নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতাল থেকে চুরি হওয়া ১ দিনের নবজাত শিশুকে অবশেষে কুষ্টিয়ার পোরাদহ থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। একই সঙ্গে চুরির সঙ্গে জড়িত মূল অভিযুক্ত কাজলী বেগম ওরফে কাজলদার (৩৫) এক নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
নবজাতকটি জেলার নলডাঙ্গা উপজেলার খাজুরা ইউনিয়নের মহিষডাঙ্গা গ্রামের মাহফুজুর রহমান পলাশ ও হাসনা হেনা শিল্পী নামে এক দম্পতির প্রথম সন্তান।
শনিবার (১০ জুন) সকালে নাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাছিম আহম্মেদ এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
শনিবার দুপুর ১২ টায় নবজাতক চুরি হওয়া ও উদ্ধার প্রসঙ্গে প্রেস ব্রিফিং করে বিস্তারিত জানিয়েছেন পুলিশ সুপার সাইফুর রহমান।
ওসি নাছিম আহম্মেদ বলেন, বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর নাটোর সদর থানা পুলিশের সাইবার টিমসহ ৫টি টিম অভিযান শুরু করে।
অবশেষে কুষ্টিয়ার পোরাদহ থেকে উদ্ধার করা হয়। শুক্রবার (৯ জুন) দুপুরে হাসপাতালের প্রসূতি ওয়ার্ড থেকে সেবিকার পোশাক পড়া মধ্য বয়সী এক নারী ডাক্তার দেখানোর নাম করে দাদির কোল থেকে ওই নবজাতকটিকে চুরি করে নিয়ে যায়।
পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রে জানায়, গৃহবধূ হাসনা হেনা শিল্পী বুধবার (৭ জুন) সন্তান প্রসবের জন্য নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালের প্রসূতি ওয়ার্ডে ভর্তি হয়। বৃহস্পতিবার (৮ জুন) দুপুর ১২টার দিকে তিনি একটি কন্যা সন্তান প্রসব করেন। নবজাতকটি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত থাকায় কিছু সময়ের মধ্যেই তাকে হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে নিয়ে ভর্তি করা হয়।
শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি করা হলেও শিশুটি গাইনি ওয়ার্ডের ৯ নম্বর বেডে তার মায়ের সঙ্গেই ছিল। শুক্রবার সকালে হাসনা হেনা শিল্পীর সঙ্গে তার শাশুড়ি খায়রুন নাহারকে রেখে অন্যরা বাড়ি যায়। এই সুযোগে দুপুর পৌনে ১২টার দিকে হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ডের ৯ নম্বর বেড থেকে সেবিকার পোশাক পড়া এক নারী নবজাতকটিকে হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে নিয়ে নিউমোনিয়ার চিকিৎসা দেওয়ার কথা বলে দাদির নিকট থেকে নিয়ে যায়।
কিছুক্ষণ পর নবজাতকের দাদি খায়রুন নাহার শিশু ওয়ার্ডে ছুটে গিয়ে ওই নারী ও তার নাতনীকে আর খুঁজে পায়নি। তার চিৎকারে হাসপাতালের লোকজন বিষয়টি পুলিশে জানায়। খবর পেয়ে পুলিশ কর্মকর্তারা তাৎক্ষণিক হাসপাতালে ছুটে আসেন।
তারা হাসপাতালের সিসিটিভির ফুটেজ পরীক্ষা করে দেখেন বেলা ১১টা ৩৬ মিনিটে সেবিকার পোশাক পড়া মধ্য বয়সী ওই নারী নবজাতকটিকে কোলে নিয়ে সোজা হাসপাতালের মেইন গেট দিয়ে বের হয়ে একটি অটোরিকশা নিয়ে বাহিরে চলে যায়।
খবর পেয়ে পুলিশ তাৎক্ষণিক হাসপাতালে আসেন এবং সিসিটিভির ফুটেজ দেখে ওই নারীকে আটক এবং শিশুটিকে উদ্ধার করতে অভিযান শুরু করেন।