যুগশ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিস হজরত শাহ ওয়ালিউল্লাহ দেহলবি রাহমাতুল্লাহি আলাইহি হাদিসের একটি ছোট্ট আমলের ৬ টি উপকারিতার কথা বর্ণনা করেছেন। এ উপমহাদেশে তিনি ছিলেন ইলমে হাদিসের বাস্তব নমুনা। আমলটি ছোট এবং সবার জন্যই সহজ। কী সেই আমল?
হাদিসে ঘোষিত আমলটি তুলে ধরার আগে হজরত শাহ ওয়ালি উল্লাহ মুহাদ্দিস দেহলবি রাহমাতুল্লাহি আলাইহির বর্ণিত উপকারিতাগুলো তুলে ধরা হলো-
১. মানুষ মহান মর্যাদার অধিকারী হয়।
২. মানুষের আত্মা পশুত্বের আচরণ ও প্রভাবমুক্ত হয়।
৩. তেজোদ্বীপ্ত ঈমানি আলোয় আলোকিত হয় মানুষ।
৪. মানুষের গোনাহ মাফ হয়।
৫. শয়তানের প্রভাব থেকে মুক্ত থাকে মানুষ।
৬. এমনকি কবরের আজাব থেকেও মুক্তি পাবে মানুষ।
আমল: এ আমলটি হচ্ছে পবিত্রতা অর্জনের জন্য সব সময় ওজু অবস্থায় থাকার আমল। হাদিসে পাকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উদাহরণসহ চমৎকার একটি হাদিস বর্ণনা করেছেন। তাহলো-
হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘কোনো মুসলিম বান্দা যখন ওজুর সময় মুখমণ্ডল ধোয়, তখন তার চোখের দ্বারা সৃষ্ট গোনাহ পানির সঙ্গে বা পানির শেষ বিন্দুর সঙ্গে বের হয়ে যায়।
যখন সে (বান্দা) হাত ধোয় তখন তার দুই হাতের স্পর্শের মাধ্যমে অর্জিত সব গোনাহ পানির সঙ্গে অথবা পানির শেষ বিন্দুর সঙ্গে বের হয়ে যায়।
অতঃপর ওজুকারী যখন দুই পা ধোয় তখন তাঁর দুই পা দিয়ে হাঁটার মাধ্যমে অর্জিত গোনাহসমূহ ওজুর পানির সঙ্গে অথবা পানির শেষ বিন্দুর সঙ্গে বের হয়ে যায়। এভাবে সে যাবতীয় গোনাহ থেকে মুক্ত হয়ে যায়। (মুসলিম, তিরমিজি, বাইহাকি)
পরিশেষে ওজুর গুরুত্বপূর্ণ ছোট্ট একটি হাদিস দিয়ে শেষ করতে চাই। যা হজরত ওসমান ইবনে আফফান রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘ওজু করার সময় কেউ যদি উত্তমরূপে ওজু করে তাহলে তার শরীরের সব গোনাহ ঝরে যায়। এমনকি তার নখের নীচের গোনাহও বের হয়ে যায়। (মুসলিম, মুসনাদে আহমাদ)
সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, ওজুর নিয়মিত আমল করা। সব সময় পবিত্রতার নিয়তে উল্লেখিত মর্যাদা পেতে হাদিসের নির্দেশনা মোতাবেক ওজু অবস্থায় থাকা।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে জীবনের প্রতি মুহূর্ত ওজু অবস্থায় অতিবাহিত করার মাধ্যমে দুনিয়া ও পরকালের সর্বোত্তম মর্যাদা ও গোনাহমুক্ত জীবনের অধিকারী হওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।