তাঁর ব্যক্তিগত সহকারী এবং নিরাপত্তা উপদেষ্টা বলছেন বাড়ি থেকেই না বেরতে। কিন্তু গ্রেফতারি এড়াতে বেরতেই হচ্ছ পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা তেহরিক-ই-ইনসাফ পার্টির প্রধান ইমরান খানকে। কারণ, বিগত ছয় মাসে তাঁর বিরুদ্ধে ১৮০টি জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে। এমনই একটি মামলায় হাজিরা না দেওয়ায় এবার গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি হল প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে।
আশ্চর্যের হল, গ্রেফতারি পরোয়ানাটি জারি করেছে পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচন কমিশন। তারা পুলিশ-প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে গ্রেফতার করে তাদের কাছে পেশ করতে।
পাকিস্তানে নির্বাচন কমিশনের হাতেও গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির ক্ষমতা আছে। নির্বাচন সংক্রান্ত মামলায় এমনকী তারা নিজেরাই শুনানি করে থাকে। ইমরান ও তাঁর দলের তিন শীর্ষ নেতার বিরুদ্ধে কমিশন মানহানির মামলা ঠুকেছিল নিজের দফতরেই। সেই মামলায় তলব করা হলেও ইমরান ও বাকি দুই নেতা হাজির হননি।
এদিকে, পাকিস্তান সরকার পরশু দেশের প্রধান দুর্নীতি দমন এজেন্সি ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টেবিলিটি ব্যুরোর ক্ষমতা বৃদ্ধি করে একটি অধ্যাদেশ জারি করেছে। তাতে বলা হয়েছে ব্যুরো দুর্নীতির তদন্তে অভিযুক্তকে টানা তিরিশ দিন নিজেদের হেফাজতে রাখতে পারবে।
দুর্নীতি দমন এজেন্সির এই ক্ষমতা বৃদ্ধিও তাঁর বিপদের কারণ হতে পারে বলে মনে করছেন প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রী। ইমরান ও তাঁর স্ত্রী বুশরার বিরুদ্ধে এই মুহূর্তে দুর্নীতির গুরুতর অভিযোগের তদন্ত করছে কমিশন। ইমরান ও তাঁর স্ত্রী’কে একাধিকবার জিজ্ঞাসাবাদ করেছে তারা। কিন্তু প্রতিবারই মাঝপথে জেরা থামিয়ে দিতে হয়েছে টানা আটকে রাখার বিধান না থাকায়। অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে ইমরান তাঁর স্ত্রীর ঘনিষ্ঠ একটি প্রতিষ্ঠানকে সস্তায় সরকারি জমি পাইয়ে দিয়ে বিপুল টাকা কামিয়েছেন। তদন্ত ব্যুরো নয়া ক্ষমতার জোরে ইমরানকে অন্তত মাস খানেকের জন্য হেফাজতে নিতে পারে।
ইমরানের বিরুদ্ধে কমিশনের জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির কারণ সংসদের সদস্যপদ চলে যাওয়ার পর তাঁর প্রতিক্রিয়া। গত বছর আদালত ইমরানকে দুর্নীতির একটি মামলায় অভিযুক্ত করা মাত্র নির্বাচন কমিশন তাঁর সাংসদ পদ বাতিল করে দেয়। এই ব্যাপারেও ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের আইনের বিস্তর ফারাক আছে। যেহেতু কমিশনই জয়-পরাজয় নির্ধারণ করে থাকে তাই সদস্যপদ বাতিলের অধিকারও তাদের হাতেই ন্যস্ত।
সদস্যপদ বাতিলের পর ইমরান কমিশন সম্পর্কে আপত্তিজনক মন্তব্য করেন। সেই অভিযোগ নিয়ে কমিশনের নিজস্ব তদন্তে অভিযুক্ত হয়েছেন প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রী।