সচ্ছল ও শান্তিপূর্ণ জীবনযাপনের দোয়া


ধর্ম ডেস্ক , আপডেট করা হয়েছে : 01-06-2023

সচ্ছল ও শান্তিপূর্ণ জীবনযাপনের দোয়া

ছোট্ট একটি দোয়া। হজরত মুসা আলাইহিস সালামও জীবনের কঠিন সময়ে এ দোয়াটি করেছিলেন। যার বিনিময়ে তিনি কাজের মাধ্যমে সচ্ছল জীবন পেয়েছিলেন। উত্তম নারীর সঙ্গে তাঁর বিয়েও হয়েছিলো। কেননা তিনি তার সব অবস্থা ও বিষয়াদি আল্লাহর ওপর এভাবে ছেড়ে দিয়েছিলেন-

رَبِّ إِنِّيْ لِمَا أَنْزَلْتَ إِلَيَّ مِنْ خَيْرٍ فَقِيْرٌ

উচ্চারণ : ‘রাব্বি ইন্নি লিমা আংযালতা ইলাইয়্যা মিন খাইরিং ফাক্বির।’

অর্থ : ‘হে আমার প্রভু! নিশ্চয়ই আপনি আমার প্রতি যে অনুগ্রহই নাজিল করবেন; আমি তার মুখাপেক্ষী।’ (সুরা কাসাস : আয়াত ২৪)

মিসরের ইসলামিক স্কলার শায়খ মুহাম্মদ বিন সাঈদ রাসলান হাফিজাহুল্লাহ বলেন, ‘কিছু আলেম বলেছেন, যে ব্যক্তি বিয়ে করার ইচ্ছা করে সে সে যেন এই দোয়াটি বেশি বেশি পড়ে। এ দোয়াটি চাকরি, বিয়ে, রিজিক, সুস্থতা বা নিরাপত্তার জন্য আশ্চর্যজনক একটি দোয়া।

হজরত মুসা আলাইহিস সালাম যখন তাঁর জীবন বাঁচানোর জন্য শূণ্য হাতে নিজ মাতৃভূমি মিসর থেকে মাদইয়ান শহরে চলে আসেন। সেখানে তাঁর পরিবার, আত্মীয়-স্বজন, ঘর-বাড়ি, আশ্রয়হীন এবং রিজিকের কোনো ব্যবস্থা ছিল না। এ দোয়ার ফলে মহান আল্লাহ তাআলা তাকে দান করেছিলেন-

১. ৮/১০ বছরের চুক্তিতে চাকরি।

২. নিরাপদ আশ্রয়ের ব্যবস্থা।

৩. বেঁচে থাকার জন্য জীবিকা।

৪. বিয়ের জন্য সম্ভ্রান্ত পরিবারের পাত্রী পাওয়ার নিশ্চয়তা।

কুরআনুল কারিমের বর্ণনায় এসব প্রাপ্তির তথ্য এভাবে ওঠে এসেছে-

> মুসা আলাইহিস সালাম বললেন-

رَبِّ إِنِّي لِمَا أَنزَلْتَ إِلَيَّ مِنْ خَيْرٍ فَقِيرٌ

‘হে আমার পালনকর্তা, তুমি আমার প্রতি যে অনুগ্রহ নাযিল করবে, আমি তার মুখাপেক্ষী।’ (সুরা কাসাস : আয়াত ২৪)

ফলশ্রুতিতে মহান আল্লাহ দান করলেন যেসব সুবিধা-

> فَجَاءتْهُ إِحْدَاهُمَا تَمْشِي عَلَى اسْتِحْيَاء قَالَتْ إِنَّ أَبِي يَدْعُوكَ لِيَجْزِيَكَ أَجْرَ مَا سَقَيْتَ لَنَا فَلَمَّا جَاءهُ وَقَصَّ عَلَيْهِ الْقَصَصَ قَالَ لَا تَخَفْ نَجَوْتَ مِنَ الْقَوْمِ الظَّالِمِينَ

