মাউন্ট এভারেস্টের তুলনায় চার থেকে পাঁচ গুণ উঁচু পর্বতের সন্ধান পেলেন ভূবিজ্ঞানীরা। তবে ভূপৃষ্ঠের উপরে নয়। এই বিশাল পাহাড়ের অবস্থান পৃথিবীর ভূভাগের গভীরে। ভূগর্ভের কেন্দ্রমণ্ডল বা কোর এবং গুরুমণ্ডলের বা ম্যান্টলের মধ্যবর্তী অংশে দাঁড়িয়ে আছে এই পর্বত।
কিন্তু এত দিন কেন জানা যায়নি এর অস্তিত্ব? ভূবিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন ভূমিকম্প ও পরীক্ষামূলক পারমাণবিক বিস্ফোরণের অভিঘাতে সৃষ্ট তরঙ্গের সেসমিক ডেটা বিশ্লেষণ করে পর্বতটির কথা জানা গিয়েছে। এই গবেষণায় দীর্ঘ দিন ধরেই ব্যস্ত অ্যারিজোনা স্টেট ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীরা। গবেষণার নানা পর্বে তাঁদের সাহায্য করেছে অ্যান্টার্কটিকার সেসমোলজি সেন্টার।
ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৫.৫ মাইল বা ৮.৮ কিমি উঁচু মাউন্ট এভারেস্ট। সেখানে ভূঅভ্যন্তরে থাকা পর্বতটি ২৪ মাইল বা ৩৮ কিলোমিটার উঁচু। অ্যান্টার্কটিকা বা দক্ষিণ মেরুর একাধিক অংশ থেকে কয়েক হাজার সেসমিক রেকর্ড বিশ্লেষণ করা হয়েছে। তার পর হাই ডেফিনিশন ইমেজিং পদ্ধতির মাধ্যমে কোর এবং ম্যান্টলের সীমান্তে কিছু ব্যতিক্রমী উপাদানের অস্তিত্ব সংবাদ মিলেছে। সেগুলি পর্যালোচনা করেই বিজ্ঞানীদের ধারণা, সেখানে এমন এক সুবিশাল পর্বত রয়েছে, যার উচ্চতা মাউন্ট এভারেস্টের তুলনায় ৫ গুণ।
কী করে জন্ম হল এই পর্বতের, সে বিষয়ে এখনও সহমত নন বিজ্ঞানীরা। একটি মত বলছে, মহাসাগরীয় ক্রাস্ট পৃথিবীর অভ্যন্তরে বলের সঙ্গে প্রবেশ করার ফলেই এই পাহাড়ের জন্ম। অন্য একটি মতের দাবি, টেকটনিক প্লেট গুরুমণ্ডলের ভিতরে প্রবেশ করে গুরুমণ্ডল ও কেন্দ্র মণ্ডলের মধ্যে প্রবেশ করে বিস্তৃত হয়েছে। তার জেরেই জন্ম হয়েছে এই বিশাল পর্বতের। ব্যাসল্ট, রূপান্তরিত পাললিক শিলা-সহ নানা উপাদান এই পর্বতে আছে বলে ধারণা বিজ্ঞানীদের। এই আবিষ্কার ভূবিজ্ঞানের বহু অনাবিষ্কৃত দরজা খুলে দেবে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।