নবিজি (সা.) অভিশাপ দিতে নিষেধ করেছেন


ধর্ম ডেস্ক: , আপডেট করা হয়েছে : 25-05-2023

নবিজি (সা.) অভিশাপ দিতে নিষেধ করেছেন

অভিশাপ অনেক সময় হিতে বিপরীত হয়। যে কাউকে অভিশাপ দেওয়া ইসলামের দৃষ্টিতে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ কাজ। কোনো মুসলমানকে যেমন অভিশাপ দেওয়া হারাম তেমনি অমুসলিমকেও অভিশাপ দেওয়া যাবে না। কেননা মুমিন মুসলমান অভিশাপ দিলে অনেক সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয় আবার এই অভিশাপ নিজের ওপরও পতিত হয়। হাদিসের বর্ণনা থেকে তা সুস্পষ্ট। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একাধিক হাদিসে তা এভাবে তুলে ধরেছেন-

১. হজরত আবু দারদা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করছেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, ‘অভিশম্পাতকারীরা (কেয়ামতের দিন) সুপারিশকারী হতে পারবে না এবং সাক্ষীদাতাও হতে পারবে না।’ (আবু দাউদ ৪৯০৭, আদাবুল মুফরাদ)

২. হজরত ইবনু আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, এক ব্যক্তি বাতাসকে অভিশাপ দিলো। মুসলিমের বর্ণনায় রয়েছে- নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের যুগে এক ব্যক্তির (গায়ে দেওয়া) চাদর বাতাসে ওলটপালট হয়ে গেলে (ফলে) সে বাতাসকে অভিশাপ দিলো। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘তুমি বাতাসকে লানত করো না, কেননা সে নির্দেশপ্রাপ্ত। যা অভিশাপযোগ্য নয় কেউ তাকে অভিশাপ দিলে তা অভিশাপকারীর উপরই পতিত হয়।’ (আবু দাউদ ৪৯০৮, তিরমিজি)

৩. হজরত সামুরাহ ইবনু জুনদুব রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা আল্লাহর অভিশাপ, আল্লাহর গজব বা জাহান্নাম দ্বারা অভিশাপ দিও না।’ (আবু দাউদ ৪৯০৬, তিরমিজি, আদাবুল মুফরাদ)

৪. হজরত আবু দারদা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যখন কোনো বান্দা কোনো বস্তুকে অভিশাপ দেয় তখন ঐ অভিশাপ আকাশের দিকে অগ্রসর হয়। এরপর সেই অভিশাপ আকাশে উঠার পথকে বন্ধ করে দেওয়া হয়। তখন তা পুনরায় দুনিয়ায় প্রত্যার্বতনের জন্য রওয়ানা হয়, কিন্তু দুনিয়াতে আসার পথও বন্ধ করে দেওয়ায় সে ডানে বামে যাওযার চেষ্টা করে। অবশেষে (সে অভিশাপ) অন্য কোনো পথ না পেয়ে যাকে অভিশাপ করা হয়েছে তার কাছে ফিরে আসে। তখন সেই বস্তু যদি ঐ অভিশাপের যোগ্য হয়, তাহলে তার উপর ঐ অভিশাপ পতিত হয়, অন্যথায় অভিশাপকারীর উপরই তা পতিত হয়।’ (আবু দাউদ ৪৯০৫, আত-তারগিব ওয়াত তারহিব)

অভিশাপ কোনো মুসলমানের জন্য শোভা পায় না। অভিশাপে মানুষের মনে কষ্ট আসে। কাউ কষ্ট না দেওয়া ব্যক্তিই প্রকৃত মুসলমান। হাদিসে পাকে এসেছে-

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘প্রকৃত মুসলমান সেই ব্যক্তি, যার জিহ্বা ও হাত থেকে অন্য মুসলমান নিরাপদ থাকে।’ (তিরমিজি ২৬২৭; আবু দাউদ ২৪৮১)

সুতরাং কোনো মুসলমানের জন্য এমন কোনো কাজ করা ঠিক নয় যে কাজে অপর মুসলমান কষ্ট পায়। তাই কখনো কেউ কাউকে মনে অজান্তে কষ্ট দিয়ে ফেললে, তা বোঝার সঙ্গে সঙ্গে তার কাছে মাফ চেয়ে নেওয়া উত্তম চরিত্রিক গুণের বহিঃপ্রকাশ। পাশাপাশি কারো দ্বারা জুলুমের শিকার হলেও তাকে ক্ষমা করে দেওয়া উত্তম।

মনে রাখতে হবে যাকে অভিশাপ দেওয়া হয় সে যদি অভিশাপের উপযুক্ত না হয়, তাহলে এই অভিশাপ তার দিকে যায় না। বরং অভিশাপকারীর দিকেই প্রত্যাবর্তিত হয়। এ জন্য অভিশাপ দেয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক হওয়া চাই।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর সবাইকে অভিশাপ দেওয়া থেকে বিরত থাকার তাওফিক দান করুন। হাদিসের ওপর যথাযথ আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]