প্রতিদিনের সংক্ষিপ্ত সময়ের ধারাবাহিক ৪টি আমল। এ আমলটি প্রতিদিন ৫ বার করার সুযোগ আসে। এ আমলের বিনিময়ে মানুষ আল্লাহর কাছে যা চায়, তা-ই কবুল করা হয়। এ আমলগুলো কী?
ধারাবাহিক এ আমলটি মুমিন বান্দা প্রতিদিনই ৫ বার করে থাকেন। প্রতিদিনই মহল্লার মসজিদ থেকে ৫ বার আজান দেওয়া হয়। যারাই এ আজান শুনবেন; তাদের জন্য এ আমলগুলো পালন করা জরুরি। এর ফজিলত এবং মর্যাদাও অনেক বেশি।
মুয়াজ্জিন যখন আজান দেয়, তখন সবার জন্য প্রত্যেক আজানের এ সংক্ষিপ্ত সময়ে ৪টি আমল করা জরুরি। হাদিসের বর্ণনা থেকে জানা যায়, আল্লাহ এ আমলের বিনিময়ে মুমিন বান্দার চাওয়াগুলো পূরণ করে দেন। আমলগুলো হলো-
১. আজানের উত্তর দেওয়া: হজরত আবু সাঈদ খুদরি রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন,রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা যখন আজান শুনবে, তখন মুয়াজ্জিন যা বলবে, তোমরাও তাই বলো।’ (বুখারি)
অন্য হাদিসে এসেছে- হজরত মুয়াবিয়া ইবনে আবু সুফিয়ান রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে শুনেছি ‘হাইয়া আলাস সালাহ’ এবং ‘হাইয়া আলাল ফালাহ’ বলার পর ‘লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’ বলতে হবে।’ (বুখারি)
২. আজানের পর দরুদ পড়া: হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘মুয়াজ্জিনের আজান শুনে তোমরা হুবহু শব্দগুলো বলো। এরপর আমার ওপর দরূদ পাঠ করো। যে ব্যক্তি আমার ওপর একবার দরূদ পাঠ করবে, আল্লাহ তাআলা তার ওপর দশটি রহমত বর্ষণ করবেন।’ (মুসলিম)
৩. আল্লাহর একত্ববাদের সাক্ষ্য দেওয়া: হজরত সাদ ইবনে আবি ওয়াক্কাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘মুয়াজ্জিনের আজান শুনে যে ব্যক্তি বলবে-
أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ، رَضِيتُ بِاللَّهِ رَبًّا وَبِمُحَمَّدٍ رَسُولًا وَبِالْإِسْلَامِ دِينًا
উচ্চারণ : আশহাদু আল-লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু, লা শারিকা লাহু, ওয়া আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসুলুহু; রদিতু বিল্লাহি রব্বাও ওয়া বিমুহাম্মাদিন রাসুলাও ওয়া বিল ইসলামি দ্বীনা।’
তার জীবনের সব গোনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে।’ (মুসলিম)
৪. আজান শেষে দোয়া পড়া: হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলল, হে আল্লাহর রাসুল! মুয়াজ্জিন আজান দিয়ে আমাদের চেয়ে বেশি ফজিলত পেয়ে যাচ্ছে। আমরা কী করব?
রাসুলুল্লাহ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তুমিও হুবহু মুয়াজ্জিনের মতো বলো। আজান শেষ হলে আল্লাহর কাছে (প্রার্থনা কর) চাও, তোমার দোয়া কবুল করা হবে।’ (আবু দাউদ)
সুতরাং আজানের সময় মুয়াজ্জিনের অনুসরণে হুবহু উত্তর দেওয়া ফজিলতপূর্ণ ইবাদত। তাই মুমিন মুসলমানের উচিত আজানের উত্তর দেওয়া, দরূদ পড়া, তাওহিদ-রেসালাতের ঘোষণা দেওয়া এবং সবশেষে দোয়া পড়া।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে হাদিসের আলোকে আজানের উত্তর দেওয়ার পাশাপাশি দরূদ ও দোয়া করার তাওফিক দান করুন। হাদিসের ওপর যথাযথ আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।