কয়েকদিনের ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে পাহাড়। নগরীর বেশ কয়েকটি পাহাড়ে ধসের শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এমন অবস্থায় পাহাড়গুলোতে সচেতনতামূলক মাইকিং কার্যক্রম পরিচালনা করেছে জেলা প্রশাসন। নিরাপদে সরে যেতে বলা হচ্ছে লোকজনকে। খোলা হয়েছে ১৯টি আশ্রয়কেন্দ্র। সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে নগরীর মতিঝর্ণা, আকবরশাহ’র বিজয় নগর ও ঝিলা এলাকা। এ তিন পাহাড়ি এলাকা থেকে গতকাল রাতে তিনশ পরিবারকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে কয়েকটি পরিবার আশ্রয়কেন্দ্রে গেলেও বাকিরা চলে যায় আত্মীয়–স্বজনের কাছে।
জেলা প্রশাসনসূত্র জানায়, ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে শনিবার মতিঝর্ণা এলাকায় বাকলিয়া সার্কেলের এসিল্যান্ড এস এম এন জামিউল হিকমা, আকবরশাহ থানাধীন বিজয় নগর ও ঝিল এলাকায় কাট্টলী সার্কেলের এসিল্যান্ড ওমর ফারুক অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় তারা লোকজনের উদ্দেশে মাইকিং করেন। পাহাড় ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্র বা নিরাপদে সরে যেতে নির্দেশ দেয়া হয় মাইকিংয়ে। মতিঝর্ণা থেকে ৫০ পরিবার এবং বিজয় নগর ও ঝিল এলাকা থেকে ২৫০ পরিবারকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলেও সূত্র জানায়। গতকাল সন্ধ্যার পর জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামানও আকবরশাহ’র বিজয় নগর ও ঝিল এলাকা পরিদর্শন করেছেন। তিনিও লোকজনকে নিরাপদে সরে যেতে বলেছেন। এসময় তিনি ঝুঁকি নিয়ে কাউকে পাহাড়ে থাকতে দেওয়া হবে না বলেও জানিয়ে দেন।
কাট্টলী সার্কেলের এসিল্যান্ড ওমর ফারুক বলেন, গত দুই দিন ধরে প্রবল বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এর কারণে নগরীর পাহাড়গুলোতে ঝুঁকি দেখা দিয়েছে। পাহাড় ধসের শঙ্কা রয়েছে। ধসের কারণে কারো যাতে ক্ষতি না হয় এ জন্য সর্বসাধারণের উদ্দেশে সচেতনতামূলক মাইকিং কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছে। পাহাড় ছেড়ে দিয়ে নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে চলে যেতে মাইকিংয়ে বলেছি। তিনি বলেন, শনিবার সন্ধ্যার পর জেলা প্রশাসক আকবরশাহ এলাকার বিজয় নগর ও ঝিল এলাকার পাহাড়গুলোতে পরিদর্শন করেন। এ সময় অভিযান চালিয়ে ২৫০টি পরিবারকে দুটি আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠানো হয়।
জেলা প্রশাসনসূত্র জানায়, চলমান ভারী বৃষ্টিপাতে মানুষের জানমাল রক্ষার্থে জেলা প্রশাসক নগরীর ছয়জন এসিল্যান্ডকে দায়িত্ব ভাগ করে দিয়েছেন। প্রতিদিন মাইকিংয়ের মাধ্যমে ঝুঁকিপূর্ণ স্থান থেকে লোকজনকে সরে যেতে নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে।
জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, পাহাড়ে যাতে মানুষের আর প্রাণ না দিতে হয় সে জন্যে আমরা কাজ করছি। মাইকিং থেকে শুরু করে সকলকে সচেতন করার লক্ষে প্রতিদিন জেলা প্রশাসনের টিম কাজ করছে। আজকে (গতকাল) আমি নিজেও ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড় পরিদর্শন করেছি। বিজয় নগর ও ঝিল এলাকা থেকে ২৫০ পরিবারকে সরিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়েছি। তাদের জন্যে শুকনো খাবার থেকে শুরু করে প্রতিবেলার খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। চট্টগ্রামের সকল পাহাড় থেকে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসরত পরিবারকে ১৯টি আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করার জন্যে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী গত কয়েকদিন আগে বেলতলীঘোনায় পাহাড়ের পাদদেশ থেকে বসবাসরতদের ঝুঁকিপূর্ণ স্থান থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। যারা পাহাড় কাটার সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে।