সাবমেরিনে বেঁচে নেই কেউ, টুকরো হয়ে পড়ে আছে টাইটানিকের কাছেই


তুরজিন তানজিম : , আপডেট করা হয়েছে : 23-06-2023

সাবমেরিনে বেঁচে নেই কেউ, টুকরো হয়ে পড়ে আছে টাইটানিকের কাছেই

টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে যাওয়া সাবমেরিন টাইটানের ধ্বংসাবশেষও উদ্ধার হল টাইটানিকের পাশেই। আটলান্টিকের অতলে গিয়ে মারা গেছেন ওই সাবমেরিনের সব অভিযাত্রী।

বৃহস্পতিবার বিকেলে (আমেরিকার স্থানীয় সময়) মার্কিন উপকূলরক্ষী বাহিনী সাংবাদিক বৈঠক করে এ তথ্য নিশ্চিত করছে। সাবমেরিন টাইটান পরিচালনাকারী সংস্থা ‘ওশানগেট’-এর তরফেও এ কথা জানানো হয়েছে। 

এদিন মার্কিন উপকূলরক্ষী জানায়, পাঁচদিন ধরে নিখোঁজ থাকার পরে সাবমেরিন টাইটানের পাঁচটি বড় টুকরো খুঁজে পাওয়া গিয়েছে। সামনের দিকের একটি ‘নোজ কোন’, প্রেশার হুলের বাইরের অংশ ও সাবমেরিনের আরও একটি বড় অংশ রয়েছে। যেখানে টাইটানিক জাহাজ ধ্বংস হয়েছিল, তার ঠিক পাশেই এগুলো পড়ে রয়েছে। 

রবিবার থেকে কোনও খোঁজ না থাকার পরে হারানো সাবমেরিনের খোঁজে নেমেছিল রোবটচালিত জলযান ‘রোভ’। তারাই সাবমেরিন টাইটানের খোঁজ পায় শেষমেশ। তবে ততক্ষণে সব শেষ। কোস্টগার্ডের শীর্ষ আধিকারিক জন মাগারের কথায়, ‘আমরা এখনও কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। কল্পনাতীত প্রতিকূল পরিস্থিতিতে কাজ হচ্ছে। ভূপৃষ্ঠের প্রায় দু’মাইল নীচে সমুদ্রের তলদেশে চলছে অভিযান। রোবটচালিত জলযান রোভ ওই ধ্বংসাবশেষস্থলের চারপাশে ঘুরছে এখনও। রয়েছে আরও ৯টি জাহাজ। আরও বিস্তারিত অনুসন্ধানের কাজ চলছে। মেডিক্যাল টিম, ইঞ্জিনিয়াররাও রয়েছেন। বিপদের ঝুঁকি নিয়ে এই উদ্ধার অভিযানে শামিল তারাও।

দুর্ঘটনার পর থেকেই নানা প্রশ্ন উঠেছে সমস্ত মহলে। কী করে আস্ত একটা সাবমেরিন নিখোঁজ হল, কী করেই বা তা ধ্বংস হল, কেমন করে ঘটল– গোটা বিষয়টা, বিস্ময়ে হতবাক সকলেই। জন মাগার জানিয়েছেন, এখনই এসব প্রশ্নের উত্তর দেওয়া সহজ নয়। যেমন তথ্য মিলবে, তেমনই তাঁরা সব জানতে পারবেন। 

এদিন সাবনেরিনের ধ্বংসাবশেষ উদ্ধারের পাশাপাশি পাঁচ অভিযাত্রীর মৃত্যুর কথাও জানিয়েছে মার্কিন কোস্টগার্ড। সাবমেরিনের ভিতরে থাকা অবস্থাতেই দম বন্ধ হয়ে মারা যান ৫ জনই। তাঁদের পরিবারকে গভীর সমবেদনা জানিয়েছে তারা। তবে টাইটানের ভিতরে থাকা ওই পাঁচ অভিযাত্রীর দেহ উদ্ধার করা সম্ভব হবে কিনা, তা নিশ্চিত করে বলা যাবে না বলে জানিয়েছেন তাঁরা। 

ওশানগেটের তরফেও এ বিষয়ে বিবৃতি দিয়ে বলা হয়, ‘আমাদের সিইও স্টকটন রাশ, শাহজাদা দাউদ, তাঁর ছেলে সুলেমান দাউদ, হামিশ হার্ডিং, পল নারজিওলেটকে আমরা হারিয়ে ফেলেছি। এ কথা বিশ্বাস করা কঠিন! তাঁরা দুঃসাহসিক অভিযাত্রী ছিলেন, যাঁরা গভীর সমুদ্রে পৌঁছেছিলেন অ্যাডভেঞ্চারের হাত ধরে। এই কঠিন সময়ে তাঁদের পরিবারের সমব্যথী আমরা।’

১৯১২ সালে উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরে ডুবে গেছিল যাত্রীবাহী জাহাজ টাইটানিক। মৃত্যু হয়েছিল দেড় হাজার মানুষের। তার এত বছর পরেও মহাসাগরের তলায় এখনও রয়েছে সেই টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ। সমুদ্র অভিযাত্রীদের কাছে এই ধ্বংসাবশেষ দেখতে যাওয়া ছিল এক বিশেষ অ্যাডভেঞ্চার, যা পরিচালনা করত ‘ওশানগেট’। তাদেরই সাবমেরিন টাইটান যাত্রী-প্রতি ২ কোটি টাকার বিনিময়ে দেখাতে নিয়ে যেত টাইটানিক। গত রবিবারও তেমনই পাঁচ যাত্রীকে নিয়ে সমুদ্রের ১৩ হাজার ফুট গভীরে নেমেছিল টাইটান। তবে যাত্রা শুরুর ১ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট পর থেকেই নিখোঁজ হয়ে যায় আস্ত সে সাবমেরিন। নিখোঁজ ডুবোজাহাজ উদ্ধারে নামে আমেরিকা এবং কানাডার সেনা। সাগর তোলপাড় করে চলছিল সন্ধান। অবশেষে খোঁজ মিলল তার। তবে পরিণতি বড়ই মর্মান্তিক।


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]