রেমিট্যান্সের খরায় চমক দেখাল রপ্তানি আয়


অনলাইন ডেস্ক , আপডেট করা হয়েছে : 04-08-2023

রেমিট্যান্সের খরায় চমক দেখাল রপ্তানি আয়

রেমিট্যান্সের নেতিবাচক ধারার মধ্যে সুখবর দিয়েছেন দেশের রপ্তানিকারকরা। বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দাভাবের মধ্যেও চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে পণ্য রপ্তানি থেকে ৪৫৯ কোটি ২৯ লাখ ২০ হাজার (৪.৫৯ বিলিয়ন) ডলার আয় করেছেন দেশের রপ্তানিকারকরা। এই অঙ্ক গত অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ের চেয়ে ১৫.২৬ শতাংশ বেশি। আর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি আয় এসেছে ২.৫০ শতাংশ।

 

জুলাইয়ে লক্ষ্যমাত্রা ধরা ছিল ৪৪৮ কোটি ১০ লাখ (৪.৪৮ বিলিয়ন) ডলার। তবে গত অর্থবছরের শেষ মাস জুনের চেয়ে পণ্য রপ্তানি থেকে আয় কমেছে ৮.৬০ শতাংশ। গতকাল বুধবার প্রকাশিত রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) প্রতিবেদনে এ চিত্র উঠে এসেছে।

ইপিবির তথ্য মতে, চলতি বছরের জুলাই মাসে ৪৫৯ কোটি ২৯ লাখ মার্কিন ডলার সমপরিমাণ বাংলাদেশের তৈরি পণ্য বিশ্ববাজারে রপ্তানি হয়েছে।

২০২২-২৩ অর্থবছরের জুলাই মাসে রপ্তানি হয়েছিল ৩৯৮ কোটি ৪৮ লাখ ডলার সমপরিমাণ পণ্য। সে হিসাবে গত বছরের তুলনায় ৬০ কোটি ৮১ লাখ ইউএস ডলার পরিমাণ আয় বেড়েছে, যা শতাংশের হিসাবে বেড়েছে ১৫.২৬ শতাংশ।

 

বিশ্ববাজারে বাংলাদেশ ২৬ ধরনের পণ্য রপ্তানি করে। এর মধ্যে ১৭টি খাতের রপ্তানি বেড়েছে।

এই ১৭ খাতের মধ্যে যথারীতি রপ্তানি সবচেয়ে বেশি হয়েছে পোশাক খাত থেকে।

 

সূত্র জানায়, চলতি অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রা অনুসারে সরকার এবার ৬২ বিলিয়ন ডলার বা ছয় হাজার ২০০ কোটি ইউএস ডলার পরিমাণ পণ্য বিশ্ববাজারে রপ্তানি করবে। তাতে প্রবৃদ্ধি হবে ১১.৫৯ শতাংশ। তার মধ্যে একক মাস হিসেবে জুলাই মাসে সরকারে রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল চার বিলিয়ন বা ৪৪৮ কোটি ১০ লাখ ইউএস ডলার পরিমাণ পণ্য। আর সরকারের রপ্তানি আয় হয়েছে ৪৫৯ কোটি ২০ লাখ ইউএস ডলার পণ্য।

অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১১ কোটি ১৯ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার বেড়েছে, যা শতাংশের হিসাবে বেড়েছে ২.৫০ শতাংশ।

 

খাতভিত্তিক রপ্তানি তথ্যে দেখা যায়, জুলাই মাসে রপ্তানি আয় সবচেয়ে বেশি হয়েছে তৈরি পোশাক থেকে। এ খাতে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৭.৪৩ শতাংশ। অর্থাৎ মোট রপ্তানি হয়েছে ৩৯৫ কোটি ৩৭ লাখ ডলারের পোশাক পণ্য।

