প্রথম গুপ্তচর উপগ্রহ উৎক্ষেপণ করতে গিয়ে বড়সড় ধাক্কা খেল উত্তর কোরিয়া। উৎক্ষেপণের কিছুক্ষণের মধ্যে সমুদ্রে ভেঙে পড়ল সেটি। ব্যর্থ হয়েও পিছু হটতে নারাজ কিম জং উন-এর দেশ। নতুন করে দ্বিতীয়বার গুপ্তচর উপগ্রহ উৎক্ষেপণের কথা জানিয়েছে তাঁরা। উত্তর কোরিয়ার গুপ্তচর উপগ্রহ উৎক্ষেপণের ব্যর্থতার খবর নিশ্চিত করেছে জাপানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। আমেরিকার উপর নজরদারি চালানোর জন্য গুপ্তচর উপগ্রহটি উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল বলে জানা গেছে।
কিন্তু উৎক্ষেপণের কিছুক্ষণের পরেই উপগ্রহটিতে যান্ত্রিক ত্রুটি ধরা পড়ে। এরপর সেটি সমুদ্রে ভেঙে পড়ে বলে মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। এর আগে বহু ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা করেছে কিমের দেশ। কিন্তু তাদের সামরিক ভাণ্ডারে ছিল না কোনও গুপ্তচর উপগ্রহ। আর এটি তৈরি করার জন্য প্রশাসনের তরফে দেওয়া হয়েছিল জোর। আগামী জুন মাসের মধ্যে ধার্য করা হয়েছিল লক্ষ্যমাত্রা। কিন্তু প্রথমবারেই বড়সড় ধাক্কার মুখোমুখি হতে হল উত্তর কোরিয়াকে।
জানা গেছে, এই ব্যর্থতাকে পাত্তা দিতে রাজি নয় পিয়ং ইয়ং। নতুন করে গুপ্তচর উপগ্রহ তৈরি করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলে খবর।
আগামি কয়েকদিনের মধ্যে নতুন করে উৎক্ষেপণেরও সরকারি তরফে দেওয়া হয়েছে প্রতিশ্রুতি । প্রথম মিশনের ব্যর্থতার কারণ খুঁজতে তদন্তেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে সরকারি সূত্রে খবর। উত্তর কোরিয়া প্রথম গুপ্তচর উপগ্রহের ধ্বংসাবশেষের একটি সোসাল মিডিয়ায় ঘোরাঘুরি করছে। উপগ্রহটিতে একটি বড় ব্যারেল সদৃশ ধাতব কাঠামো দেখতে পাওয়া গেছে। তবে, এটি জ্বালানী ট্যাঙ্ক বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এদিকে, গুপ্তচর উপগ্রহ উৎক্ষেপণে ব্যর্থতার পর বুধবার উত্তর কোরিয়া একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে বলে দাবি করেছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা। যদিও এতে ক্ষয়ক্ষতির কোনও খবর নেই বলে জানিয়েছে তিনি। উল্লেখ্য, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণে উত্তর কোরিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগ করেছে রাষ্ট্রসংঘ। সেই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার জন্য পিয়ং ইয়ংয়ের কড়া সমালোচনা করেছে জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া এবং আমেরিকা।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার নিন্দা করেছেন। রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের জারি করা নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘনের জন্য উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। গুপ্তচর উপগ্রহ উৎক্ষেপনের মাধ্যমে উত্তর কোরিয়া এবার মহাকাশ প্রতিযোগিতায় নেমেছে বলে অনুমান দক্ষিণ কোরিয়ায় ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের।