জাপানের সাবেক উপমন্ত্রী এবং সাইফার কোরের চিফ অপারেটিং অফিসার মোটোইউকি
ওদাচি বলেছেন, বাংলাদেশের মেগা প্রকল্প দেখে আমি বিস্মিত। অন্তর্ভুক্তিমূলক
উন্নয়নকে সমর্থন করার জন্য নগদ অর্থের লেনদেনের ঝামেলা এড়াতে বাংলাদেশের
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উচিত ডিজিটাল কারেন্সি সিস্টেম চালু করা। রাজধানীর
একটি হোটেলে বুধবার বাংলাদেশ প্রতিদিন ছাড়াও আরও তিনটি পত্রিকার সঙ্গে
আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। মোটোইউকি ওদাচি বলেন, এক দশকের বেশি সময়ে
বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন ও অগ্রগতি হয়েছে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক
প্রবৃদ্ধিকে সমর্থন করার জন্য ডিজিটাল মুদ্রা চালু করার ওপর জোর দেন তিনি।
সার্টিফাইড পাবলিক অ্যাকাউন্ট্যান্ট ওদাচি বলেন, ছয় বছর আগে আমি প্রথম
ঢাকায় এসেছিলাম। বাংলাদেশের মেগা প্রকল্পগুলো দেখে আমি বিস্মিত। একটি
স্মার্ট অর্থনীতিতে অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নকে সমর্থন করার জন্য নগদ টাকার
লেনদেন এড়িয়ে চলা উচিত। নগদ টাকার লেনদেনের ঝামেলা এড়াতে সেন্ট্রাল ব্যাংক
ডিজিটাল কারেন্সি (সিবিডিসি) সিস্টেম গ্রহণ করা উচিত। ওদাচি বলেন, বৈশ্বিক
জিডিপির ৯৫ শতাংশের বেশি প্রতিনিধিত্বকারী ১১৪টি দেশ এখন সিবিডিসি সিস্টেম
নেওয়ার সম্ভাব্যতা যাচাই করছে। আটলান্টিক কাউন্সিলের মতে ২০২০ সালের মে
মাসে ৩৫টি দেশ সিবিডিসি সিস্টেম গ্রহণ করেছে। ২০২৩ সালে ২০টিরও বেশি দেশ
সিবিডিসিকে পাইলট হিসেবে ব্যবহার করার পরিকল্পনা করছে। অস্ট্রেলিয়া,
থাইল্যান্ড, ব্রাজিল, ভারত, দক্ষিণ কোরিয়া এবং রাশিয়া সিবিডিসি সিস্টেমের
পাইলট শুরু করতে চায়। এ সময় যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব
টেকনোলজির (এমআইটি) গবেষক তাকাতোশি নাকামুরা বলেন, সেন্ট্রাল ব্যাংক
ডিজিটাল কারেন্সি (সিবিডিসি) সিস্টেমের মাধ্যমে রাজস্ব আয় বাড়ানো যেতে
পারে। একই সঙ্গে ক্যাশলেস লেনদেন এবং আর্থিক অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে
বাংলাদেশের অর্থনীতিকে স্মার্ট করতে পারে। তাই ডিজিটাল অর্থনীতিতে রূপান্তর
করতে সেন্ট্রাল ব্যাংক ডিজিটাল কারেন্সি (সিবিডিসি) সিস্টেম গ্রহণ করার
সম্ভাবনা রয়েছে বাংলাদেশের। সিবিডিসি নোট ইস্যু করার খরচ কমানোর মাধ্যমে
নগদ অর্থ ব্যবস্থাপনা করে থাকে। জাপানি সিবিডিসি সিস্টেম কোম্পানি সাইফার
কোরের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) তাকাতোশি নাকামুরা বলেন, ডিজিটাল
মুদ্রা ডিজিটাল অর্থনীতির সম্প্রসারণ এবং কর আদায়ের হারকে বৃদ্ধি করতে
সহায়তা করবে। নাকামুরা বলেন, ইন্দোনেশিয়ায় শত শত দ্বীপ রয়েছে শহর থেকে অনেক
দূরে। সেখানে নগদ টাকা লেনদেনের জন্য কোনো অটোমেটেড টেলার মেশিন (এটিএম)
বুথ নেই। সিবিডিসি সিস্টেম শুধু ইন্টারনেট সংযোগের মাধ্যমে দুর্গম জায়গাতেও
আর্থিক সেবা পৌঁছাতে পারে এবং সেবা দিতে পারে। তারা সিবিডিসি সিস্টেমের
মাধ্যমে প্রযুক্তিগত সহযোগিতা বাড়ানোর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট
সিস্টেম বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করেছেন। জাপানি বিশেষজ্ঞ নাকামুরা
আশা করেন, সিবিডিসি অর্থনীতিকে সহজতর করে এবং রাজস্ব খাত থেকে রাজস্ব
সংগ্রহ সম্প্রসারণের মাধ্যমে বাংলাদেশের উন্নয়ন যাত্রায় সহায়তা করবে। তিনি
বলেন, সিবিডিসির মাধ্যমে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি অর্জন করা সম্ভব যেখানে সব
নাগরিক উপকৃত হতে পারবেন।