প্রস্রাবের একটা নিজস্ব ঝাঁঝালো গন্ধ রয়েছে। সেটি আসলে অ্যামোনিয়া থেকে উত্পন্ন হয়। তবে এই গন্ধেরও কিন্তু একটা মাত্রা রয়েছে। অনেক সময় সেই মাত্রা ছাড়িয়ে প্রস্রাবের গন্ধ অসহনীয় হয়ে উঠলে তা চিন্তার বিষয়।
মূত্রে দুর্গন্ধ হওয়া সাধারণত চিন্তার কোনও বিষয় নয়। তা নিজে থেকেই চলে যেতে পারে।
কিন্তু দিনের পর দিন যদি মাত্রাতিরিক্ত দুর্গন্ধ হতে থাকে, তবে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। নানা শারীরিক সমস্যার লক্ষণ হতে পারে দুর্গন্ধযুক্ত প্রস্রাব। তবে নির্দিষ্ট কিছু খাবারের কারণেও এই সমস্যা দেখা দিতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আমরা যা কিছু খাই তার প্রভাব পড়ে আমাদের শরীরে। কোনও ব্যক্তি কী ধরনের খাবার এবং পানীয় খাচ্ছেন, তার অনেকটাই প্রভাব পড়ে মূত্রের উপর। এমন কিছু খাবার আছে যেগুলি খেলে মূত্রে দুর্গন্ধ হতে পারে।
কফি: অত্যধিক কফি পান দুর্গন্ধযুক্ত প্রস্রাবের কারণ হতে পারে। কফিতে থাকা যৌগের কারণেই প্রস্রাবে দুর্গন্ধ হয়। তাছাড়া, কফিতে থাকা ক্যাফেইন মূত্রবর্ধক হিসেবে পরিচিত। দিনে বহু বার কফি খেলে প্রস্রাবও বেশি হয়। যার ফলে শরীর ডিহাইড্রেট হয়ে যেতে পারে। এই কারণেও মূত্রে দুর্গন্ধ হয়, এমনকি মূত্রের রং ঘোলাটে হয়ে যায়।
রসুন এবং পেঁয়াজ: পেঁয়াজ, রসুন বেশি পরিমাণে খেলেও প্রস্রাবে দুর্গন্ধ হয়। কারণ রসুন এবং পেঁয়াজে সালফারযুক্ত রাসায়নিক থাকে। যার ফলে মূত্রে দুর্গন্ধ হয়।
মশলাদার খাবার: অতিরিক্ত মশলাদার খাবার খেলে সেখান থেকেও গন্ধ হয় প্রস্রাবে। জিরা, হলুদ এবং ধনে জাতীয় মশলা প্রস্রাবের দুর্গন্ধ সৃষ্টি করতে পারে। আসলে এই সব মশলায় থাকা সুগন্ধি রাসায়নিক আমাদের শরীরে গিয়েও বজায় থাকে। খাবার হজম হওয়ার পরেও প্রস্রাবে সেই গন্ধ হতে পারে।
জল কম খাওয়া: জল কম খেলে এই সমস্যা হয়। তখন ইউরিন যেমন হলুদ হয়ে যায়, পাশাপাশি দুর্গন্ধও বেরোয়। তাই প্রস্রাবে দুর্গন্ধ কিন্তু ডিহাইড্রেশনেরও ইঙ্গিত।
আসলে প্রস্রাবে অ্যামোনিয়া থাকে। আপনি যত বেশি হাইড্রেট থাকবেন বা জল পান করবেন, অ্যামোনিয়া তত কম ঘনীভূত হবে। কিন্তু শরীরে জলের অভাব বা ডিহাইড্রেশন হলে, অ্যামোনিয়ার ঘনত্বও শক্তিশালী হয়। যার ফলে গন্ধও বেশি বেরোয়।
দুর্গন্ধযুক্ত প্রস্রাব কি কোনও রোগের লক্ষণ?
NHS এর মতে, মূত্রে দুর্গন্ধ হওয়া সাধারণত তেমন চিন্তার বিষয় নয়। তবে এর সঙ্গে যদি অন্যান্য উপসর্গ দেখা দেয়, যেমন - জ্বালা-যন্ত্রণা, ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া, স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি প্রস্রাব হওয়া, মূত্রের রং ঘোলাটে, তাহলে তা মূত্রনালীর সংক্রমণ (urinary tract infection) এর লক্ষণ হতে পারে।
টাইপ ২ ডায়াবেটিস এবং কিডনি স্টোনের কারণেও প্রস্রাবে দুর্গন্ধ হতে পারে। এই সমস্যা অনেক দিন ধরে চলতে থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়াই ভালো।