ইউক্রেনের কৃষ্ণসাগর তীরে ২৯ জন নাবিক সহ বিমান হামলার শিকার হয় ‘এমভি বাংলার সমৃদ্ধি’ নামের বাংলাদেশি পতাকাবাহী একটি জাহাজ। এ হামলায় মো. হাদিসুর রহমান একজন বাংলাদেশি নাবিক মারা যান। হামলার পর থেকেই উদ্ধারের আকুতি জানিয়ে বেশ কয়েকটি ভিডিও বার্তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করেন জাহাজের নাবিকেরা।
ইতোমধ্যে ফেসবুকে নাবিকদের আকুতির বেশ কয়েকটি ভিডিও ভাইরাল হয়। এমভি বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজের তুলি নামে এক নারী ডেক ক্যাডেট তার পরিচয় দিয়ে বলেন, আমাদের জাহাজে বোম্বিং হয়েছে, এতে একজন মারা গেছেন। আমরা খুব বিপদে আছি আমাদের সাহায্য করুন।
জাহাজটির এক নাবিক আরেকটি ভিডিও নিজের ফেসবুকে পোস্ট করেছেন। তাঁর নাম আসিফুল ইসলাম। ৩১ সেকেন্ডের এ ভিডিওতে তিনি বলেন, ‘আমি আসিফুল ইসলাম আসিফ।...আমরা নাকি পোল্যান্ডে চলে গেছি নিরাপদভাবে। এটা ভুল নিউজ। আমাদের প্লিজ এখান থেকে উদ্ধারের ব্যবস্থা করেন।’
মৌ নামে আরেক নারী ইঞ্জিন ক্যাডেট বলেন, ‘আমরা সবাই এখান থেকে বের হতে পারছি না। আমরা এখানে থাকতে চাচ্ছি না আপনারা প্লিজ আমাদের এখান থেকে বের করার ব্যবস্থা করেন’।
২৭ সেকেন্ডের এই ভিডিওতে বাংলাদেশি নাবিককে বলতে শোনা যায়, ‘আমি বাংলার সমৃদ্ধির সেকেন্ড ইঞ্জিনিয়ার। আমাদের জাহাজে একটু আগে রকেট হামলা হয়েছে। একজন অলরেডি ডেড। আমাদের পাওয়ার সাপ্লাই নেই। ইমার্জেন্সি জেনারেটরে পাওয়ার সাপ্লাই চলছে। আমরা মৃত্যুর মুখে সম্মুখীন। আমাদের এখনো উদ্ধার করা হয়নি। দয়া করে আপনারা আমাদের বাঁচান। আমরা সবাই আছি এখানে।
এমভি বাংলার সমৃদ্ধি বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের জাহাজ। শিপিং কর্পোরেশন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি সরকারি সংস্থা। সিরামিকের কাঁচামাল ‘ক্লে’ পরিবহনের জন্য জাহাজটি তুরস্ক থেকে ২৩ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের অলিভিয়া বন্দরের জলসীমায় পৌঁছায় এমভি বাংলার সমৃদ্ধি। সেখান থেকে কার্গো নিয়ে ইতালি যাওয়ার কথা ছিল। তবে যুদ্ধাবস্থা এড়াতে জাহাজটিকে সেখানে পৌঁছানোর পরই পণ্য বোঝাই না করে দ্রুত ফেরত আসার জন্য নির্দেশনা দেয় শিপিং কর্পোরেশন। শেষ মুহূর্তে বন্দরের পাইলট না পাওয়ায় ইউক্রেনের জলসীমা থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি বাংলাদেশের এই জাহাজ। এরপর যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে বন্দরের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
রাজশাহীর সময় /এএইচ