আগামী (২২-২৪ মে) ভারতের কাশ্মীরে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে জি ২০ পর্যটন বৈঠক। তবে এ বৈঠক বয়কটের ঘোষণা দিয়েছে চীন। শুক্রবার চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে। তারা বলেছে, অবৈধভাবে অধিগৃহীত জম্মু–কাশ্মীরের ক্ষেত্রে এটা ভারতের দায়িত্বজ্ঞানহীন পদক্ষেপ।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন বলেন, জম্মু–কাশ্মীর বিতর্কিত অঞ্চল। আর যেকোনো বিতর্কিত এলাকায় সম্মেলন আয়োজনের বিরোধিতা করে চীন। এ কারণে কাশ্মীরের শ্রীনগরে অনুষ্ঠিতব্য জি-২০ সম্মেলনে চীন যোগ দেবে না। চীন ও পাকিস্তান উভয়েই মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ কাশ্মীরে এ অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য ভারতের নিন্দা জানিয়েছে।
চীন ছাড়াও এই সম্মেলনে সম্ভবত যোগ দেবে না সৌদি আরব ও তুরস্ক। চীনের মতো এই দুই দেশও সম্মেলনের জন্য নাম নিবন্ধন করেনি। এই সম্মেলনে বিশেষ আমন্ত্রিতদের মধ্যে নাম নথিভুক্ত করেনি মিসরও। ইন্দোনেশিয়া কী সিদ্ধান্ত নেবে, তা–ও এখনো নিশ্চিত নয়। গত বছর জি–২০ শীর্ষ সম্মেলন হয়েছিল ইন্দোনেশিয়ায়। তারাই ছিল সভাপতি দেশ। কেন্দ্রীয় পর্যটনসচিব অরবিন্দ সিং শুক্রবার অবশ্য বলেন, সম্মেলন শুরুর আগপর্যন্ত নাম নথিভুক্ত করা যাবে।
১৯৪৭ সালে ভারত ও পাকিস্তান ব্রিটিশ শাসন থেকে স্বাধীনতা পাওয়ার পরই কাশ্মীরকে পাওয়ার প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামে দেশ দুটি। প্রতিদ্বন্দ্বিতার জের থেকেই ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে রেষারেষিতে রূপ নেয়, যা আজ অবধি চলমান। এ পর্যন্ত অঞ্চলটি নিয়ে তাদের মধ্যে তিনটি যুদ্ধ হয়েছে।
ভারত-পাকিস্তান ভাগ করার পরিকল্পনা অনুযায়ী, কাশ্মীর দুই দেশ থেকেই মুক্ত ছিল। পাকিস্তান কাশ্মীরের এক-তৃতীয়াংশ নিয়ন্ত্রণে নেয়। বাকি অংশের নিয়ন্ত্রণ নেয় ভারত।
২০১৯ সালে নয়াদিল্লি জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করে এটিকে একটি ফেডারেল অঞ্চলে রূপান্তর করেছে। জম্মু-কাশ্মীর এবং লাদাখ নিয়ে দুটি ফেডারেল অঞ্চল তৈরি করেছে ভারত। তবে লাদাখের একটা বড় অংশ চীনের নিয়ন্ত্রণে।তবে এবারের জি-২০ সম্মেলনে বিভিন্ন দেশের অন্তত ৬০ জন প্রতিনিধি অংশ নেবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর আগে অন্তত ১০০ জন অংশ নেবেন বলে আশা করা হয়েছিল।
কাশ্মীরের ভারত নিয়ন্ত্রিত অংশটি কয়েক দশক ভারতের শাসনে থাকতে চায়না। তারা চায়- হয় পূর্ণ স্বাধীনতা অথবা পাকিস্তানের সাথে সংযুক্তি। এ নিয়ে বিভিন্ন সময় সংঘর্ষে হাজার হাজার বেসামরিক নাগরিক, সৈন্য এবং কাশ্মীরি বিদ্রোহী নিহত হয়েছে।
সূত্র: আল-জাজিরা