মৌসুম ছাড়া ফল দিতে পারেন যিনি, বৃদ্ধ বয়সে হজরত জাকারিয়া ও হজরত ইবরাহিম আলাইহিস সালামকে সন্তান দিয়েছেন যিনি, তিনিই মহান আল্লাহ। তিনি চাইলে যে কোনো নিঃসন্তান দম্পতিকে দান করতে পারেন সন্তান। তার কাছে যেমন কোনো কিছুর অভাব নেই তেমনি তার কাছে কোনো কিছু অসাধ্য নয়।
যেসব দম্পতি নিঃসন্তান। যারা সন্তান চান। তারা আল্লাহর কাছে চান। আল্লাহ যাকে সন্তান দান করেন, কোনো রোগ, কোনো দুর্বলতা বা কোনো সমস্যাই তার সামনে বাঁধা হয়ে দাড়াতে পারে না । আর আল্লাহ যাকে সন্তান দান করেন না, অতি তুচ্ছ কারণেই সে সন্তান লাভ করতে ব্যর্থ হয়। মহান আল্লাহ কোরআনে পাকে ঘোষণা করেন-
يَهَبُ لِمَن يَشَآءُ إِنَٰثٗا وَيَهَبُ لِمَن يَشَآءُ ٱلذُّكُورَ أَوۡ يُزَوِّجُهُمۡ ذُكۡرَانٗا وَإِنَٰثٗاۖ وَيَجۡعَلُ مَن يَشَآءُ عَقِيمًاۚ
‘আল্লাহ যাকে ইচ্ছা কন্যা সন্তান দান করেন, যাকে ইচ্ছা ছেলে সন্তান দান করেন অথবা ছেলে-মেয়ে উভয়ই দান করেন। আবার যাকে ইচ্ছে বন্ধ্যা করেন।’ (সুরা আশ-শুরা: আয়াত ৫০)
সুতরাং আল্লাহর কাছে চাওয়া ছাড়া সন্তান পাওয়ার বিকল্প কোনো পথ নেই। নিঃসন্তান দম্পতির উচিত, হজরত জাকারিয়া আলাইহিস সালাম ও হজরত ইবরাহিম আলাইহিস সালামের মতো আল্লাহর কাছে সন্তান চাওয়া। একনিষ্ঠ মনে নিজে মতো করে নিজের ভাষায় তাঁরই কাছে নেক সুস্থ ও সুন্দর সন্তান কামনা করে দোয়া করতে থাকা। তিনি বান্দার ডাকে সাড়া দিলে অবশ্যই বান্দা সন্তান লাভ করবেন।
হজরত জাকারিয়া আলাইহিস সালামের আহ্বান
হজরত জাকারিয়া আলাইহিস সালাম বুড়ো বয়সেও নিঃসন্তান ছিলেন। তিনি লক্ষ্য করলেন, আল্লাহ তাআলা মৌসুম ছাড়াই হজরত মারইয়াম আলাইহিস সালামকে ফল দান করে রিজিকের ব্যবস্থা করেন। তখন তাঁর মনে সন্তানের জন্য সুপ্ত আকাঙ্ক্ষা জেগে উঠলো। তিনি ভাবলেন, যে আল্লাহ বিনা-মৌসুমে ফল দিতে পারেন, সে আল্লাহ বৃদ্ধদম্পতিকেও সন্তান দান করতে পারেন। যে ভাবনা সেই কাজ। তাই তিনি আল্লাহ তাআলার দরবারে এভাবে দোয়া করলেন-
رَبِّ هَبْ لِي مِن لَّدُنْكَ ذُرِّيَّةً طَيِّبَةً إِنَّكَ سَمِيعُ الدُّعَاء
উচ্চারণ: ‘রাব্বি হাবলি মিল্লাদুংকা জুররিয়্যাতান ইন্নাকা সামিউদ দোয়া।’
অর্থ: ‘হে আমার পালনকর্তা! আপনার কাছ থেকে আমাকে পুত-পবিত্র সন্তান দান করুন। নিশ্চয়ই আপনি প্রার্থনা শ্রবণকারী।’ (সুরা আল-ইমরান: আয়াত ৩৮)
হজরত ইবরাহিম আলাইহিস সালামের দোয়া
বৃদ্ধ বয়সে হজরত ইবরাহিম আলাইহিস সালাম সৎ ছেলে সন্তানের জন্য আল্লাহ তাআলার কাছে দোয়া করেছিলেন। আল্লাহ তাআলা তার দোয়া কবুল করেছিলেন। তাঁকে নেক ছেলে সন্তান দান করেছিলেন। দোয়াটি এই-
رَبِّ هَبْ لِي مِنَ الصَّالِحِينَ
উচ্চারণ: ‘রাব্বি হাবলি মিনাস সালিহিন।’
অর্থ: ‘হে আমার পরওয়ারদেগার! আমাকে এক সৎ ছেলে দান করুন।’ (সুরা সাফফাত: আয়াত ১০০)
কোরআনে উল্লেখিত উভয় পয়গাম্বরের দোয়ায় নিঃসন্তান দম্পতির জন্য রয়েছে সুমহান শিক্ষা। যারা নেক সন্তান কামনা করেন, তাদের করণীয় হলো- কোরআনে ঘোষিত দোয়ার মাধ্যমে আল্লাহর কাছে সন্তান কামনা করা। তবেই আল্লাহ তাআলা তাদের দিতে পারেন নেক সন্তান। আল্লাহ তাআলা কবুল করুন। আমিন।