আগামী কয়েক দশকের মধ্যে আটলান্টিক মহাসাগরের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্রোত থেমে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিজ্ঞানীরা। এমনটি ঘটলে বিপর্যয়ের মুখে পড়বে বিশ্ব আবহাওয়া। খবর সিএনএনের।
মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আটলান্টিক মেরিডিওনাল ওভারটার্নিং সার্কুলেশন বা এএমওসি নামে পরিচিত এই স্রোত যেকোনো সময় বন্ধ যাতে পারে।
এতে বলা হয়েছে, বর্তমানে যে হারে গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ হচ্ছে তাতে চলতি শতকের মাঝামাঝি সময়ে এই এএমওসি থেমে যেতে পারে। এমনকি তারও আগে ২০২৫ সালের মধ্যেই এই স্রোত বন্ধ হতে পারে। তবে খুব বেশি আশাবাদী হলে এই স্রোত ২০৯৫ সাল পর্যন্ত টিকে থাকবে।
ডেনমার্কের কোপেনহেগেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পিটার ডিটলভসেন এবং সুজান ডিটলভসেন নেচার কমিউনিকেশনে প্রকাশিত একটি পিয়ার-রিভিউড নিবন্ধে এই সতর্কবার্তা উচ্চারণ করেছেন। তবে অনেক বিজ্ঞানী এই গবেষণায় সবকিছু অতি সরলীকরণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন।
টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি অব মিউনিখের নিকলাস বোয়ার্স বলেন, ‘মডেলিংটি অত্যধিক সরলীকৃত। গবেষকরা স্বীকার করেছেন যে তারা এমনটা অনুমান করেছেন কেবল, এটি নিশ্চিত নয়।’
আটলান্টিক মেরিডিওনাল ওভারটার্নিং সার্কুলেশন বা এএমওসি গালফ স্ট্রিম বরাবর উষ্ণ পানির স্রোত উত্তর দিকে পাঠায়। এর ফলে কানাডার সমান অক্ষাংশে থাকা ইংল্যান্ড অনেক বেশি উষ্ণ। বিপরীতে কানাডা অনেক বেশি শীতল। বিজ্ঞানীরা বলেছেন, যদি সত্যই এই স্রোত থেমে যায় তাহলে এর পরিণতি নিয়ে গবেষকরা সে আভাস দিয়েছেন তা নিয়ে কোনো দ্বিমত নেই।
সিএনএনকে পিটার ডিটলভসেন বলেন, ‘এটি সত্যিই ভীতিকর। এটি এমন কোনো বিষয় নয় যা আপনি হালকাভাবে নেবেন। এ ধরনের গবেষণার ফলাফল সত্যি হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।’
উডস হোল ওশানোগ্রাফিক ইনস্টিটিউশনের সভাপতি পিটার ডি মেনোকাল বলেন, গবেষণার ফলাফল একদিকে যেমন ‘আশ্চর্যজনক’ অন্যদিকে এটা উদ্বেগজনকও।’
তিনি সিএনএনকে বলেন, এটি স্পষ্ট যে আগামী দশকগুলোতে এএমওসির এই স্রোত থেমে যাবে। ২০২১ সালে একটি গবেষণায় জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এএমওসির স্রোত অস্থিতিশীল লক্ষণ দেখা গেছে।
ব্রিস্টল গ্ল্যাসিওলজি সেন্টারের পরিচালক জোনাথন ব্যাম্বার বলেন, ‘এএমওসি-থেমে যাওয়ার অর্থ হলো পুরো বিপর্যয়কে ডেকে নিয়ে আসা।’