প্রতিবন্ধী কিশোরীকে ধর্ষণ, টাকা দিয়ে মীমাংসার চেষ্টা


অনলাইন ডেস্ক: , আপডেট করা হয়েছে : 28-02-2022

প্রতিবন্ধী কিশোরীকে ধর্ষণ, টাকা দিয়ে মীমাংসার চেষ্টা

লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে এক প্রতিবন্ধী কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। গত সোমবার (২১ ফেব্রুয়ারি) উপজেলার কাকিনা ইউনিয়নের মহিষামুড়ি ওয়ার্ডের মৈতালি বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় রবিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে প্রতিবন্ধীর মা কালীগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গোলাম রসূল। তিনি আরো বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে, অভিযুক্ত ব্যক্তিকে দ্রুত গ্রেপ্তার করা হবে।

অভিযুক্ত রহিম বাদশা (৩২) মহিষামুড়ি ওয়ার্ডের মৈতালি বাজার এলাকার নুরুজ্জামানের ছেলে।

জানা গেছে, গত সোমবার (২১ ফেব্রুয়ারি) প্রতিবন্ধী কিশোরীর নানা অসুস্থ থাকার কারণে কিশোরীর বাবা-মা তার অসুস্থ নানাকে দেখতে তুষভান্ডার ইউনিয়নের আমিনগঞ্জ এলাকায় যান। বাড়িতে লোকজন না থাকার কারণে ওইদিন শিলাবৃষ্টি ঝড়ের সময় প্রতিবন্ধী কিশোরীকে বাড়িতে একা পেয়ে ধর্ষণ করে পালিয়ে যায় রহিম বাদশা। সন্ধ্যার দিকে প্রতিবন্ধী কিশোরীর বাবা-মা বাড়িতে এলে সে তাদের ঘটনাটি খুলে বলে।  পরে রহিম বাদশা বাজার থেকে বাড়ির দিকে আসতে থাকলে প্রতিবন্ধী কিশোরীর বাবা রহিম বাদশাকে রাস্তায় শার্টের কলার ধরে টানা-হেচরা শুরু করলে স্থানীয় লোকজন ঘটনাটি জানতে পারেন।

রহিম বাদশা প্রভাবশালী হওয়ায় মেয়েটির পরিবারকে দুই দিন বাড়ি থেকে বের হতে দেয়নি। বিষয়টি নিয়ে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি মেয়ের চাচা প্রতিবন্ধী কিশোরীকে নিয়ে কালিগঞ্জ থানা অভিমুখে অভিযোগ করার উদ্দেশ্যে আসলে স্থানীয় দুজন ব্যক্তি নানা ধরনের প্রলোভন দেখিয়ে মেয়েটিকে অভিযোগ করা থেকে বিরত রাখে এবং প্রতিবন্ধী কিশোরী ও তার চাচাকে বাড়িতে ফেরত পাঠিয়ে দেয়। ওই দিন রাতেই মেয়েটিকে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। 

এ বিষয়ে মেয়ের চাচা জানান, প্রতিবন্ধী ভাতিজিকে নিয়ে অভিযোগ করার উদ্দেশ্যে আমি থানায় আসলে আমজাদ হাজীর ছেলে ঝান্টু ও  আমিরের ছেলে খালেক বিষয়টির সমাধান করবেন বলে আশ্বস্ত করে আমাদেরকে বাড়ি ফেরত পাঠিয়ে দেন। পরবর্তী সময়ে এই দুই ব্যক্তি স্থানীয়ভাবে বসে এ ঘটনার কোনো আইনগত ব্যবস্থা না নিয়ে প্রতিবন্ধী কিশোরীর ইজ্জতের মূল্য তিন লক্ষ টাকা নির্ধারণ করে মেয়েটির পরিবারকে এক লক্ষ আশি হাজার টাকা দেন বলে জানতে পেরেছি। শুধু তাই নয় ৮নং কাকিনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তাহির তাহু সাহেবও বিষয়টি অবগত রয়েছেন বলে তিনি জানান।

৯নং মহিষামুড়ি ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রমজান আলী ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ঘটনাটি পুরোপুরি সত্য। বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত রয়েছি। প্রতিবন্ধী কিশোরীর পরিবারকে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছি। কিন্তু জানতে পেরেছি স্থানীয় দালাল চক্র বিষয়টি টাকার বিনিময়ে ধামাচাপা দিয়েছে।

কাকিনা উত্তরন ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক ঝান্টু ও খালেকের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তারা সমাধানে কথা স্বীকার করে বলেন, ঘটনাটি তাদের একটি পারিবারিক বিষয়। তবে তারা পুরোপুরি সালিশ দরবারের মাধ্যমে রফাদফা করতে পারেননি বলে দাবি করেন।

ওসি জানান, সালিশের মাধ্যমে মিমাংসার চেষ্টা করা হয়েছিল, গ্রাম্য মাতব্বররা টাকাও খেয়েছে এমনটাই জানতে পেরেছি। যারাই এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদেরকেই আইনের আওতায় আনা হবে।

রাজশাহীর সময় / এম জি 


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]