বিক্ষোভে উত্তাল ফ্রান্স। বিক্ষোভের আগুনে তেজ বাড়ছে ক্রমেই। পুলিশের গুলিতে ১৭ বছর বয়সি নাহেল নামে এক কিশোরের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত ফ্রান্স। রাজধানী প্যারিসের অবস্থা তথৈবচ। এবার মেয়রের বাড়িতে হামলা চালালেন বিক্ষোভকারীরা। প্রতিবাদীরা ঢুকে পড়ল মেয়রের বাড়িতে। অভিযোগ বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার ছক ছিল তাঁদের!
শনিবার রাতে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে নতুন করে উত্তেজনা ছড়ায় প্যারিসে। এমনিতেই গত দিন তিনেক ধরে ফ্রান্সের বিভিন্ন জায়গায় উত্তেজনার পারদ চড়ে রয়েছে। শনিবার রাতে একদল প্রতিবাদী গাড়ি করে মেয়রের বাড়ির কাছে চলে আসেন। তারপর বাড়ির দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে পড়েন তাঁরা। তখন পরিবারের সঙ্গে ঘুমাচ্ছিলেন মেয়র ভিনসেন্ট জিনব্রুন। বাড়িতে ছিল তাঁর স্ত্রী ও সন্তান।
অভিযোগ, গোটা বাড়িতে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করেছিলেন উত্তেজিত জনতা। যদিও পুলিশি তৎপরতায় রক্ষা পান বলেও জানান জিনব্রুন। রবিবার নিজেই শনিবার রাতের ঘটনা টুইটারে জানান প্যারিসের মেয়র। তিনি লেখেন, ‘আমাকে ও আমার পরিবারকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারার উদ্দেশ্যে নিয়েই বাড়িতে ঢুকেছিল বিক্ষোভকারীরা।’ এই ঘটনায় আহত হয়েছেন তাঁর সন্তান, এমনই জানিয়েছেন জিনব্রুন।
প্যারিসের উপকণ্ঠে মফস্বল শহর নানতে মায়ের সঙ্গে থাকত আলজেরিয়ার বংশোদ্ভূত ১৭ বছরের কিশোর নাহেল। গত মঙ্গলবার ট্রাফিক স্টপে তার গাড়ি আটকায় পুলিশ। সেই সময়ে পথ চলতি এক ব্যক্তি গোটা ঘটনাটা ভিডিও রেকর্ড করে নেন। তাতে দেখা যাচ্ছে, গাড়িটা থামিয়ে দুই পুলিশ অফিসার মাথা ঝুঁকিয়ে কথা বলছেন। একজনের হাতে রয়েছে একটি পিস্তল। তার পর হঠাৎই ওই অফিসার গুলি করে দেন নাহেলকে।
এই ঘটনা জানাজানি হতেই বিক্ষোভে ফেটে পড়েন জনতা। বিক্ষোভের আগুন জ্বলতে শুরু করে ফ্রান্স জুড়ে। ‘দ্য পুলিশ কিলস’ স্লোগান তুলে শয়ে শয়ে মানুষ রাস্তায় নেমে পড়েছে। তাঁদের অভিযোগ, জাতিগত পক্ষপাতে আক্রান্ত ফরাসি পুলিশ।
বিক্ষোভ দমাতে দেশজুড়ে ৪৫ হাজার পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। হাজার জনের বেশি বিক্ষোভকারী গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশি তৎপরতা যত বাড়ছে, বিক্ষোভকারীদের বিক্ষোভের তেজ ততই আকাশ ছুঁয়ে ফেলছে। কোনও নিয়ম মানতে নারাজ তাঁরা।