বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রাণী কোনটি? এমন প্রশ্ন যদি আমাদের করা হয় তাহলে আমরা নিশ্চয়ই নীল তিমির কথা বলবো। কারণ বিংশ শতাব্দীতে এসে কমবেশি আমরা সবাই জানি, ১১০ ফুট উচ্চতা আর ১ লাখ ৭৩ হাজার কেজি ওজন নিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে বিশাল ও ভারী প্রাণীর তকমা রয়েছে নীল তিমির ঝুলিতে। কিন্তু এবার নীল তিমির রেকর্ড ভাঙতে যাচ্ছে তারই স্বজাতি। দৈত্যাকার এই তিমির নাম পেরুসেটাস তিমি।
নতুন একটি গবেষণা বলেছে, বিশালদেহী এই প্রাচীন তিমিটি দক্ষিণ আমেরিকার দেশ পেরুতে আবিষ্কৃত হয়েছে। দৈত্যাকার এই তিমিটিই বিশ্বের সবচেয়ে বড় ও ভারী প্রাণী হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বুধবার ( ২ আগস্ট) নেচার জার্নালে প্রকাশিত গবেষণাটির প্রধান লেখক ও ইতালির পিসা ইউনিভার্সিটি অফ আর্থ সায়েন্সেস বিভাগের প্যালিওন্টোলজির সহযোগী অধ্যাপক জিওভান্নি বিয়ানুচ্চি বলেন, অধুনা-বিলুপ্ত বিশালদেহী পেরুসেটাস তিমির ওজন ৮৫ থেকে ৩৪০ মেট্রিক টন পর্যন্ত হয়ে থাকে; যা নীল তিমির ওজনের সমতুল্য বা তার বেশি।
গবেষণা অনুসারে, আবিষ্কৃত পেরুসেটাসের আংশিক কঙ্কাল ১৩টি কশেরুকা, চারটি পাঁজরের এবং একটি নিতম্বের হাড় নিয়ে গঠিত। তিমিটি উচ্চতায় ১৭ থেকে ২০ মিটার বা ৫৫.৮ ফুট থেকে ৬৫.৬ ফুট পর্যন্ত লম্বা। জীবাশ্মের নমুনাটি ৮২ ফুট লম্বা; যা নীল তিমির চেয়ে ছোট। তবে এর কঙ্কালের ওজন যে কোনও স্তন্যপায়ী বা সামুদ্রিক মেরুদণ্ডী প্রাণীর চেয়ে বেশি।
এমনকি জীবদ্দশায় পেরুসেটাসের ওজন নীল তিমির চেয়ে দুই থেকে তিন গুণ বেশি ছিল। কারণ জীবাশ্মটির সর্বোচ্চ ওজন ১৪৯.৬ মেট্রিক টন।
বিয়ানুচ্চি বলেন, পেরুসেটাসের ওজন প্রায় দুটি নীল তিমি, তিনটি আর্জেন্টিনোসর (দৈত্যাকার সরোপড ডাইনোসর), ৩০ টিরও বেশি আফ্রিকান বুশ হাতি এবং ৫ হাজার মানুষের ওজনের সমান।
তিনি বলেন, পেরুসেটাসের হাড় অত্যন্ত ঘন এবং কম্প্যাক্ট হাড় দিয়ে তৈরি। এই ধরনের ভারী ও ঘন কঙ্কালকে ‘প্যাকিওস্টিওস্ক্লেরোসিস’ বলে।
তিনি আরও বলেন, এই আবিষ্কারটি গবেষকদের একটি বৈচিত্র্যময় কার্যকলাপের চূড়ান্ত ফল। ২০০৬ সালে দক্ষিণ পেরুর ইকা উপত্যকায় এই গবেষণা শুরু করা হয়।
সূত্র: সিএনএন