বাঘ ভেবে মেছো বিড়ালকে পিটিয়ে হত্যার চেষ্টা


অনলাইন ডেস্ক: , আপডেট করা হয়েছে : 28-02-2022

বাঘ ভেবে মেছো বিড়ালকে পিটিয়ে হত্যার চেষ্টা

মাগুরা শ্রীপুর থানা থেকে একটি বিপন্ন মেছো বিড়াল উদ্ধার করা হয়েছে। রোববার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে শ্রীপুরের চৌগাছি গ্রাম থেকে মেছো বিড়ালটি উদ্ধার করা হয়।

স্থানীয় কলেজ শিক্ষক মোশাররফ হোসেন জানান, গ্রামে পুকুর খননের কাজে নিয়োজিত শ্রমিকেরা প্রাণীটিকে গাছের ওপর বসে থাকতে দেখে সেটিকে ধাওয়া করে আটক করেন। খবর ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় যুবকেরা ঘটনাস্থলে ভিড় জমান এবং প্রাণীটিকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেন। খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে আমি তাদেরকে প্রাণীটিকে মেরে ফেলা থেকে বিরত করি।

পরিবেশ ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ বিষয়ক বেসরকারি ও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা  'নেচার ফর লাইফ' এর সহ-সম্পাদক মাজেদুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে যতক্ষণে উপস্থিত হই ততক্ষণে প্রাণীটিকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয়েছে। সেটিকে বাঘ ভেবে গ্রামবাসীর মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ায় তারা প্রাণীটিকে হত্যার চেষ্টা করেছিল।

তিনি বলেন, সৌভাগ্যক্রমে উৎসুক জনতার হাত থেকে মেছো বিড়ালটিকে বাঁচানো গেছে। নেচার ফর লাইফের সদস্যরা প্রাণীটিকে উদ্ধার করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।

শ্রীপুর থানার ডিউটি অফিসার এসআই কৃষ্ণ বাবু পুলিশের উপস্থিতিতে মেছো বিড়ালটি উদ্ধার করে বন বিভাগকে খবর দেওয়া হয়েছে।

খুলনা বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের খুলনার মৎস্য বিশেষজ্ঞ মফিজুর রহমান চৌধুরী জানান, প্রাথমিক চিকিৎসার পর প্রাণীটি মাগুরার শ্রীপুরের সামাজিক বন বিভাগের অফিসে আছে। সোমবার সেটিকে খুলনায় আনা হবে।

এদিকে, প্রাণীটি মানুষের জন্য ক্ষতিকর নয় বলে মন্তব্য করে বাংলাদেশ বন অধিদফতরের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা এবং তরুণ বন্যপ্রাণী গবেষক জোহরা মিলা জানান, প্রাণীটির প্রকৃত নাম মেছো বিড়াল (Fishing Cat)। কিন্তু অনেক এলাকায় এটিকে মেছোবাঘ নামেও ডাকে। বাঘ নামে ডাকার কারণে শুধু শুধু আতঙ্ক ছড়িয়েছে। প্রাণীটি মানুষকে আক্রমণ করে না, বরং মানুষ দেখলে পালিয়ে যায়। তাই এটি নিয়ে ভীত হওয়ার কিছু নেই। বাংলাদেশের প্রায় সর্বত্রই এই প্রাণীটি বিচরণ রয়েছে। জলাভূমি আছে এমন এলাকায় বেশি দেখা যায়। প্রাণীটি জলাভূমির মাছ, ব্যাঙ, কাঁকড়া ছাড়াও পোকামাকড় ও ইঁদুর খেয়ে কৃষকের উপকার করে। জনবসতি স্থাপন, বন ও জলাভূমি ধ্বংস, পিটিয়ে হত্যা ইত্যাদি কারণে বিগত কয়েক দশকে এই প্রাণীটির সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে হ্রাস পেয়েছে।

প্রাণীটিকে উদ্ধার ও রক্ষা করায় ‘নেচার ফর লাইফ’ এর সদস্যদের প্রশংসা করেন জোহরা মিলা। তিনি বলেন ২০০৮ সালে মেছো বিড়ালকে বিপন্ন প্রাণী প্রজাতির তালিকায় অর্ন্তভুক্ত করেছে আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘ (আইইউসিএন)। তাছাড়া বন্যপ্রাণী আইন-২০১২ অনুযায়ী এই প্রজাতি সংরক্ষিত। তাই এই প্রাণীটি হত্যা বা এর কোনো ক্ষতি করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

রাজশাহীর সময় / এম আর


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]