নেক আমলের পুরস্কার কী?


ধর্ম ডেস্ক , আপডেট করা হয়েছে : 09-08-2023

নেক আমলের পুরস্কার কী?

আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যা কিছু আকাশসমূহে রয়েছে এবং যা কিছু জমিনে আছে, সব আল্লাহরই। যদি তোমরা মনের কথা প্রকাশ কর কিংবা গোপন কর, আল্লাহ তোমাদের কাছ থেকে তার হিসাব নেবেন। অতপর যাকে ইচ্ছা তিনি ক্ষমা করবেন এবং যাকে ইচ্ছা তিনি শাস্তি দেবেন। আল্লাহ সর্ব শক্তিমান।’ (সুরা বাকারা: আয়াত ২৮৪)

নেক আমলের কল্যাণ- আয়াত থেকে সুস্পষ্ট যে, প্রত্যেককেই তার কাজেরই হিসাব দিতে হবে। তা গোপন হোক কিংবা প্রকাশ্য। নেক কাজের জন্য পুরস্কার ও অন্যায় কৃতকর্মের জন্য ভোগ করতে হবে শাস্তি। তবে ক্ষমা বা মুক্তি থাকবে আল্লাহর ইচ্ছাধীন। কোরআনের বর্ণনায় আরও এসেছে-

‘যে ভালো কাজ করে, সে নিজের উপকারের জন্যেই করে, আর যে অসৎ কাজ করে, তার প্রতিফলও সে-ই ভোগ করবে। আপনার পালনকর্তা বান্দাদের প্রতি মোটেই জুলুম করেন না।’ (সুরা হা-মিম সাজদা : আয়াত ৪৬)

পরকালে বিচারের সময় এসব ভালো ও মন্দ কাজের ফয়সালা করা হবে। দুনিয়াতে যারা নেক আমল করবে, তাদের জন্য থাকবে জান্নাত। আর যারা অন্যায়, অপরাধ, দুর্নীতি ও অসৎকর্মে নিজকে নিয়োজিত রাখবে এবং পাপাচারে লিপ্ত থাকবে, প্রতিফলস্বরূপ তিনি তাদের কঠিন শাস্তি দেবেন।

নেক আমলের পুরস্কার- ভালো কাজের মধ্যে যারা নিজেকে সমর্পণ করবে এবং ইসলামের বিধি-বিধান অনুযায়ী ইহকালীন জীবন অতিবাহিত করবে, আল্লাহ তাদের সুখ-শান্তিময় বেহেশত প্রদান করবেন। শুধু তাই নয়, সেসব নেক আমলকারীকে সম্মানজনক পুরস্কার প্রদান করবেন। এসব নেক আমল ও পুরস্কার সম্পর্কে কোরআনুল কারিমে একাধিক আয়াতে আল্লাহ তাআলা তা সুস্পষ্ট করেছেন। তাহলো-

১. اَلۡیَوۡمَ تُجۡزٰی کُلُّ نَفۡسٍۭ بِمَا کَسَبَتۡ ؕ لَا ظُلۡمَ الۡیَوۡمَ ؕ اِنَّ اللّٰهَ سَرِیۡعُ الۡحِسَابِ 

‘আজ প্রত্যেককে তার কৃতকর্মের প্রতিফল দেওয়া হবে, আজ কারও প্রতি জুলুম করা হবে না। আল্লাহ হিসাব গ্রহণে তৎপর।’ (সুরা আল-মুমিন : আয়াত ১৭)

২. وَ لِکُلٍّ دَرَجٰتٌ مِّمَّا عَمِلُوۡا ۚ وَ لِیُوَفِّیَهُمۡ اَعۡمَالَهُمۡ وَ هُمۡ لَا یُظۡلَمُوۡنَ

