খুশকি শুধু চুল বা স্ক্যাল্পের ক্ষতি করে তাই নয়, একবার হলে আর যেতেও চায় না। তা ছাড়া লোকসমাজে এই খুশকির জন্য কত সময়ে লজ্জায় পড়তে হয়! এর দিকে সঠিক গুরুত্ব না দিলে, এটি আরও বাড়তে পারে। খুশকি সাধারণত বর্ষাকালে এবং শীতকালে বেশি দেখা যায়। তবে আজকাল আবহাওয়ার পরিবর্তন, দূষণ, অস্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রার কারণে প্রায় সারা বছরই খুশকির সমস্যা লক্ষ করা যায়।
আপাতদৃষ্টিতে খুশকিকে বড়ো ধরনের সমস্যা মনে না হলেও, শরীরের সৌন্দর্যহানিতে খুশকির একটা বড়ো ভূমিকা আছে।খুশকি অনেক প্রকারের হয় - কোনোটা চুলে আটকে থাকে, কোনোটা আবার শুষ্ক ধরনের হয় যেটা সহজেই কাঁধে কিংবা জামার কলারে লক্ষ করা যায়। সারা বিশ্বে মোট জনসংখ্যার ৫০ শতাংশের বেশি মানুষ এই খুশকির সমস্যায় ভুগছে।
অনেকে 'অ্যান্টি-ড্যানড্রাফ' শ্যাম্পু ব্যবহার করেন। অনেক টাকা খরচ করে পার্লারে ট্রিটমেন্ট করান। কিন্তু খুশকি তো যায়ই না, উলটে চুলের অনেক ক্ষতি হয়ে যায়! আপনার ঘরে থাকা কয়েকটি জিনিস দিয়েই আপনি সহজেই এই খুশকি সমস্যার সমাধান করতে পারেন। চুল হয়ে ওঠে স্বাস্থ্যকর।
চুল পরিষ্কার না করা - চুলে যদি ময়লা জমে এবং তা ঠিক করে পরিষ্কার না করা হয়, তা হলে খুশকি হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই বেড়ে যায়।
গরমজল দিয়ে স্নান - যাঁরা গরমজল দিয়ে স্নান করেন, তাঁদের ক্ষেত্রে খুশকির সমস্যা বেশি লক্ষ করা যায়। চুল ধোয়ার জন্য সব সময়, সাধারণ তাপমাত্রার জল ব্যবহার করুন।
অতিরিক্ত তৈলাক্ত বা শুষ্ক ত্বক - ত্বক অতিরিক্ত তৈলাক্ত অথবা শুষ্ক হলে খুশকির সমস্যা দেখা দিতে পারে। তৈলাক্ত ত্বকে ধুলোবালি বেশি জমে। ত্বকের মৃত কোষগুলির অত্যাধিক বৃদ্ধি হলে খুশকি হয়। যাঁরা নিয়মিত সঠিক ভাবে চুল আঁচড়ান না, চুলে ঠিকমতো শ্যাম্পু করেন না তাঁদের ক্ষেত্রে এই সমস্যাটা বেশি দেখা যায়।
অত্যাধিক চিন্তা - অত্যাধিক চিন্তা মাথার ত্বকের ওপর প্রভাব ফেলে, যার ফলে খুশকির সমস্যা দেখা যায়। তাই খুশকি হওয়ার অন্যতম কারণ মানসিক দুশ্চিন্তাও হতে পারে। মাথার চুল যদি দীর্ঘদিন অপরিষ্কার থাকে, সে ক্ষেত্রে চুলের গোড়ায় ছত্রাক তৈরি হয়, যা খুশকির সৃষ্টি করে।
খুশকি দূর করার ঘরোয়া উপায়
পাতিলেবু - পাতিলেবুর রস সরষের তেলে ভালো করে মেশান। মিশ্রণটি ভালো করে গোটা স্ক্যাল্পে মাসাজ করুন। মিনিট পাঁচেক চুলের গোড়ায় ভালো ভাবে মালিশ করার পর চুল ধুয়ে নিন। খুশকির সমস্যা পুরোপুরি দূর না হওয়া পর্যন্ত সপ্তাহে অন্তত ২ বার এই ভাবে পাতিলেবু ব্যবহার করে দেখুন। ফল পাবেন হাতেনাতে।
পুরোনো তেঁতুল - পুরোনো তেঁতুল জলে গুলে নিন। ওই মিশ্রণটি চুলের গোড়ায় ভালো করে লাগান। ১০-১২ মিনিট অপেক্ষা করে চুল শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে অন্তত দু' দিন তেঁতুল মাথায় দিন। এতে খুশকি যেমন দূর হয় তেমনি মাথার চুলকানিও কমে যায়।
টকদই - খুশকির সমস্যা দূর করতে টকদই অত্যন্ত কার্যকর একটি উপাদান। খুশকি দূর করতে মাথার ত্বকে টকদই দিয়ে ভালো ভাবে মালিশ করুন। এর পর মিনিট দশেক রেখে ভালো করে ধুয়ে ফেলুন। খুশকির সমস্যা পুরোপুরি দূর না হওয়া পর্যন্ত সপ্তাহে অন্তত দু' বার এই ভাবে চুলে টকদই ব্যবহার করে দেখুন। উপকার পাবেন।
রিঠা - খুশকির সমস্যা দূর করতেও রিঠা অত্যন্ত কার্যকর! রিঠা পাউডার বা রিঠাসিদ্ধ জল দিয়ে চুল ভিজিয়ে ঘণ্টা খানেক রেখে দিন। ঘণ্টাখানেক পর চুল ধুয়ে ফেলুন। এ ভাবে সপ্তাহে ২-৩ বার রিঠা ভেজানো জল মাথায় মাখলে খুশকির সমস্যা দ্রুত নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। চুলের সৌন্দর্য বাড়াতে রিঠা অত্যন্ত কার্যকর একটি উপাদান।