একাধিক নায়কের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়াতেন কিমি !


তামান্না হাবিব নিশু : , আপডেট করা হয়েছে : 06-06-2023

একাধিক নায়কের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়াতেন কিমি !

আশির দশকের মাঝামাঝি সময়ে পার্শ্বচরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে বলিজগতে পা রাখেন কিমি কাটকর। তার পর রাতারাতি জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন তিনি। কিন্তু হিন্দি ফিল্ম জগতের গোপন কথা প্রকাশ্যে নিয়ে আসার পর অভিনয় থেকে সরে যান তিনি।

১৯৬৫ সালের ১১ ডিসেম্বর মুম্বইয়ে জন্ম কিমির। তবে তাঁর আসল নাম নয়নতারা কাটকর। অভিনয় জগতে নামার পর কিমি নামে অধিক পরিচিত হন তিনি। কিমির বাবা হিন্দি সিনেমার জন্য জুনিয়র আর্টিস্টদের সন্ধান করতেন। হিন্দি ছবিতে পোশাকশিল্পী হিসাবে কাজ করতেন কিমির মা।

বাবা-মা দু’জনেই বলিপাড়ার সঙ্গে যুক্ত হওয়ায় অভিনয়ের প্রতি আগ্রহ জন্মায় কিমির। পড়াশোনার বদলে তাই মডেলিংয়ের দিকে মন থাকত তাঁর। ১৭ বছর বয়সে মডেলিং শুরু করেন তিনি। সৌন্দর্যের জন্য মডেলিংজগতে কম সময়ে নিজের পরিচিতি তৈরি করে ফেলেন কিমি।

বিভিন্ন নামী সংস্থার বিজ্ঞাপনে অভিনয়ের জন্য প্রস্তাব আসতে শুরু করে কিমির কাছে। বলিউডের ছবি নির্মাতারও নজর পড়ে তাঁর প্রতি। মণীশ বহলের বিপরীতে ‘কিস কা খেল’ নামে একটি ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ পান কিম। কিন্তু এই ছবির কাজ কখনও শুরুই হয়নি।Advertisement

১৯৮৫ সালে ‘পত্থর দিল’ নামে একটি ছবিতে পার্শ্বচরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যায় কিমিকে। সেই সময় বলি পরিচালক বব্বর সুভাষ ‘অ্যাডভেঞ্চার্স অফ টারজ়ান’ ছবিতে নায়িকার চরিত্রের জন্য কিমিকে পছন্দ করেন। এই ছবিতে সাহসী দৃশ্যে অভিনয় করেন কিমি।

১৯৮৫ সালে ‘পত্থর দিল’ নামে একটি ছবিতে পার্শ্বচরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যায় কিমিকে। সেই সময় বলি পরিচালক বব্বর সুভাষ ‘অ্যাডভেঞ্চার্স অফ টারজ়ান’ ছবিতে নায়িকার চরিত্রের জন্য কিমিকে পছন্দ করেন। এই ছবিতে সাহসী দৃশ্যে অভিনয় করেন কিমি।

১৯৮৫ সালে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ‘অ্যাডভেঞ্চার্স অফ টারজ়ান’। একই সময় অমিতাভ বচ্চন অভিনীত ‘মর্দ’ এবং ঋষি কপূর অভিনীত ‘রাম তেরি গঙ্গা মইলি’ ছবি দু’টি মুক্তি পায়। কিন্তু অমিতাভ এবং ঋষির ছবি দু’টিকে টক্কর দেয় কিমির ছবিটি। কিমিকে দেখার জন্যই প্রেক্ষাগৃহে ভিড় জমান দর্শক। ‘টারজ়ান গার্ল’ হিসাবেই পরিচিত হন অভিনেত্রী।

অল্প সময়ের মধ্যেই অনুরাগীমহল তৈরি করে ফেলেন কিমি। তাঁর কাছে একের পর এক হিন্দি ছবিতে অভিনয়ের প্রস্তাব আসতে শুরু করে। রাজ বব্বর, জীতেন্দ্র, রজনীকান্ত, অমিতাভ বচ্চন, জ্যাকি শ্রফ, গোবিন্দ এবং অনিল কপূরের সঙ্গে কাজ করেন কিমি।

বলিপাড়ায় কানাঘুষো শোনা যায়, সহ-অভিনেতাদের সঙ্গে নাকি হামেশাই পরকীয়া সম্পর্কে জড়াতেন কিমি। অনিল এবং জ্যাকি— দুই অভিনেতাই যখন বিবাহিত ছিলেন, সে সময় কিমি তাঁদের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়েছিলেন।

