সুনামগঞ্জের তাহিরপুর সীমান্তে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে পাচাঁরকৃত অবৈধ মালামাল থেকে চাঁদা উত্তোলন করা নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনাসহ চোরাই কয়লা আটক করা হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে- গতকাল শুক্রবার (১৮ আগস্ট) রাত ১২টার পর থেকে উপজেলার চারাগাঁও সীমান্তের জঙ্গলবাড়ি, রন্দু ছড়া, লামাকাটা, কলাগাঁও নদী, বাঁশতলা ও বালিয়াঘাট সীমান্তের লাকমা, লালঘাট এলাকা দিয়ে ভারত থেকে একযোগে কয়লা ও চুনাপাথরসহ হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে বাংলা কয়লা পাচাঁর শুরু করে চোরাকারবারীরা। এমতাবস্থায় রাত ১টায় কলাগাঁও নামকস্থানে চোরাচালান মামলার আসামী শামীম মিয়া তারই সহযোগী সিদ্দিক মিয়া, রোকন মিয়াসহ আরো অনেকের কাছ থেকে ১০হাজার টাকা করে প্রতিনৌকা থেকে চাঁদা উত্তোলন করতে গিয়ে দুইগ্রুপের মাঝে হাতাহাতি হয়। পরে উপস্থিত চোরাকারবারীরা নিজেরাই এঘটনার সমাধান করে। কিন্তু এঘটনার কিছুক্ষণ পরে শামিম মিয়া তার লোকজন নিয়ে সিদ্দিক মিয়ার সাথে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এই সংঘর্ষে ৭জন আহত হয়। তাদেরকে স্থানীয় ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এদিকে রাত ২টায় সংঘর্ষের ঘটনাস্থলের পাশের জঙ্গলবাড়ি থেকে ৩০বস্তা চোরাই কয়লা উদ্ধার করেছে বিজিবি। তবে বালিয়াঘাট ও চারাগাঁও সীমান্ত দিয়ে আজ শনিবার (১৯ আগস্ট) সকাল ৬টা পর্যন্ত শতাধিক ইঞ্জিনের নৌকা বোঝাই করে প্রায় ২ হাজার মেঃটন কয়লা ও চুনাপাথরসহ বিপুল পরিমান চিনি, সুপারী, মাদকদ্রব্য পাচাঁর করা হয়েছে বলে জানাগেছে।
এব্যাপারে কয়লা ও চুনাপাথর আমদানী কারক আবুল বাশার নয়নসহ আরো অনেকেই বলেন- দুই সীমান্তে একাধিক চোরাচালান মামলার আসামী জঙ্গলবাড়ি গ্রামের আইনাল মিয়া, লেংড়া জামাল, হযরত আলী, কলাগাঁও গ্রামের রফ মিয়া, সাইফুল মিয়া, বাঁশতলা গ্রামের আনোয়ার হোসেন বাবলু, লালঘাট গ্রামের রুবেল মিয়া, খোকন মিয়া, ইয়াবা কালাম মিয়া, লাকমা গ্রামের রতন মহলদার, কামরুল মিয়া, দুধের আউটা গ্রামের জিয়াউর রহমান জিয়া, মনির মিয়া ও নয়াবন্দ গ্রামের নেকবর আলীগং প্রতিদিন ভারত থেকে অবৈধ ভাবে কয়লা ও চুনাপাথর পাচাঁর করে ইঞ্জিনের নৌকায় বোঝাই করে নেত্রকোনা জেলার কলমাকান্দা বাসস্টেশনের পূর্ব দিকে অবস্থিত ডিপুতে নিয়ে বিক্রি করে। এরপর তারাই সোর্স পরিচয় দিয়ে পাচাঁরকৃত প্রতিনৌকা (২০মেঃটন কয়লা ও চুনাপাথর) থেকে পুলিশ, বিজিবি ও সাংবাদিকদের নাম ভাংগিয়ে ২৫হাজার টাকা করে চাঁদা নেয়। রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে চোরাচালান ও চাঁদাবাজি করে অনেকেই হয়েগেছে কোটিপতি। চারাগাঁও শুল্কস্টেশনের বৈধ ব্যবসায়ী ফজলু সরদার বলেন- চোরাচালান বন্ধের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে কার্যকর কোন পদক্ষেপ না নেওয়ার কারণে আমরা বৈধ ব্যবসায়ীরা মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ্য হচ্ছি, অন্যদিকে লাখলাখ টাকা রাজস্ব থেকে বি ত হচ্ছে সরকার।
এব্যাপারে সুনামগঞ্জ ২৮ ব্যাটালিয়নের চারাগাঁও বিজিবি ক্যাম্প কমান্ডার নায়েক সুবেদার তাজুল ইসলাম বলেন-আমি এই ক্যাম্পে নতুন এসেছি। চাঁদা নিয়ে সংঘর্ষের যে ঘটনা ঘটেছে তার ব্যাপারে খোঁজ নেব। তবে কয়লা চোরাচালান মামলার আসামী আইনাল মিয়া আমার কাছে এসেছিল, আমি তাকে শাসিয়ে বিদায় করে দিয়েছি। সীমান্ত চোরাচালানের সাথে জড়িতদের অবৈধ মালামালসহ হাতেনাতে গ্রেফতারের জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে