সিরাজগঞ্জের ৯ উপজেলায় চলতি মৌসুমে সোনালী আঁশ পাটের ভালো ফলন হয়েছে। ইতোমধ্যে পাট কাটা, জাগ দেওয়া ও ধোয়ার পাশাপাশি নতুন পাট হাট-বাজারে উঠতে শুরু করেছে। প্রতিবারের মতো এবারও পাটের পাশাপাশি এ মৌসুমে পাট খড়ি বিক্রি করে কৃষকেরা বাড়তি অর্থ উপার্জন করে চলেছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কার্যালয় জানায়, চলতি বছরে সিরাজগঞ্জের তাড়াশে ৭৪৫ হেক্টর, কাজিপুরে পাঁচ হাজার ৬৪৫ হেক্টর, সদর উপজেলায় তিন হাজার ৩৫০ হেক্টর, উল্লাপাড়ায় এক হাজার ৬২০ হেক্টর, বেলকুচিতে এক হাজার ৯৬০ হেক্টর, শাহজাদপুরে ৪৩৫ হেক্টর, রায়গঞ্জে ৮৯২ হেক্টর, চৌহালীতে ৯২০ হেক্টর এবং কামারখন্দে এক হাজার ৭৩১ হেক্টর জমিতে পাট চাষাবাদ হয়েছে। জেলায় মোট ১৭ হাজার ২৯৮ হেক্টর জমি থেকে পাট উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩৬ হাজার ২০৯ মেট্টিক টন।
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার ছোন গাছা গ্রামের পাট চাষী মো.আব্দুল ওয়াহাব জানান, এবার তিনি পাঁচ বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছিলেন। জমির পাট থেকে যে পাট খড়ি পেয়েছেন তা ভালোভাবে শুকিয়ে পরিষ্কার করে বিক্রি করতে পারলে তা থেকে ২০-২৫ হাজার টাকা বাড়তি আয় হবে তার।
তিনি জানান, পাট খড়ি সরাসরি চারকল বোর্ড ফ্যাক্টরিতে দিতে পারলে আরও বেশি লাভবান হওয়া যেত। এবার পাটের দামও ভালো। পাশাপাশি প্রতি আঁটি (হাতা) পাট খড়ি চার টাকা থেকে পাঁচ টাকা বিক্রি হচ্ছে। আর ১০০ আঁটি পাটখড়ি ৪০০ টাকা থেকে সাড়ে ৪০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এতে করে কৃষকেরা জ্বালানি চাহিদা মিটিয়ে বাড়তি অর্থ ঘরে তুলতে পারছেন।
তাড়াশ উপজেলা কৃষি কার্যালয় জানায়, এ বছর উপজেলার এলাকার বিভিন্ন স্থানে প্রায় ৭৪৫ হেক্টর জমিতে তোষা, মেছতা ও কেনাফ জাতের পাটের চাষাবাদ করেছে কৃষকেরা। তবে মেছতা জাতের পাট বেশি চাষ হয়েছে। কৃষকেরা পাট ছাড়াও পাট খড়ি বিক্রি করে বাড়তি আয় করছেন।
তাড়াশ উপজেলার স্থানীয় ব্যবসায়ীরা গ্রামে গ্রামে কৃষকের বাড়ি বাড়ি থেকে পাট খড়ি কিনে শহরে বিক্রি করার জন্য নিয়ে যাচ্ছেন। সাধারণত ওই পাটখড়ির পাবনার বেড়া, সাথিয়া, আতাইকুলা উপজেলায় বেশ চাহিদা রয়েছে।
এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা বাবুল কুমার সূত্রধর বলেন, চলতি বছর সিরাজগঞ্জ মোট ১৭ হাজার ২৯৮ হেক্টর জমি থেকে পাট উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩৬ হাজার ২০৯ বেল। ফলনও বেশ ভালো হয়েছে।
তিনি বলেন, পাট খড়ি জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার ছাড়াও পার্টিক্যাল বোর্ড ও পাট খড়ি পুড়ে এর ছাই কম্পিউটরের কালি হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে । ফলে জেলায় পাটের পাশাপাশি পাট খড়ির দাম ও এবার ভালো। যে কারণে কৃষকেরা পাট খড়ি বিক্রি করে বেশ লাভবান হচ্ছেন।