‘অতঃপর বালিকাদ্বয়ের একজন লজ্জাজড়িত পদক্ষেপে তাঁর কাছে আগমন করল। বলল, আমার পিতা আপনাকে ডেকেছেন, যাতে আপনি যে আমাদেরকে (পশুকে) পানি পান করিয়েছেন, তার বিনিময়ে পুরস্কার প্রদান করেন। অতঃপর মুসা যখন তাঁর কাছে গেলেন এবং সমস্ত বৃত্তান্ত বর্ণনা করলেন, তখন তিনি বললেন, ভয় করো না, তুমি জালেম সম্প্রদায়ের কবল থেকে রক্ষা পেয়েছ।’ (সুরা কাসাস : ২৫)

> قَالَتْ إِحْدَاهُمَا يَا أَبَتِ اسْتَأْجِرْهُ إِنَّ خَيْرَ مَنِ اسْتَأْجَرْتَ الْقَوِيُّ الْأَمِينُ

‘বালিকাদ্বয়ের একজন বলল পিতা, তাকে চাকর নিযুক্ত করুন (চকরি দিন)। কেননা, আপনার চাকর হিসেবে সে-ই উত্তম হবে, যে শক্তিশালী ও বিশ্বস্ত।’ (সুরা কাসাস : আয়াত ২৬)

> قَالَ إِنِّي أُرِيدُ أَنْ أُنكِحَكَ إِحْدَى ابْنَتَيَّ هَاتَيْنِ عَلَى أَن تَأْجُرَنِي ثَمَانِيَ حِجَجٍ فَإِنْ أَتْمَمْتَ عَشْرًا فَمِنْ عِندِكَ وَمَا أُرِيدُ أَنْ أَشُقَّ عَلَيْكَ سَتَجِدُنِي إِن شَاء اللَّهُ مِنَ الصَّالِحِينَ

‘পিতা মুসাকে বললেন, আমি আমার এই কন্যাদ্বয়ের একজনকে তোমার সাথে বিয়ে দিতে চাই এই শর্তে যে, তুমি ৮ বছর আমার চাকরি করবে; যদি তুমি ১০ বছর পূর্ণ কর; তা তোমার ইচ্ছা। আমি তোমাকে কষ্ট দিতে চাই না। আল্লাহ চাহেন তো তুমি আমাকে সৎকর্মপরায়ণ পাবে।’ (সুরা কাসাস : আয়াত ২৭)

> قَالَ ذَلِكَ بَيْنِي وَبَيْنَكَ أَيَّمَا الْأَجَلَيْنِ قَضَيْتُ فَلَا عُدْوَانَ عَلَيَّ وَاللَّهُ عَلَى مَا نَقُولُ وَكِيلٌ

‘মুসা বললেন, আমার ও আপনার মধ্যে এই চুক্তি স্থির হল। দুইটি মেয়াদের মধ্য থেকে যে কোন একটি পূর্ণ করলে আমার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকবে না। আমরা যা বলছি, তাতে আল্লাহর উপর ভরসা।’ (সুরা কাসাস : আয়াত ২৮)

এসবই ছিল হজরত মুসা আলাইহিস সালামের সেই দোয়ার ফলাফল। যা মহান আল্লাহ তাআলা অনুগ্রহ করে দান করেছিলেন। তিনি পেয়েছিলেন চাকরি, জীবনের নিরাপত্তা। থাকার আশ্রয়। উত্তম রিজিক এবং সর্বোত্তম বিয়েও করতে পেরেছিলেন।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে কুরআনের এ ছোট্ট দোয়াটির মাধ্যমে আল্লাহর কাছে সব দায়-দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়ার তাওফিক দান করুন। এ দোয়ার মাধ্যমে চাকরি, নিরাপত্তা, রিজিক ও উত্তম বিয়ে করার তাওফিক দান করুন। আমিন।


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]