মানুষ গাধা হলে বিপদ। কিন্তু গাধারা সংখ্যায় বাড়লে বদলে দিতে পারে একটি দেশের অর্থনীতি। অন্তত পাকিস্তানের ক্ষেত্রে তেমনই দাওয়াই বাতলেছেন সে দেশের অর্থনীতির উপদেষ্টা এবং অর্থ বিষয়ক সংসদীয় কমিটি।
পাকিস্তানের পশুদের মধ্যে গাধার জন্মহার সবচেয়ে বেশি। সংখ্যাটা এতটাই বেশি যে গাধা পালকেরা পড়েছে মহা বিপাকে। বিপর্যস্ত অর্থনীতিতে তাদের নিজেদেরই খাবারের টানাটানি। তার উপর গন্ডায় গন্ডায় গাধা প্রতিপালন কঠিন হয়ে পড়েছে।
পাকিস্তানের আর্থিক হাল এখন এতটাই খারাপ যে বহু সরকারি অফিস সপ্তাহে মাত্র দুদিন খোলে। সরকারি কর্মচারীদের বেতন বন্ধ। ভারতের মতো দেশ থেকেও কূটনৈতিক মিশনের অর্ধেক কর্মচারীকে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বিদেশমন্ত্রী বিলাবল ভুট্টো ঘোষণা করেছেন, তাঁর বিদেশ সফরের খরচের অনেকটাই আপাতত নিজের পকেট থেকে খরচ করবেন।
দিল্লিতে পাক দূতাবাস কর্মচারীদের ছেলেমেয়েদের পড়াশুনোর জন্য একটি স্কুল ছিল পাকিস্তান বোর্ডের অধীনে। অর্থাভাবে সেটি বন্ধ করে দেওয়া হয় গত মাসে। নিউইয়র্কে দেশের পুরনো দূতাবাস ভবন সম্প্রতি বেচে দিয়েছে পাক সরকার। ওয়াশিংটনে একটি হোটেল ছিল পাকিস্তান সরকারের। সেটি লিজ দিয়েছে সে দেশের সরকার। উদ্দেশ্য খরচ কমানো এবং আয় বৃদ্ধি।
তাতেও আর্থিক হাল ফেরার লক্ষণ নেই। দেশে জিনিসপত্রের দাম আকাশ ছোঁয়া। এক পিস ডিমের দাম পাকিস্তানি মুদ্রায় পঞ্চাশ টাকা। মানুষ কেনাকাটা বন্ধ করায় বিদেশি কোম্পানি ব্যবসা গোটাচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে ফের চিনে বিপুল সংখ্যায় গাধা রপ্তানির পরামর্শ দিয়েছেন আর্থিক বিশেষজ্ঞরা। পাকিস্তানে প্রায় পাঁচ কোটি গাধা আছে। দিন দিন সেগুলির বংশ বৃদ্ধি হচ্ছে।
অতীতেও চিনে গাধা রপ্তানি করেছে পাকিস্তান। তবে সেটা চিনের অনুরোধে। এবার পাক সরকার বেজিংয়ের কাছে আর্জি জানিয়েছে, তাদের গাধার ভার লাঘব করতে। কিন্তু চিন এতদিনে গাধা উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে উঠেছে। পাক প্রজাতির গাধাই উৎপাদন করছে চিন।
চিনের এত গাধা প্রীতির কারণ কী? আসলে গাধার চামড়ায় থাকা এক ধরনের প্রোটিন থেকে চিন বিশেষ ধরনের দেশিয় ওষুধ তৈরি করে যা মানুষের শরীরে ইমিউনিটি অর্থাৎ সক্ষমতা বাড়ায়। চিন সেই ওষুধ বিদেশে রপ্তানি করেও বিপুল ডলার রোজগার করে।
পাকিস্তান চাইছে চিন আগের মতো সরাসরি পাকিস্তানের গাধা ওষুধ তৈরিতে ব্যবহার করুক। দু দেশের কথা শুরু হয়েছে। দেখা যাক পাকিস্তানি গাধারা শেষ পর্যন্ত দেশকে দেউলিয়া হওয়া থেকে রক্ষা করতে পারে কিনা।