ঈদ মুমিন মুসলমানের প্রধান ধর্মীয় উৎসব। ঈদের দিন ও রাতগুলোতে বিশেষ করণীয় রয়েছে। এসব মাসআলা-মাসায়িল, নিয়ম-কানুন, ফজিলত ও সুন্নতগুলো জেনে নেওয়া আবশ্যক। তাহলো-
দুই ঈদের রাতের ফজিলত
নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি ঈদের রাতে জাগ্রত থেকে ইবাদতে নিমগ্ন থাকবে তার অন্তর সেই দিনও মৃত্যু বরণ করবে না; যে দিন সকলের অন্তর মৃতপ্রায় হয়ে যাবে।’ (ইবনে মাজাহ)
তাকবিরে তাশরিক
জিলহজ মাসের ৯ তারিখ ফজরের ফরজ নামাজের পর থেকে ১৩ তারিখ আসরের ফরজ নামাজ পর্যন্ত প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর সকল সাবালক পুরুষ ও নারীর জন্য এ তাকবির একবার বলা ওয়াজিব। তিনবার বলা মোস্তাহাব। পুরুষগণ উচ্চস্বরে আর নারীগণ নিম্নস্বরে পড়বে। তাহলো-
اللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ لَا إلَهَ إلَّا اللَّهُ وَاَللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ وَلِلَّهِ الْحَمْدُ
উচ্চারণ : ‘আল্লাহু আকবর, আল্লাহু আকবর; লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু; ওয়াল্লাহু আকবর, আল্লাহু আকবর; ওয়ালিল্লাহিল হামদ্।’
অর্থ : ’আল্লাহ মহান, আল্লাহ মহান; আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই; আল্লাহ মহান, আল্লাহ মহান; সব প্রশংসা মহান আল্লাহ জন্য।’
ঈদের সুন্নত কাজসমূহ
১. সকালে ঘুম থেকে ওঠা। (বায়হাকি)
২. মেসওয়াক করা। (তাহতাবি আলা মারাকিল ফালাহ)
৩. গোসল করা। (ইবনে মাজাহ)
৪. শরিয়ত সম্মত সাজ-সজ্জা করা। (বুখারি)
৫. সামর্থ অনুযায়ী উত্তম পোশাক পরা। উল্লেখ্য, সুন্নত আদায়ের জন্য নতুন পোশাক জরুরি নয়।
৬. সুগন্ধি ব্যবহার করা। (দুররুল মুখতার)
৭. ঈদুল ফিতরে ঈদগাহে যাওয়ার আগে মিষ্টি জাতীয় জিনিস, যেমন- খেজুর/সেমাই/ফিন্নি ইত্যাদি খাওয়া। তবে ঈদুল আজহাতে কিছু না খেয়ে ঈদগাহে যাওয়া এবং ঈদের নামাজের পর নিজের কোরবানির পশুর গোশত দ্বারা খাবার খাওয়া উত্তম।’ (বুখারি, দুররুল মুখতার)
৮. সকাল সকাল ঈদগাহে যাওয়া। (আবু দাউদ)
৯. ঈদুল ফিতরে ঈদগাহে যাওয়ার আগে সাদাকায়ে ফিতর আদায় করা। (দুররুল মুখতার)
১০. ঈদের নামাজ ঈদগাহে আদায় করা সুন্নত। বিনা ওজরে মসজিদে আদায় করা উচিত নয়। (বুখারি)
১১. এক রাস্তায় ঈদগাহে যাওয়া সম্ভব হলে ফেরার সময় অন্য রাস্তা দিয়ে ফেরা।’ (বুখারি)
১২. পায়ে হেঁটে ঈদগাহে যাওয়া। (তাহতাবি আলা মারাকিল ফালাহ)
১৩. ঈদুল ফিতরে ঈদগাহে যাওয়ার সময় আস্তে আস্তে এই তাকবির বলতে থাকা-
اللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ لَا إلَهَ إلَّا اللَّهُ وَاَللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ وَلِلَّهِ الْحَمْدُ
উচ্চারণ : ‘আল্লাহু আকবর, আল্লাহু আকবর; লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু; ওয়াল্লাহু আকবর, আল্লাহু আকবর; ওয়ালিল্লাহিল হামদ্।’
অর্থ : ’আল্লাহ মহান, আল্লাহ মহান; আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই; আল্লাহ মহান, আল্লাহ মহান; সব প্রশংসা মহান আল্লাহ জন্য।’
১৪. ঈদুল আজহাতে যাওয়ার সময় এই তাকবির উচ্চস্বরে পড়তে থাকা। (বায়হাকি)
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর সবাইকে জিলহজ মাসের সব আমল যার যার সাধ্য অনুযায়ী করার তাওফিক দান করুন। আমিন।