দান-সাদকা কি কবরবাসীর উপকারে আসে?


ধর্ম ডেস্ক: , আপডেট করা হয়েছে : 02-06-2023

দান-সাদকা কি কবরবাসীর উপকারে আসে?

দান-সাদকা মুমিনের অন্যতম গুণসমূহের একটি। দান-সাদকায় মানুষের কবরের উত্তাপ যেমন ঠাণ্ডা হয়ে যায় তেমনি কেয়ামতের কঠিন ময়দানে দান-সাদকাকারী আল্লাহর আরশের ছায়ায় অবস্থান করবে। দান-সাদকায় কবরবাসীর উপকারিতার কথা হাদিসের বর্ণনা থেকে সুস্পষ্ট।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘সাদকাহ বা দান অবশ্যই কবরবাসীর কবরের উত্তাপ ঠাণ্ডা করে দেবে এবং মুমিন বান্দা কেয়ামতের দিন তার (সাদকা বা দানের) ছায়াতে অবস্থান করবে।’ (বায়হাকি ফি শুআবুল ঈমান, ৩৩৪৭)

আল্লাহ তাআলা কোরআনুল কারিমের অসংখ্য আয়াতে দান-সাদকা তথা তার পথে ব্যয় করার নির্দেশ দিয়েছেন। দান-সাদকার গুণকে মুত্তাকি বান্দার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। এ দান গোপনে এবং প্রকাশ্যে করার কথাও বলেছেন। দান করার ব্যাপারে আল্লাহ তাআলা বলেন-

إِن تُبْدُواْ الصَّدَقَاتِ فَنِعِمَّا هِيَ وَإِن تُخْفُوهَا وَتُؤْتُوهَا الْفُقَرَاء فَهُوَ خَيْرٌ لُّكُمْ وَيُكَفِّرُ عَنكُم مِّن سَيِّئَاتِكُمْ وَاللّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ خَبِيرٌ

‘যদি তোমরা প্রকাশ্যে দান-খয়রাত কর, তবে তা কতইনা উত্তম। আর যদি দান গোপনে কর এবং অভাবগ্রস্তদের দিয়ে দাও, তবে তা তোমাদের জন্যে আরও উত্তম। আর আল্লাহ তোমাদের কিছু গোনাহ দূর করে দেবেন। আল্লাহ তোমাদের কাজ কর্মের খুব খবর রাখেন।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ২৭১)

তাছাড়া অন্য আয়াতে আল্লাহ তাআলা মানুষের অর্জিত রিজিক থেকে তারই পথে ব্যয় করার নির্দেশ দিয়েছেন এভাবে-

وَمِمَّا رَزَقْنَاهُمْ يُنفِقُونَ

‘আর আমি তাদেরকে যে জীবিকা দান করেছি তা থেকে ব্যয় করে।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ৩)

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর প্রিয় সাহাবি হজরত মুয়াজ রাদিয়াল্লাহু আনহুকেও দান-সাদকা করার ব্যপারে এ মর্মে বিশেষ নসিহত করেছেন-

وَالصّدَقَةُ تُطْفِئُ الخَطِيئَةَ كَمَا يُطْفِئُ المَاءُ النّارَ

অর্থাৎ আর দান সাদকা পাপকে (এমনভাবে নিভিয়ে দেয়) মোচন করে; যেমন পানি আগুনকে নিভিয়ে দেয়।’ (তিরমিজি)

দান-সাদকা করার ফজিলত ও না করা ক্ষতি সম্পর্কেও হাদিসে সুস্পষ্ট ঘোষণা করেছেন বিশ্বনবি। হাদিসে পাকে এসেছে-

হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘প্রতিদিন আসমান থেকে ২ জন ফেরেশতা (জমিনে) অবতরণ করেন। তাদের মধ্যে একজন (দানকারীর জন্য) দোয়া করে-

‘হে আল্লাহ! যে (তোমার পথে) ব্যয় করে; তাকে বিনিময় দান কর।’

আর দ্বিতীয় ফেরেশতা (দান থেকে বিরত থাকা ব্যক্তির জন্য) বদ-দোয়া (অভিশাপ) করে-

‘হে আল্লাহ! যে (তোমার পথে) সম্পদ ব্যয় করা থেকে বিরত থাকে; তার অর্থ সম্পদ ধ্বংস করে দাও।’ (মেশকাত)

দান-সাদকা যেমন কবরের উত্তাপ ঠাণ্ডাকারী তেমনি পরকালের কঠিন সময়ে দান সাদকার বিশেষ ছায়ায় অবস্থান করবেন দানকারী।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে বেশি বেশি দান-সাদকা করার তাওফিক দান করুন। দান-সাদকার মাধ্যমে পরকালে আল্লাহর বিশেষ ছায়ায় স্থান পাওয়ার তাওফিক দিন। আমিন।


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]