খাঁটি তওবা ইসলামের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আমল। আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে তার শ্রেষ্ঠতম সৃষ্টি ও প্রতিনিধি মানুষের জন্য বড় নেয়ামত, করুণা ও দয়া এটি। খাঁটি তওবায় মানুষ পাপ-পঙ্কিলতা থেকে নাজাত পেয়ে জান্নাতের সুসংবাদ পায়। এ কারণেই কোরআনুল কারিমে মুমিনগণকে বারবার তওবা ও ইসতেগফার করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ইসতেগফার হলো ক্ষমা প্রার্থনা করা। এটি মাগফেরাত শব্দ থেকে এসেছে। যার অর্থ ঢেকে দেওয়া, পর্দা করা। প্রকৃতপক্ষে বান্দা ক্ষমা চাইলে আল্লাহ তাআলা তাকে অনুগ্রহ করে তাকে ক্ষমার করে দেন। আর তওবা হচ্ছে, আল্লাহ তাআলার কাছে লজ্জিত, অনুতপ্ত হয়ে অন্যায়-অসৎ কাজ থেকে প্রত্যাবর্তন এবং ভবিষ্যতের জন্য সৎ ও ন্যায় কাজের সংকল্প করা। তওবা সম্পর্কে আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন-
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا تُوۡبُوۡۤا اِلَی اللّٰهِ تَوۡبَۃً نَّصُوۡحًا ؕ عَسٰی رَبُّکُمۡ اَنۡ یُّکَفِّرَ عَنۡکُمۡ سَیِّاٰتِکُمۡ وَ یُدۡخِلَکُمۡ جَنّٰتٍ تَجۡرِیۡ مِنۡ تَحۡتِهَا الۡاَنۡهٰرُ ۙ یَوۡمَ لَا یُخۡزِی اللّٰهُ النَّبِیَّ وَ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا مَعَهٗ ۚ نُوۡرُهُمۡ یَسۡعٰی بَیۡنَ اَیۡدِیۡهِمۡ وَ بِاَیۡمَانِهِمۡ یَقُوۡلُوۡنَ رَبَّنَاۤ اَتۡمِمۡ لَنَا نُوۡرَنَا وَ اغۡفِرۡ لَنَا ۚ اِنَّکَ عَلٰی کُلِّ شَیۡءٍ قَدِیۡرٌ
‘হে ঈমানদারগণ, তোমরা আল্লাহর কাছে তওবা কর, খাঁটি তওবা; আশা করা যায় তোমাদের রব তোমাদের পাপসমূহ মোচন করবেন এবং তোমাদেরকে এমন জান্নাতসমূহে প্রবেশ করাবেন যার পাদদেশে নহরসমূহ প্রবাহিত, নবী ও তার সঙ্গে যারা ঈমান এনেছে তাদেরকে সেদিন আল্লাহ লাঞ্ছিত করবেন না। তাদের আলো তাদের সামনে ও ডানে ধাবিত হবে। তারা বলবে, ‘হে আমাদের রব, আমাদের জন্য আমাদের আলো পূর্ণ করে দিন এবং আমাদেরকে ক্ষমা করুন; নিশ্চয়ই আপনি সর্ববিষয়ে সর্বক্ষমতাবান।’ (সুরা তাহরিম : আয়াত ৮)
قُلۡ یٰعِبَادِیَ الَّذِیۡنَ اَسۡرَفُوۡا عَلٰۤی اَنۡفُسِهِمۡ لَا تَقۡنَطُوۡا مِنۡ رَّحۡمَۃِ اللّٰهِ ؕ اِنَّ اللّٰهَ یَغۡفِرُ الذُّنُوۡبَ جَمِیۡعًا ؕ اِنَّهٗ هُوَ الۡغَفُوۡرُ الرَّحِیۡمُ
(হে রাসুল!) আপনি বলুন, হে আমার (আল্লাহর) বান্দাগণ! যারা নিজেদের ওপর জুলুম করেছ, তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয় আল্লাহ সব গুনাহ মাফ করবেন। তিনি ক্ষমাশীল,পরম দয়ালু।’ (সুরা জুমার : আয়াত ৫৩)
اِنَّ اللّٰهَ یُحِبُّ التَّوَّابِیۡنَ وَ یُحِبُّ الۡمُتَطَهِّرِیۡنَ
‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তওবাকারীদের ভালবাসেন এবং ভালবাসেন অধিক পবিত্রতা অর্জনকারীদেরকে।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ২২২)
খাঁটি তওবার শর্ত
> পাপকাজটি এখনি ছেড়ে দেওয়া।
> অতীত ভুলের জন্য লজ্জিত হয়ে কান্নাকাটি করা।
> ভবিষ্যতে গুনাহের কাজ না করার প্রতিজ্ঞা করা।
> বান্দার হকের সঙ্গে সম্পৃক্ত বিষয় আদায় করে দেওয়া। যেমন- ঋণ থাকলে আদায় করে দেওয়া। আর জুলুম ও গিবত করলে ক্ষমা চেয়ে নেওয়া। (মাআরিফুল কোরআন)
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দৈনিক ১০০ বার তওবা করতেন। তিনি হলেন মাছুম তথা নিষ্পাপ। তারপরও তিনি দৈনিক ৭০ বার, কোনো হাদিসে আছে ১০০ বার তওবা-ইসতেগফার করতেন। এটা উম্মতদের শিক্ষা দেওয়ার জন্য। আর আমরা তো নিত্য গুনাহের মধ্যে ডুবে থাকি, তাহলে আমাদের কতবার তওবা করা উচিত ? আমরা ভেবে দেখেছি কখনো ?