‘প্রত্যেকের মর্যাদা তার কর্মানুযায়ী, এটা এ জন্য যে আল্লাহ প্রত্যেকের কৃতকর্মের পূর্ণ প্রতিফল দেবেন এবং তাদের প্রতি অবিচার করা হবে না।’ (সুরা আল আহ্কাফ : আয়াত ১৯)

৩. فَمَنۡ یَّعۡمَلۡ مِثۡقَالَ ذَرَّۃٍ خَیۡرًا یَّرَهٗ -  وَ مَنۡ یَّعۡمَلۡ مِثۡقَالَ ذَرَّۃٍ شَرًّا یَّرَهٗ

‘কেউ অণু পরিমাণ সৎকর্ম করলে তা দেখবে এবং কেউ অণু পরিমাণ অসৎকর্ম করলে তাও দেখতে পাবে।’ (সুরা আজ-জিলজাল : আয়াত ৭-৮)

দুনিয়ায় নেক আমলকারীদের পুরস্কার হলো জান্নাত। এ প্রসঙ্গে কোরআনুল কারিমে মহান আল্লাহ তাআলা এভাবে সুসংবাদ ঘোষণা করেছেন-

৪.  اِنَّ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَ عَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ لَهُمۡ جَنّٰتُ النَّعِیۡمِ - خٰلِدِیۡنَ فِیۡهَا ؕ وَعۡدَ اللّٰهِ حَقًّا ؕ وَ هُوَ الۡعَزِیۡزُ الۡحَکِیۡمُ

‘যারা ঈমান আনে ও নেক কাজ করে, তাদের জন্য আছে নেয়ামতে ভরা জান্নাত, সেখানে তারা চিরস্থায়ী হবে। আল্লাহর প্রতিশ্রুতি সত্য। তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।’ (সুরা লোকমান : আয়াত ৮-৯)

৫. اِنَّ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَ عَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ کَانَتۡ لَهُمۡ جَنّٰتُ الۡفِرۡدَوۡسِ نُزُلًا

‌‘নিশ্চয়ই যারা ঈমান এনেছে এবং নেক আমল করেছে, তাদের মেহমানদারির জন্য রয়েছে জান্নাতুল ফেরদাউস।’ (সুরা কাহফ : আয়াত ১০৭)

এ জন্য দিয়েছেন নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মানবজাতিকে সব অপকর্ম ও অন্যায় থেকে বিরত থাকার পাশাপাশি অন্যায় ও অত্যাচার প্রতিরোধের শিক্ষা দিয়েছেন এভাবে-

‘তোমাদের মধ্যে কেউ যদি কাউকে অন্যায় কাজ করতে দেখে, তাহলে সে যেন তার হাত (শক্তি) দ্বারা তা প্রতিহত করে; যদি সে এতে অক্ষম হয়, তবে যেন মুখ দ্বারা নিষেধ করে, যদি সে এতেও অপারগ হয়, তবে সে যেন অন্তর দ্বারা ঘৃণা পোষণ করে অথ্যাৎ (নিরবে অন্যায় বন্ধের প্রচেষ্টা চালিয়ে যায়)।’ (মুসলিম)

সুতরাং এমনভাবে জীবন অতিবাহিত করতে হবে যেন কারো দ্বারা কোনোরূপ অন্যায় কাজ না হয়। হাত ও মুখ দ্বারা কারও ক্ষতি হোক এমন কোনো কাজ যেন না করা হয়। সেই সঙ্গে যে কারও সম্পর্কে যে কোনো ধরণের মিথ্যা অভিযোগ ছড়িয়ে সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা থেকেও নিজেদের বাঁচিয়ে রাখতে হবে। কেননা প্রতিটি মানুষকেই তার কর্মের জন্য আল্লাহর কাছে জবাবদিহি করতে হবে।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর সবাইকে বেশি বেশি নেক আমল করার তাওফিক দান করুন। অন্যায় কাজ থেকে বিরত থাকার তাওফিক দান করুন। নেক আমলের পুরস্কার সুনিশ্চিত জান্নাত পাওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]