শান্তিরক্ষায় কর্মরত বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের প্রশংসা করলেন জাতিসংঘ মহাসচিব


বাংলা প্রেস, নিউ ইয়র্ক: , আপডেট করা হয়েছে : 03-03-2022

শান্তিরক্ষায় কর্মরত বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের প্রশংসা করলেন জাতিসংঘ মহাসচিব

জাতিসংঘে শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের ভবিষ্যৎ চাহিদা পূরণে বাংলাদেশ আরও অধিকহারে শান্তিরক্ষী সরবরাহ অব্যাহত রাখবে মর্মে প্রত্যাশার কথা জানান জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। গত মঙ্গলবার (১লা মার্চ) বিকেলে জাতিসংঘ সদর দফতরে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন এর সঙ্গে সাক্ষাৎকালে এ প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি। এ সময় মহাসচিব শান্তিরক্ষা মিশনে নিয়োজিত বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের অবদানের ভূয়সী প্রশংসা করেন। এ তথ্য জানিয়েছে জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশ মিশন। মার্কিন সংবাদমাধ্যম বাংলা প্রেস এ খবর জানিয়েছে।

তারা রোহিঙ্গা সংকট ও এর সম্ভাব্য উত্তরণের উপায় নিয়ে আলোচনা করেন। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের এ সকল নাগরিকদের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে মহাসচিবকে অবহিত করেন এবং সকল রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনে জাতিসংঘের সহায়তা কামনা করেন। গুতেরেজ ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশের জনগণ ও সরকার যে উদারতার পরিচয় দিয়েছে তার ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের নিজ ভূমি মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে জাতিসংঘের পূর্ণসমর্থনের কথা আবারও উল্লেখ করেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশের অসামান্য আর্থসামাজিক উন্নয়নের প্রশংসা করেন গুতেরেজ। তিনি আশা প্রকাশ করেন, সামনের বছরগুলোতে বিশেষ করে এসডিজি অর্জনের ক্ষেত্রে আরও সাফল্য অর্জন করবে বাংলাদেশ।

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের উচ্চ পর্যায়ের পদে এবং বিশ্বব্যাপী জাতিসংঘের বিভিন্ন রাজনৈতিক মিশনে মহাসচিবের বিশেষ প্রতিনিধি (এসআরএসজি) পদে আরও বেশি বাংলাদেশি নাগরিক নিয়োগের জন্য মহাসচিব গুতেরেজকে অনুরোধ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন। ইউক্রেন সংকটজনিত কারণে ব্যস্ত সময়সূচি থাকা সত্ত্বেও এ বৈঠকের সুযোগ দেওয়ার জন্য মহাসচিবকে ধন্যবাদ জানান বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

এর আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বর্তমানে নিউ ইয়র্কে সফররত মিয়ানমার বিষয়ক জাতিসংঘ মহাসচিবের নবনিযুক্ত বিশেষ দূত ড. নোলিন হাইজারের সঙ্গে বৈঠক করেন।

বৈঠকে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধানের লক্ষ্যে আঞ্চলিক দেশগুলিসহ সকল অংশীজনদের সাথে নিবিড় যোগাযোগ রক্ষা করার জন্য বিশেষ দূতকে অনুরোধ জানান। বিশেষ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রাখাইন রাজ্যে এমন একটি অনুকূল পরিবেশ তৈরি করতে হবে যাতে রোহিঙ্গারা নিরাপদে, নিরাপত্তার সাথে এবং মর্যাদাপূর্ণভাবে তাদের নিজভূমিতে ফিরে যেতে পারে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কোভিড-এর বিস্তার রোধ এবং রোহিঙ্গা শিশুদের মিয়ানমারের কারিকুলাম-ভিত্তিক শিক্ষা প্রদান বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার গৃহীত পদক্ষেপসমূহের কথা বিশেষদূতকে অবহিত করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

ভাষান চরে একলক্ষ রোহিঙ্গাদের জন্য নতুন আবাসন তৈরির কথা উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সেখানে স্থানান্তরিত রোহিঙ্গারা জীবিকা নির্বাহের কাজে নিয়োজিত হওয়ার সুযোগ পাবে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, স্বদেশে ফেরার তেমন কোনো আশা নেই দেখে রোহিঙ্গারা ক্রমশ: অবৈধ ও অপরাধমূলক কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ছে। তিনি মিস হেইজারকে যতটা দ্রুত সম্ভব কক্সবাজার ক্যাম্প ও ভাষান চর পরিদর্শনের আমন্ত্রণ জানান।

বিশেষ দূত মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তচ্যুত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং তার সহানুভূতি ও নেতৃত্বের প্রশংসা করেন। বিশেষ দূত বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুটি তাঁর সর্বোচ্চ এজেন্ডা এবং যত দ্রুত সম্ভব এই সংকটের একটি টেকসই সমাধান খুঁজে বের করার জন্য তিনি আঞ্চলিক দেশসমূহ, আন্তর্জাতিক সংস্থা, রোহিঙ্গা নেতা এবং মিয়ানমারের কর্তৃপক্ষসহ সকল অংশীজনদের সাথে নিবিড়ভাবে জড়িত থাকবেন।

উভয় বৈঠকে অন্যান্যদের সাথে উপস্থিত ছিলেন জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ড. মোঃ মনোয়ার হোসেন।

রাজশাহীর সময় / জি আর


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]