হজরত আগার আল-মুজানি রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,হে লোক সকল! তোমরা আল্লাহর কাছে তওবা করো। আমি প্রতিদিন ১০০ বার তওবা-ইসতেগফার করি।’ (মুসলিম, আবু দাউদ)
হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, আল্লাহর কসম! অবশ্যই আমি প্রতিদিন ৭০ বারেরও বেশি আল্লাহর কাছে তওবা-ইসতেগফার করি। (বুখারি)
তওবাকারী বান্দাই সর্বোত্তম
হজরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহু সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, প্রত্যেক আদম সন্তানই গুনাহগার। আর গুনাহগারদের মধ্যে সবচেয়ে উত্তম হলো তওবাকারী।’ (তিরমিজি, ইবনে মাজাহ)
তওবাকারীর গুনাহ থাকে না
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, গুনাহ হতে তওবাকারী বান্দা এমন, যার কোনো গুনাহ নেই।’ (ইবনে মাজাহ, মাজমাউজ জাওয়ায়েদ)
তওবায় বিনয়ী হয় মানুষ
তওবা মানুষকে বিনয়ী করে তোলে, পাপাচার মিটিয়ে মানুষকে পবিত্র করে তোলে। হাদিসে কুদসিতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, হে আমার বান্দারা! তোমরা দিন-রাত গুনাহ করে থাকো, আমি তোমাদের সব গুনাহ ক্ষমা করে দেব। তোমরা ইসতেগফার করো, আমি তোমাদের ক্ষমা করে দেবো।’ (মুসলিম)
তওবার মাসনুন দোয়াসমূহ
১. أَستَغْفِرُ اللهَ
উচ্চারণ : ‘আস্তাগফিরুল্লাহ।’
অর্থ : আমি আল্লাহর ক্ষমা প্রার্থনা করছি।
নিয়ম : প্রতি ওয়াক্ত ফরজ নামাজের সালাম ফেরানোর পর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ ইসতেগফারটি ৩ বার পড়তেন।' (মিশকাত)
২. أَسْتَغْفِرُ اللهَ وَأَتُوْبُ إِلَيْهِ
উচ্চারণ : ‘আস্তাগফিরুল্লাহা ওয়া আতুবু ইলাইহি।‘
অর্থ : আমি আল্লাহর ক্ষমা প্রার্থনা করছি এবং তাঁর দিকেই ফিরে আসছি।
নিয়ম : এ ইসতেগফারটি প্রতিদিন ৭০/১০০ বার পড়া। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রতিদিন ৭০ বারের অধিক তওবাহ ও ইসতেগফার করতেন।' (বুখারি)
৩. رَبِّ اغْفِرْ لِيْ وَتُبْ عَلَيَّ إِنَّكَ (أنْتَ) التَّوَّابُ الرَّحِيْمُ
উচ্চারণ : 'রাব্বিগ্ ফিরলি ওয়া তুব আলাইয়্যা ইন্নাকা (আংতাত) তাওয়্যাবুর রাহিম।'
অর্থ : 'হে আমার প্রভু! আপনি আমাকে ক্ষমা করুন এবং আমার তওবাহ কবুল করুন। নিশ্চয় আপনি মহান তওবা কবুলকারী করুণাময়।'
নিয়ম : রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মসজিদে বসে এক বৈঠকেই এই দোয়া ১০০ বার পড়েছেন।' (আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ, তিরমিজি, মিশকাত)
৪. أَسْتَغْفِرُ اللَّهَ الَّذِي لاَ إِلَهَ إِلاَّ هُوَ الْحَىُّ الْقَيُّومُ وَأَتُوبُ إِلَيْهِ
উচ্চারণ : 'আস্তাগফিরুল্লা হাল্লাজি লা ইলাহা ইল্লা হুওয়াল হাইয়্যুল কইয়্যুমু ওয়া আতুবু ইলায়হি।'
