চলছে বর্ষাকাল। আর এ সময়ই বাড়ে ডেঙ্গুর প্রকোপ। সঙ্গে ঋতু পরিবর্তনের কারণে বাড়ে ভাইরাস জ্বরের প্রবণতাও। তাই এ সময়ে জ্বর হলেই আতঙ্কিত না হয়ে প্রথমে জানার চেষ্টা করুন বা পরীক্ষা করুন যে এটি ডেঙ্গু না সাধারণ ভাইরাস জ্বর। ভাইরাস ও ডেঙ্গু জ্বরের মধ্যে সূক্ষ্ম পার্থক্য রয়েছে।
তাই ডেঙ্গুর উপসর্গগুলো সম্পর্কে জেনে রাখা প্রয়োজন। ডেঙ্গু জ্বরের তীব্রতা অনেক বেশি হয়। ডেঙ্গুতে শরীরের তাপমাত্রা প্রায় ১০৪ ফারেনহাইট ওঠে। এই জ্বর ২ থেকে ৭ দিন পর্যন্ত স্থায়ী হয়। জ্বর ছাড়াও মাথাব্যথা, গা-হাত-পায়ে ব্যথা, গাঁটে ব্যথা, ডায়রিয়া ও বমি বমি ভাব দেখা দেয়। শরীর অত্যন্ত দুর্বল হয়ে পড়ে। পাশাপাশি গায়ে র্যাশ উঠতে শুরু করে। এছাড়া মাড়ি ও নাক দিয়ে রক্তপাত, গলাব্যথা ইত্যাদি উপসর্গও দেখা দেয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ডেঙ্গু রোগীকে বাড়িতে রেখেই চিকিত্সা করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। ডেঙ্গুর শক সিনড্রোম তৈরি হলে শরীর ডিহাইড্রেটেড হয়ে যায়। তখন পালস রেট বেড়ে যায় এবং রক্তচাপ কমে যায়। ফলে শরীর ঠান্ডা হয়ে যায় এবং দেহে অস্বস্তি তৈরি হয়। এমন অবস্থা তৈরি হলে রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে। ডেঙ্গু জ্বরের জন্য নির্ধারিত কোন ওষুধ নেই। তবে ডাক্তাররা প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ খাওয়ার পরামর্শ দেন। ডেঙ্গু হলে শরীরকে জলশূন্য হতে দেয়া যাবে না। তাই প্রচুর পরিমাণে জল পান করুন। পাশাপাশি তরল জাতীয় খাবার বেশি পরিমাণে গ্রহণ করুন। যেমন- ডাবের জল, ফলের রস, স্যুপ, চিকেন সুপ খেতে পারেন।
ভাইরাস জ্বরের লক্ষণ : মৌসুমি ইনফ্লুয়েঞ্জা বা ফ্লু জ্বরে নাক দিয়ে জল পড়া ও হাঁচি-কাশি হবে। কাশি (সাধারণত শুষ্ক), মাথাব্যথা, পেশি এবং জয়েন্টে ব্যথা, অস্বস্তিবোধ, গলাব্যথা হতে পরে। ফ্লু সংক্রমণের ২ থেকে ৪ দিন পর উপসর্গ দেখা দেয়।
ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ : ডেঙ্গু সংক্রমণের প্রাথমিক পর্যায়ে অন্য কোনো লক্ষণ বা উপসর্গ ছাড়া শুধু জ্বর হয়, তখন সেগুলোকে ফ্লু ভেবে ভুল হতে পারে। ডেঙ্গু সাধারণত সংক্রমিত মশা কামড়ানোর চার থেকে ১০ দিন পর শুরু হয়। ডেঙ্গুতে খুব উচ্চমাত্রার জ্বর হয় অর্থাত্ তাপমাত্রা পৌঁছায় ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইটে। ডেঙ্গু জ্বরের উপসর্গগুলোর মধ্যে রয়েছে: মাথাব্যথা, পেশি, হাড় বা গিরায় ব্যথা, বমি বমি ভাব, চোখের পেছনে ব্যথা, র্যাশ ইত্যাদি।