এমনকি, মণীশ বহলের সঙ্গে নাকি গোপনে বাগ্‌দান পর্বও সেরে ফেলেছিলেন কিমি। ড্যানি ডেনজ়ংপা, সঞ্জয় দত্ত এবং গোবিন্দের সঙ্গেও নাকি প্রেম করতেন কিমি। যদিও এই বিষয়ে প্রকাশ্যে কিছুই জানাননি অভিনেত্রী।

১৯৯১ সালে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় মুকুল এস আনন্দ পরিচালিত ‘হম’ ছবিটি। এই ছবিতে অমিতাভের বিপরীতে একটি গানের দৃশ্যে অভিনয় করতে দেখা যায় কিমিকে। মুক্তির পর ছবিটি হিট হওয়ার পাশাপাশি গানটিও হিট হয়। কিন্তু এই ছবিতে অভিনয় করার সময় হেনস্থার শিকার হন কিমি।

কিমির অভিযোগ, ‘হম’ ছবির গানের দৃশ্যের জন্য জুনিয়র আর্টিস্টদের বদলে সাধারণ মানুষদের নেওয়া হয়েছিল। দ্বিতীয় পর্যায়ের শুটিং চলাকালীন নাকি ভিড়ে থাকা মানুষেরা অশালীন ভাবে স্পর্শ করেন কিমিকে। সেই কথা ছবি নির্মাতাদের জানানোর পরেও কোনও লাভ হয়নি বলে অভিযোগ কিমির।

যদিও ‘হম’ ছবির পর কেরিয়ারের শীর্ষে পৌঁছে যান কিমি। বহু ছবিতে কাজের সুযোগ পেলেও তাঁকে সাহসী দৃশ্যেই বেশির ভাগ সময় অভিনয় করতে দেখা যেত। স্বল্প পোশাক পরে অভিনয় করতে আপত্তি জানাতেন, কিন্তু চরিত্রের প্রয়োজনে তা পরতে বাধ্য হতেন বলে দাবি করেন কিমি।

কিমির দাবি, একটি ছবির শুটিং চলাকালীন অসাবধানতার কারণে তাঁর পোশাক খুলে যায়। ওই অবস্থাতেই শুটিং করা হয়। এমনকি সিনেমাতেও দৃশ্যটি রাখা হয়। কিমি এবং তাঁর মা বার বার সেই দৃশ্য বাদ দেওয়ার অনুরোধ করলেও রাজি হননি ছবি নির্মাতারা।

উপায় না পেয়ে শেষমেশ আদালতের দ্বারস্থ হন কিমি এবং তাঁর মা। কিন্তু তাতেও লাভ হয়নি। কোনও দৃশ্য বাদ না দিয়েই মুক্তি পায় কিমির ছবি। দর্শকও কিমিকে ‘বি গ্রেড’ ছবির অভিনেত্রী হিসাবে দেখতে শুরু করেন। তখনই অভিনয় ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন কিমি। এমনকি যশরাজ ফিল্মসের দু’টি ছবির প্রস্তাব খারিজ করে দেন তিনি।

১৯৯২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘জুল্ম কি হুকুমত’ ছবিতে শেষ অভিনয় করতে দেখা যায় কিমিকে। তার পর আলোকচিত্রী এবং বিজ্ঞাপন প্রযোজক শান্তনু শোরেকে বিয়ে করেন তিনি। এক পুত্রসন্তানেরও জন্ম দেন কিমি।

সন্তান জন্মের পর কিমি জানতে পারেন, তাঁর পুত্র এমন এক রোগে ভুগছে যে রোগের চিকিৎসা ভারতে করানো সম্ভব নয়। তাই ২০০১ সালে সপরিবার অস্ট্রেলিয়া চলে যান তিনি। সেখানে ছ’বছর পুত্রের চিকিৎসা করান কিমি।

তার পর পুণেতে ফিরে কয়েক বছর থাকেন কিমি। কয়েক বছর আগে গোয়ায় একটি বাড়ি কিনেছেন অভিনেত্রী। বর্তমানে সেখানেই স্বামী এবং পুত্রের সঙ্গে থাকেন তিনি। অধিকাংশের দাবি, গোয়ার রাস্তাঘাটে মাঝেমধ্যেই কিমিকে দেখা যায়। কিন্তু তিনি যে আসলে ‘টারজ়ান গার্ল’, তা বোঝা যায় না।


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]