এই মৃত্যুমিছিল দেখিনি আগে: করমণ্ডলের যাত্রী


সুমাইয়া তাবাস্সুম: , আপডেট করা হয়েছে : 03-06-2023

এই মৃত্যুমিছিল দেখিনি আগে: করমণ্ডলের যাত্রী

করমণ্ডল এক্সপ্রেসে মৃত্যুমিছিল গাইসালকেও ছাপিয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। শুক্রবার সন্ধেয় হাওড়ার শালিমার থেকে চেন্নাইগামী করমণ্ডল এক্সপ্রেসের সঙ্গে মুখোমুখি ধাক্কা লেগেছে একটি মালগাড়ির। একটি ট্রেনের উপর চড়ে গিয়েছে অন্য ট্রেনের কামরা। করমণ্ডল এক্সপ্রেসের সাধারণ কামরা দুটি মুখ গুঁজে গিয়ে পড়েছে পাশের নয়ানজুলিতে। তার পর যে ভয়াবহ ছবি দেখা যাচ্ছে, তা শিউরে ওঠার মতোই।

প্রত্যক্ষদর্শী গৌতম মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, খেলনা গাড়ির মতো উল্টে গিয়েছে ট্রেনের একের পর এক বগি। যে দুই জেনারেল কামরা পাশের নিচু জায়গায় গিয়ে পড়েছে, সেখানে ৩০ শতাংশ যাত্রী বেঁচে ফিরবে কিনা তাঁর সন্দেহ রয়েছে। গৌতমবাবুর কথায়, গাইসালের ট্রেন দুর্ঘটনার কথা মনে পড়ছে। এবারের মৃত্যু মিছিল সেই অভিশপ্ত ট্রেন দুর্ঘটনাকেও ছাপিয়ে যাবে বলে ভয় পাচ্ছি।

ভয় পাওয়ার মতোই ঘটনা। বালাসোরের কাছে যে জায়গায় দুর্ঘটনা ঘটেছে তার আশপাশে দূর দূর পর্যন্ত কিছু নেই। ট্রেন দুর্ঘটনার ধাক্কায় বাতিস্মম্ভগুলোও উল্টে পড়েছে। ফলে উদ্ধার কাজে আলো জোগাড় করতেই হিমশিম অবস্থা। তার মধ্যে মৃতদেহ দলা পাকিয়ে বা ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। সেই ছবি চোখে দেখা যায় না, এমনই তার বীভৎসতা।

গৌতমবাবু জানিয়েছেন, তিনি ছিলেন ট্রেনের পিছনের দিকে এ-১ কোচে। এসি টু কামরার সাইড বার্থে। তাঁর কথায়, দুর্ঘটনার সময় প্রকাণ্ড শব্দ হয়। তার পর অন্তত পাঁচশ মিটার বিকট শব্দ করে বগিটা এগোতে থাকে। নেমে দেখি ভয়ঙ্কর কাণ্ড ঘটে গিয়েছে।

১৯৯৯ সালের ২ অগস্ট দিল্লি থেকে আসা অবধ আসাম এক্সপ্রেস ও ব্রহ্মপুত্র মেলের মুখোমুখি ধাক্কা লেগেছিল উত্তর দিনাজপুরের গাইসাল স্টেশনে। ওই দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছিল ২৮৫ জনের। পরবর্তীকালে জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনায় ১৮০ জনের মৃত্যু হয়। পরে ২০০২ সালের ৯ সেপ্টেম্বর বিহারের রফিগঞ্জের কাছে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে হাওড়া রাজধানী এক্সপ্রেস। সেই দুর্ঘটনাতেও ১৩০ জনের মৃত্যু হয়েছিল।

করমণ্ডলের দুর্ঘটনা অতীতের সমস্ত কিছুকে ছাপিয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। গৌতমবাবু বলেন, এই জায়গা খুবই এবড়োখেবড়ো। পা ফেলা যাচ্ছে না। কান পাতাও যাচ্ছে না। স্বজনহারা মানুষরা আর্তনাদ করে কাঁদছেন। চারিদিকে হাহাকার আর কান্না। এ দৃশ্য দেখা যায় না। এ দৃশ্য সত্যিই দেখা যায় না।


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]