১৭ মে প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন শেষে রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন সাংবাদিকদের বলেন, আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ দুই দেশের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা আশা করছি-চলতি জুনের মধ্যে রেলপথের নির্মাণকাজ শেষ হবে। সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এ রেলপথ উদ্বোধন করবেন। রেলপথটিতে প্রথমে শুধু পণ্য পরিবহণ করা হবে। এদিকে, ২৬ মে আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন শেষে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. হুমায়ুন কবীর জানান, প্রকল্পটি বাস্তবায়নে কিছু সময় দেরি হলেও কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের দাবি, ইতোমধ্যে প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৯০ শতাংশের বেশি। এ মাসের মধ্যে বাকি কাজ সম্পন্ন হবে। এ রেলপথের দৈর্ঘ্য ১২ দশমিক ২৪ কিলোমিটার। এর মধ্যে বাংলাদেশ অংশে ৬ দশমিক ৭৮ কিলোমিটার। ৪৭৭ কোটি ৮১ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ৫৭ কোটি ৫ লাখ টাকা এবং ভারতীয় ঋণ ৪২০ কোটি ৭৬ লাখ কোটি টাকা। ২০১০ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের সময় এ রেলপথ নির্মাণের বিষয়ে উভয় দেশের মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই হয়।
ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান টেক্সমেকো রেল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের প্রকৌশলী ভাস্কর বকশী যুগান্তরকে বলেন, করোনাভাইরাস মহামারির কারণে দীর্ঘদিন কাজ বন্ধ রাখতে হয়েছিল। মালামালও আনা যায়নি। এখন শেষ পর্যায়ের কাজ চলছে।
আখাউড়া থেকে আগরতলার নিশ্চিন্তপুর পর্যন্ত ডুয়েল গেজ রেলপথ নির্মাণের জন্য ২০১৮ সালের ২১ মে ভারতের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান টেক্সমেকো রেল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের সঙ্গে চুক্তি হয়। ২০১৮ সালের ২৯ জুলাই প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। তবে কাজের অগ্রগতি আশানুরূপ না হওয়ায় দেড় বছর মেয়াদি এ প্রকল্পের মেয়াদ ২০২০ সালের ২৯ জানুয়ারি পর্যন্ত বাড়ানো হয়। প্রথম দফার বর্ধিত মেয়াদে কাজ শেষ না হওয়ায় দ্বিতীয় দফায় মেয়াদ বাড়ে। এভাবে দফায় দফায় মেয়াদ বাড়ানো হয়। চতুর্থবারের মেয়াদে প্রকল্পের কাজ এ বছরের জুনে কাজ করার কথা রয়েছে। যদিও আগেই ত্রিপুরা অংশের কাজ ভারত শেষ করেছে। আখাউড়া-ঢাকা হয়ে আগরতলা ও কলকাতার মধ্যে দূরত্ব কমবে। আগরতলা ও কলকাতার মধ্যকার দূরত্ব ১ হাজার ৬৫০ কিলোমিটার থেকে মাত্র ৫১৩ কিলোমিটারে দাঁড়াবে। আর সময় ৩১ ঘণ্টার পরিবর্তে ১০ ঘণ্টা লাগবে।
আখাউড়া উপজেলার মনিয়ন্দ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুল চৌধুরী দীপক যুগান্তরকে বলেন, আখাউড়া-আগরতলা রেলপথটি চালু হলে ভারতের উত্তর-পূর্ব ত্রিপুরা রাজ্যের জনগণের সঙ্গে আমাদের সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্কের নতুন দ্বার উন্মোচিত হবে। পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রেও রেলপথ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।