অর্থ : 'আমি ওই আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই, যিনি ছাড়া প্রকৃতপক্ষে কোনো মাবুদ নেই, তিনি চিরঞ্জীব, চিরস্থায়ী এবং তাঁর কাছেই (তওবাহ করে) ফিরে আসি।'
নিয়ম : দিনের যে কোনো ইবাদত-বন্দেগি তথা ক্ষমা প্রার্থনার সময় এভাবে তওবাহ-ইসতেগফার করা। হাদিসে এসেছে- এভাবে তওবাহ-ইসতেগফার করলে আল্লাহ তাআলা তাকে ক্ষমা করে দেবেন, যদিও সে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পলায়নকারী হয়।' (আবু দাউদ, তিরমিজি, মিশকাত)
৫. সাইয়েদুল ইসতেগফার পড়া
اللَّهُمَّ أَنْتَ رَبِّي لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ خَلَقْتَنِي وَأَنَا عَبْدُكَ وَأَنَا عَلَى عَهْدِكَ وَوَعْدِكَ مَا اسْتَطَعْتُ أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا صَنَعْتُ أَبُوءُ لَكَ بِنِعْمَتِكَ عَلَيَّ وَأَبُوءُ لَكَ بِذَنْبِي فَاغْفِرْ لِي فَإِنَّهُ لَا يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلَّا أَنْتَ
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা আংতা রাব্বি লা ইলাহা ইল্লা আংতা খালাক্কতানি ওয়া আনা আবদুকা ওয়া আনা আলা আহ্দিকা ওয়া ওয়াদিকা মাসতাতাতু আউজুবিকা মিন শাররি মা সানাতু আবুউলাকা বিনিমাতিকা আলাইয়্যা ওয়া আবুউলাকা বিজাম্বি ফাগ্ফিরলি ফা-ইন্নাহু লা ইয়াগফিরুজ জুনুবা ইল্লা আংতা।'
অর্থ : 'হে আল্লাহ! তুমিই আমার প্রতিপালক। তুমি ছাড়া কোনো ইলাহ নেই। তুমিই আমাকে সৃষ্টি করেছ। আমি তোমারই বান্দা আমি যথাসাধ্য তোমার সঙ্গে প্রতিজ্ঞা ও অঙ্গীকারের উপর আছি। আমি আমার সব কৃতকর্মের কুফল থেকে তোমার কাছে আশ্রয় চাই। তুমি আমার প্রতি তোমার যে নেয়ামত দিয়েছ তা স্বীকার করছি। আর আমার কৃত গোনাহের কথাও স্বীকার করছি। তুমি আমাকে ক্ষমা করে দাও। কারন তুমি ছাড়া কেউ গোনাহ ক্ষমা করতে পারবে না।'
নিয়ম : সকালে ও সন্ধ্যায় এ ইসতেগফার করা। ফজর ও মাগরিবের নামাজের পর এ ইসতেগফার পড়তে ভুল না করা। কেননা হাদিসে এসেছে- যে ব্যক্তি এ ইসতেগফার সকালে পড়ে আর সন্ধ্যার আগে মারা যায় কিংবা সন্ধ্যায় পড়ে সকাল হওয়ার আগে মারা যায়, তবে সে জান্নাতে যাবে।' (বুখারি)
হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সময় তেত্রিশবার সুবহানাল্লাহ, তেত্রিশবার আলহামদুলিল্লাহ, তেত্রিশবার আল্লাহু আকবার পড়ে এবং একশবার পূর্ণ করার জন্য একবার-লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকা লাহু লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন কাদির-পড়ে তার সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয় যদিও তা সাগরের ফেনাপুঞ্জের সমান হয়।’ (মুসলিম)
ইসতেগফারের মাধ্যমে আল্লাহর আজাব দূরীভূত হয়,পার্থিব সুখ-সমৃদ্ধি অর্জিত হয়। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আল্লাহ এমন নন, তারা ক্ষমা চাইবে অথচ তিনি তাদের শাস্তি দেবেন।’ (সুরা আনফাল : আয়াত ৩৩)
