রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে অন্তর্ভুক্তির সুযোগ নেই


অনলাইন ডেস্ক , আপডেট করা হয়েছে : 12-06-2023

রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে অন্তর্ভুক্তির সুযোগ নেই

মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের এ দেশে অন্তর্ভুক্তির কোনো সুযোগ নেই বলে বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের জানিয়েছে সরকার। গতকাল রবিবার ঢাকায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে উপসাগরীয় দেশগুলোসহ কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া এ কথা জানান।

মুখ্য সচিব বলেন, সংকটের একমাত্র সমাধান রোহিঙ্গাদের নিজ দেশ মিয়ানমারে মর্যাদাপূর্ণ স্থায়ী প্রত্যাবাসনের মধ্যে নিহিত। রোহিঙ্গাদের ‘স্থানীয় অন্তর্ভুক্তির’ কোনো ধরনের সুযোগ নেই।

 

প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব গতকাল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের মানবিক সহায়তায় সাড়া দেওয়াসংক্রান্ত জিসিসি প্লাস ফোরামের সভায় সভাপতিত্ব করেন। এ সময় তিনি ভাসানচরে সম্প্রসারিত সাময়িক শেল্টার তৈরিতে রাষ্ট্রদূতদের সহযোগিতা কামনা করেন।

সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, কুয়েত, ওমান, ফিলিস্তিন, ইরান, তুরস্ক, ইরাক, চীনের রাষ্ট্রদূতসহ জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক, ইউএনএইচসিআর ও বিশ্ব খাদ্য সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। পররাষ্ট্রসচিব, জননিরাপত্তাসচিব, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের সচিব এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিব বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

 

জিসিসি প্লাস ফোরামের এ সভায় বর্তমান পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে আশ্রয় গ্রহণকারী রোহিঙ্গাদের খাদ্যসহ বিভিন্ন সহায়তা দেওয়ার বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে রোহিঙ্গাদের দ্রুত নিজ দেশ মিয়ানমারে নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ ও স্থায়ী প্রত্যাবাসনে বিশ্ব সম্প্রদায়ের সমর্থন ও সহায়তা বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়।

বর্তমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটের কারণে রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক ও খাদ্য সহায়তায় বিশ্ব খাদ্য সংস্থাসহ সাহায্যকারী সংগঠনগুলোর মাথাপিছু বরাদ্দ কমার বিষয়টি তুলে ধরে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক ও ডাব্লিউএফপির প্রতিনিধি সবাইকে সহায়তার আহ্বান জানান।

বৈঠকে সৌদি আরব, ইরান, ফিলিস্তিন, তুরস্ক, কাতার, কুয়েত ও চীনের রাষ্ট্রদূতরা নিজ নিজ দেশের অবস্থান তুলে ধরেন এবং রোহিঙ্গা সংকটে বাংলাদেশের যেকোনো উদ্যোগে পাশে থেকে সমর্থন ও সহায়তা দেওয়ার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।

 

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে ট্রায়ালের বিরুদ্ধে যাওয়ার কোনো যুক্তি নেই : এদিকে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম গতকাল ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, পাইলট প্রকল্পের অধীনে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিরোধিতা করার কোনো কারণ তিনি দেখছেন না।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এটি একটি ট্রায়াল এবং এর মাধ্যমে খুব ছোট আকারে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য রোহিঙ্গাদের রাখাইনে পাঠানো হবে। সেখানে অস্বস্তিবোধ করলে তাদের ফিরিয়ে নিয়ে আসার সুযোগ রয়েছে।’ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এটি একটি ট্রায়াল হচ্ছে এবং এটি বড় ধরনের কোনো প্রত্যাবাসন নয়। এটি যদি সফল না হয়, তাহলে আমরা তাদের ফেরত নিয়ে আসতে পারব।

সে ক্ষেত্রে এটির বিরুদ্ধে যাওয়ার আমরা কোনো যুক্তি দেখি না।’

 

শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘রোহিঙ্গারা স্বেচ্ছায় যাচ্ছে। এটি দেখার জন্য জাতিসংঘের সঙ্গে যে প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা হয়েছে তা বলবৎ আছে। তবে জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার সনদ নিয়ে রোহিঙ্গাদের যেতে হবে—এ ধরনের কোনো চুক্তি করা হয়নি। আমাদের প্রচেষ্টা সম্পর্কে তাদের জানানো হয়েছে।’

এদিকে মিয়ানমার বিষয়ক জাতিসংঘের স্পেশাল র‌্যাপোর্টিয়ার ট্রম অ্যান্ড্রুজের পাইলট প্রত্যাবাসন প্রকল্প স্থগিত রাখার আহ্বানের বিষয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘তিনি মিয়ানমার বিষয়ক র‌্যাপোর্টিয়ার। তাঁর কার্যক্রম মিয়ানমারের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকা উচিত। তিনি যেন পরিস্থিতি আরো ভালোমতো বুঝতে পারেন, সে জন্য আমরা তাঁকে বাংলাদেশে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম। তিনি কক্সবাজার ঘুরে গেছেন। কিন্তু যে বিষয়গুলো তিনি বলেছেন এবং যে ভাষায় বলেছেন, এটি আমাদের প্রচেষ্টাকে খাটো এবং অসম্মান প্রকাশ করে। আমরা বিষয়টি জাতিসংঘকে জানাব।’

চার রোহিঙ্গা পরিবারকে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার ইউএনএইচসিআরের খাবার না দেওয়ার বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এটি খুবই দুঃখজনক যে যাদের ওই ট্রানজিট ক্যাম্পে রাখা হয়েছিল, তারা জাতিসংঘ থেকে খাবার পায়নি। আশা করি জাতিসংঘের সদর দপ্তর এটি নজরে নেবে। এ ধরনের দুঃখজনক ঘটনা যেন না ঘটে, সেটি অবশ্যই জাতিসংঘ দেখবে।’


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]