পেটে নয় মাসের বাচ্চা


অনলাইন ডেস্ক: , আপডেট করা হয়েছে : 25-08-2023

গুরুদাসপুরে ১১ বছরের শিশুর পেটে নয় মাসের বাচ্চা

নাটোরের গুরুদাসপুরের একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির এক ছাত্রী (১১) ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছে। এ নিয়ে এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে শিশুটির অন্তঃসত্ত্বার বিষয়টি জানা গেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, অন্তঃসত্ত্বা ওই শিশুর বাবা-মা খালাতো ভাই-বোন। শিশুটির বয়স যখন ৩ বছর, ওই সময় বাবা অন্য একজনকে বিয়ে করে ঢাকায় থাকেন। কিছুদিন পর মা অন্যত্র বিয়ে করে চলে যান। সেই থেকে বিধবা দাদির সঙ্গেই থাকে শিশুটি। দাদি স্থানীয় একটি চানাচুর ফ্যাক্টরিতে কাজ করেন। সকালে গিয়ে রাতে বাসায় ফেরেন। বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে শিশুটির সম্পর্কে নানা কালু খাঁর ছেলে জাহিদুল ইসলাম (৪৫) এ ঘটনা ঘটিয়েছে মর্মে থানায় মামলা করা হয়েছে। 

বৃহস্পতিবার ওই শিশু জানায়, অনেক আগে থেকেই তাকে আদর করতেন। বিভিন্ন কিছু কিনে দিতেন। প্রায়ই তার ভ্যানযোগে তাকে স্কুলে আনা-নেওয়া করতেন। ঘটনার দিন স্কুলে যাওয়ার জন্য গোসল করে বাড়ির ভেতর কাপড় পরিবর্তন করছিল সে। বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে ধর্ষক জাহিদুল ইসলাম বাড়ির ভেতর ঢুকে ঘরে গিয়ে কাপড় পরিবর্তন করতে বলে। ঘরে ঢুকতেই পেছন থেকে তাকে জাপটে ধরে মুখে গামছা পেঁচিয়ে ধর্ষণ করেন। বিষয়টি কাউকে জানালে মেরে ফেলার হুমকি দেন তিনি। ফলে ওই ঘটনা কাউকে বলতে সাহস পায়নি সে।

শিশুটির চাচি জানান, ঘটনার পাঁচ মাস পর শিশুটির দৈহিক পরিবর্তন দেখা দেয়। জিজ্ঞেস করলে কোনো উত্তর দেয় না সে। একপর্যায়ে হাসপাতালে পরীক্ষার পর প্রাথমিকভাবে গর্ভে সন্তান থাকার কথা জানতে পারেন তারা। এরপর স্থানীয় একটি ক্লিনিকে নিয়ে আল্ট্রাসনোগ্রাফি করার পর চিকিৎসক বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এখন পরিবারের সবাই চিন্তিত। শিশুর পেটে শিশু। প্রসবের সময় শিশুটি মারা যায় কিনা ভয়ে রয়েছে গোটা পরিবার।

শিশুর দাদি জানান, মেয়েটির পিতা-মাতা দুজনেই পৃথকভাবে বিয়ে করে অন্যত্র থাকেন। ছোট থেকে শিশুটিকে তিনিই লালন পালন করছেন। একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ছে সে। অন্তঃসত্ত্বা হওয়ায় বিদ্যালয়ে যাওয়া এবং পরীক্ষা দেওয়া দীর্ঘদিন বন্ধ রয়েছে।

তিনি আরও জানান, ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর গ্রাম্যসালিশে রফা করতে চেয়েছিলেন ধর্ষক জাহিদুল কিন্তু তা হয়নি। মামলা দায়ের হলেও আসামি গ্রেফতার হয়নি। এখন প্রতিবেশীদের কটুকথা শুনতে হচ্ছে তাদের।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, অন্তঃসত্ত্বা ওই শিশুর নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। আল্ট্রাসনোগ্রাফির রিপোর্ট অনুযায়ী আগামী ৮ সেপ্টেম্বর তার সন্তান প্রসবের ডেট রয়েছে। ছোট্ট মানুষ তাই নরমাল ডেলিভারি করানো সম্ভব নয়। ডেটের ৫-৭ দিন পূর্বেই সিজার করা হবে বলে তিনি জানান।

গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শ্রাবণী রায় জানান, এমন দুঃখজনক ঘটনা গুরুদাসপুরে এই প্রথম। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অন্তঃসত্ত্বা শিশুটির দায়িত্ব নেওয়া হয়েছে।

অফিসার ইনচার্জ ওসি মনোয়ারুজ্জামান বলেন, আসামি পলাতক থাকায় তাকে এখানো গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। তবে অভিযান অব্যাহত আছে।


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]