তওবা করলে আল্লাহ যেরূপ খুশি হন
হজরত আবদুল্লহ ইবনে মাসউদ বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, বান্দাহ আল্লাহর কাছে তওবা করলে (পাপ থেকে ফিরে আল্লাহর আনুগত্যের দিকে প্রত্যাবর্তন করলে) আল্লাহ সীমাহীন খুশি হন। তার খুশির তুলনা হলো-এক ব্যক্তি জনমানব শূন্য মরুভূমিতে থেমেছে। তার সঙ্গে তার বাহন, যার পিঠে তার খাদ্য ও পানীয় রয়েছে। সে একটু বিশ্রাম করতে গিয়ে ঘুমিয়ে গিয়েছে। ঘুম থেকে উঠে দেখে যে, তার বাহন হারিয়ে গেছে। মরুভূমির প্রচন্ড রোদ্র ও পিপাসায় সে ক্লান্ত হয়ে নিশ্চিত মৃত্যুকে মেনে নিয়ে একসময় অবসাদে ঘুমিয়ে পড়ে। ঘুম থেকে উঠে সে দেখতে পায় যে, তার উট তার পাশে দাঁড়িয়ে রয়েছে। নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পেয়ে সে এতই খুশি হয় যে,সে আল্লাহর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে গিয়ে বলে ফেলে, হে আল্লাহ, আপনি আমার দাস, আমি আপনার প্রভু। আনন্দের আতিশয্যে সে ভুল করে ফেলে। উট ফিরে আসাতে এ ব্যক্তি যত আনন্দিত হয়েছে কোনো পাপী বান্দা পাপ থেকে ফিরে আসলে বা তওবা করলে আল্লাহ তার চেয়ে বেশি খুশি হন।’ (বুখারি, মুসলিম)
বেশি বেশি তওবা-ইসতেগফারের সুফল
মুমিন মাত্রই আল্লাহ তাআলার কাছে বেশি বেশি তওবা-ইসতেগফার করে। হাদিসে পাকে এসেছে, হজরত আবদ ইবনে বসুর রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, সেই ব্যক্তি সৌভাগ্যবান যে তার আমলনামায় অনেক বেশি ইসতেগফার পেয়েছে।’ (ইবনে মাজাহ)
মনে রাখতে হবে
মাগফেরাত মানে ক্ষমা করা, গাফার ও গুফরান মানে ক্ষমা; ইসতেগফার মানে ক্ষমা চাওয়া ; তওবা মানে ফিরে আসা বা ফিরে যাওয়া, প্রত্যাবর্তন করা, বিরত হওয়া। প্রথম মানুষ প্রথম ভুল করেছেন। সকল মানুষ ভুলকারী, তাদের মাঝে শ্রেষ্ঠ হলো তওবাকারী। (বুখারি)।
আবার মোনাজাত অর্থ কানে কানে কথা বলা বা গোপনে কথা বলা । যেহেতু নিজের পাপের কথা আল্লাহর কাছে গোপনে স্বীকার করা হয় অথবা আপন বিশেষ প্রয়োজন ও চাহিদা বিশ্বস্ত প্রিয়ভাজনের কাছে নির্জনে-নিবৃতে বলা হয়, তা-ই মোনাজাত। মোনাজাত মানে আবেদন বা প্রার্থনা।
নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো বলেন, যে ব্যক্তি দিনে এই ইসতেগফার পাঠ করবেন, সন্ধ্যার আগে তাঁর মৃত্যু হলে তিনি জান্নাতি ; যে ব্যক্তি রাতে এই ইসতেগফার পাঠ করবেন, সকালের আগে তাঁর মৃত্যু হলে তিনি জান্নাতি। (বুখারি)।
তাই আসুন,তওবা-ইসতেগফারকে জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ বানিয়ে নেই। আর শয়তানের ধোঁকায় পড়ে কোনো অপরাধে জড়িয়ে পড়লে সঙ্গে সঙ্গে তওবাতুন নাসুহা বা একনিষ্ঠ তওবা করি। বেশি বেশি পড়ি- ‘আস্তাগফিরুল্লাহাল্লাজি লা ইলাহা ইল্লা হুয়াল হাইয়্যুল কাইয়্যুম,ওয়া আতুবু ইলাইহি।’
লেখক : ইসলামি চিন্তক ও গবেষক