এর মধ্যে নিট পোশাক রপ্তানি হয়েছে ২২৬ কোটি ৬৪ লাখ ডলারের (প্রবৃদ্ধি ২২.২৪ শতাংশ) এবং ওভেন পোশাক বিদেশে গেছে ১৬৮ কোটি ৭২ লাখ ডলারের (প্রবৃদ্ধি ১১.৫৪ শতাংশ)।

২০২২-২৩ অর্থবছরে পণ্য রপ্তানি থেকে মোট পাঁচ হাজার ৫৫৫ কোটি ৮৮ লাখ (৫৫.৫৬ বিলিয়ন) ডলার আয় করেছিলেন রপ্তানিকারকরা, যা ছিল ২০২১-২২ অর্থবছরের চেয়ে ৬.৬৭ শতাংশ বেশি। তবে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪.২১ শতাংশ কম। ২০২১-২২ অর্থবছরে পণ্য রপ্তানি থেকে ৫২.০৮ বিলিয়ন ডলার আয় করেছিল বাংলাদেশ।

জানতে চাইলে বিজিএমইএর পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল কালের কণ্ঠকে বলেন, রপ্তানি আয়ে প্রবৃদ্ধি কিছুটা বেশি দেখালেও প্রকৃত রপ্তানি এখনো ঘুরে দাঁড়িয়েছে বিষয়টি এমন নয়। তবে উচ্চ মূল্যে পোশাকের রপ্তানি বেড়েছে। ফলে মূল্যস্ফীতি বা অন্যান্য কারণে ক্রয়াদেশ এখনো তেমন না বাড়লেও ইতিবাচক ধারায় রয়েছে রপ্তানি আয়। এর কারণ উচ্চ মূল্যের পোশাকে রপ্তানি বাড়ায় মূল্যে আকার থেকে প্রবৃদ্ধি হয়েছে। তিনি আরো বলেন, এখন কারখানার উৎপাদন সক্ষমতার চেয়ে কম ব্যবহার করা হচ্ছে। তবে আশা করছি ইউরোপ-আমেরিকার বাজার ভালো হলেই প্রকৃত অর্থে পুরো পোশাক খাত ঘুরে দাঁড়াবে।

রেমিট্যান্স কমল

চলতি বছরের জুনে রেকর্ড রেমিট্যান্স প্রবাহের পর জুলাই মাসে রেমিট্যান্স বা প্রবাস আয় আসা কমেছে ১০.২৭ শতাংশ। মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংক প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, জুলাইয়ে প্রবাসীরা ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন ১.৯৭ বিলিয়ন ডলার। আগের মাস জুনে দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল ২.১৯ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ এক মাসের ব্যবধানে রেমিট্যান্স কমেছে ২২৬ মিলিয়ন ডলার।

গত বছরের জুলাইয়ের চেয়েও রেমিট্যান্স কমেছে। গত বছরের একই সময়ে রেমিট্যান্সের পরিমাণ ছিল ২.৯৬ বিলিয়ন ডলার, এ বছর ১২৩ মিলিয়ন কমে তা হয়েছে ১.৯৭ বিলিয়ন ডলার।

গত জুনে প্রায় ৩৫ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আসে দেশে। এর আগে ২০২০ সালের জুলাইয়ে ২৫৯ কোটি ৮২ লাখ ডলারের সর্বোচ্চ প্রবাস আয় এসেছিল।

বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কর্মকর্তা জানান, জুনে ঈদের কারণে প্রবাসীরা রেকর্ড রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন। তবে জুলাইয়ে সেই তুলনায় রেমিট্যান্স কম এসেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য মতে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশ মোট রেমিট্যান্স পেয়েছে ২১.৬১ বিলিয়ন ডলার। আগের অর্থবছরের চেয়ে যা ২.৭৫ শতাংশ বেশি। ২০২১-২২ অর্থবছরে দেশে আনুষ্ঠানিক চ্যানেলে রেমিট্যান্স আসে মোট ২১.০৩ বিলিয়ন ডলার।


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]